মুক্তমনা বিজ্ঞান লেখক ও ব্লগার অনন্ত বিজয় দাশ হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ আবারও পিছিয়েছে। কোনো সাক্ষী উপস্থিত না হওয়ায় সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়ে আগামী ২২ নভেম্বর নির্ধারণ করেছেন আদালত।
সোমবার সাক্ষ্যগ্রহণ না হওয়ায় সিলেট সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. নুরুল আমিন বিপ্লব পরবর্তী তারিখ ঘোষণা করেন বলে জানান বাদীপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ মনির উদ্দিন।
তিনি বলেন, ‘মামলার ২৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ ইতোমধ্যে শেষ হয়েছে। তবে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দুজন সাক্ষী বিগত কয়েকটি নির্ধারিত দিনে সাক্ষ্য দিতে আদালত হাজির না হওয়া সাক্ষ্যগ্রহণে বিলম্ব হচ্ছে।’
এই ২ সাক্ষী হলেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) পরিদর্শক আরমান আলী এবং আইটি ফরেনসিক বিভাগের উপ-পরিদর্শক মাসুদ সিদ্দিকী। আবারও সাক্ষীর অনুপস্থিতিতে সাক্ষ্যগ্রহণ না হওয়ায় এ বছরও বিচার প্রক্রিয়া আটকে যাওয়ার আশঙ্কা করছে অনন্ত বিজয় দাশের পরিবার।
অনন্ত বিজয়ের দুলাভাই সমর বিজয় শী বলেন, ‘করোনা মহামারিতে অনেক পিছিয়ে গেছে এই মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ। এখন স্বাভাবিক আদালত কার্যক্রমের মধ্যেও গত মাস ও চলতি মাসে দুদিন সাক্ষ্যগ্রহণ পিছিয়েছে। ডিসেম্বর মাসে আদালত বন্ধ থাকবে। আগামী ২২ নভেম্বর সাক্ষ্যগ্রহণ হলেও এবছর আর বিচার প্রক্রিয়া শেষ হওয়ার কোনো সম্ভাবনা দেখছি না।’
২০১৫ সালের ১২ মে সকালে কর্মক্ষেত্রে যাওয়ার জন্য বাসা থেকে বের হন। এসময় বাসার অদূরে সুবিদবাজার দস্তিদারদিঘিরপাড়ে তাকে কুপিয়ে হত্যা করে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। পরে নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন আনসারুল্লাহ বাংলা টিম এ হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে বিবৃতি দেয়। সে রাতেই থানায় অজ্ঞাত হামলাকারীদের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করেন অনন্ত বিজয় দাশের ভাই রত্নেশ্বর দাশ। মামলার তদন্তের দায়িত্ব প্রাথমিকভাবে থানা পুলিশের কাছে থাকলেও পরে পুলিশ সদরদপ্তরের নির্দেশের পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। তদন্ত শেষে মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডি’র পরিদর্শক আরমান আলী ২০১৬ সালের ১৮ অক্টোবর আদালতে একটি অভিযোগপত্র দাখিল করলে আদালত পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন। এরপর পুনরায় তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ৯ মে সম্পূরক অভিযোগপত্র দিলে আদালত তা গ্রহণ করেন।
এ অভিযোগপত্রে অনন্ত বিজয় দাশ হত্যায় অভিযুক্ত করা হয় শফিউর রহমান ফারাবী, মান্নান ইয়াহইয়া ওরফে মান্নান রাহী, আবুল খায়ের রশীদ আহমেদ, আবুল হোসেন ওরফে আবুল হুসাইন, হারুনুর রশীদ এবং ফয়সল আহমেদকে। এদের মধ্যে ফারাবী এবং আবুল খায়ের জেলে। অভিযুক্ত মান্নান ২০১৭ সালের ২ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মৃত্যুবরণ করেন। মামলার বাকি ৩ আসামি এখনও পলাতক।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন