সিলেট নগরীর জিন্দাবাজারের তিনটি রেস্টুরেন্টে অভিযান চালিয়েছে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত। অভিযানকালে একটি রেস্টুরেন্ট সিলগালা ও দুটিকে দেড় লক্ষাধিক টাকা জরিমানা করা হয়েছে। এর প্রতিবাদে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেছেন রেস্টুরেন্ট মালিক ও কর্মচারীরা। এছাড়া আগামীকাল বুধবার থেকে তারা অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘটের ডাক দিয়েছেন।
পঁচাবাসী খাবার পরিবেশন ও অস্বাস্থ্যকার পরিবেশের দায়ে মঙ্গলবার সকালে র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত ভোজনবাড়ি, পাঁচভাই ও পানসী ইন রেস্টুরেন্টে অভিযান চালায়। অভিযানকালে ভোজনবাড়ি রেস্টুরেন্ট সিলগালা এবং অপর দুই রেস্টুরেন্টকে ৮০ হাজার টাকা করে জরিমানা করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন ঢাকা থেকে আসা র্যাবের বিশেষ ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু।
অভিযান শেষে ম্যাজিস্ট্রেট পলাশ কুমার বসু উপস্থিত সাংবাদিকদের বলেন, ‘রেস্টুরেন্টগুলোতে খাবারের মানে ব্যাপক অনিয়ম পেয়েছি। এছাড়া ভোজবাড়ি রেস্টুরেন্টের ২০১৯ সালের জানুয়ারি মাস থেকে তাদের ট্রেড লাইসেন্স নবায়ন নেই, খাবার পরিবেশনের বৈধ কাগজপত্র নেই। তাই সাময়িক সময়ের জন্য রেস্টুরেন্টটি বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। আর জিজ্ঞাসাবাদের জন্য রেস্টুরেন্টের দুইজনকর্মীকে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’ পলাশ কুমার বসু জানান, ‘এসব রেস্টুরেন্টে পূর্বেও একাধিকবার অভিযান চালানো হয়েছে। এরপরও তারা খাবারে অনিয়ম করছে। অভিযানকালে রেস্টুরেন্টগুলোতে এমনও খাবার পাওয়া গেছে যেগুলো দুই থেকে তিন দিন আগের।’
এদিকে, মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে নগরীর জিন্দাবাজার পয়েন্টে রেস্টুরেন্ট মালিক-কর্মচারীরা মিলে সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করেন। রেস্টুরেন্টে অভিযান বন্ধ, সিলগালা করা রেস্টুরেন্ট খুলে দেয়া এবং আটক কর্মচারীদের মুক্তির দাবি জানান তারা।
সিলেট ক্যাটারার্স ওনার্স এসোসিয়েশন সভাপতি শান্ত দেব জানান, র্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত ভোজনবাড়ি রেস্টুরেন্ট সিলগালা করে ম্যানেজার ও সুপারভাইজারকে আটক করে নিয়ে গেছে। এছাড়া পাঁচভাই ও পানসী রেস্টুরেন্টকে ৮০ হাজার টাকা করে ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। রেস্টুরেন্টে সমস্যা থাকলে জরিমানা করা যেতে পারে, কিন্তু সিলগালা করা বা কর্মচারীদের আটক করে নিয়ে যাওয়া হয়রানির শামিল।
শান্ত দেব বলেন, লকডাউন পরবর্তী সময়ে এখনো রেস্টুরেন্ট ব্যবসা ঘুরে দাঁড়াতে পারেনি। এর মধ্যে রয়েছে ভ্যাট ও ট্যাক্সের বোঝা। রেস্টুরেন্ট ব্যবসা যখন ধুঁকছে তখন অভিযানের নামে রেস্টুরেন্ট মালিকদের হয়রানি করা হচ্ছে। অভিযান বন্ধ, সিলগালাকৃত রেস্টুরেন্ট খুলে দেয়া ও আটক কর্মচারীদের মুক্তির দাবিতে বুধবার থেকে সিলেটের সকল রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকবে। দাবি পূরণ না হওয়া পর্যন্ত ধর্মঘট চলতে থাকবে। বুধবার সকালে রেস্টুরেন্ট মালিক ও কর্মচারীরা শহীদ মিনারে অবস্থান নিয়ে প্রতিবাদ জানাবে।
এর আগে সিলেট চেম্বার অব কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির হলরুমে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। ওই বৈঠকে সিলেট সিটি করপোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, সিলেট চেম্বারের সভাপতি এটিএম শোয়েব এবং সিলেট রেস্টুরেন্ট মালিক সমিতি ও সিলেট ক্যাটারার্স ওনার্স এসোসিয়েশনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন। ওই সভায়ও বুধবার থেকে ধর্মঘটের সিদ্ধান্ত নেয়া হয়।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল