সাপ্তাহিক বন্ধের দিনে বিশেষ ব্যবস্থায় চলাচল করা চট্টগ্রাম-ঢাকা ও ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে সোনার বাংলা ট্রেনের (যাওয়া-আসা) প্রায় ৬’শ টিকেট (এসি-ননএসি) বিক্রি না হওয়ায় প্রায় ৬ লাখ টাকার উপরে সরকারের রাজস্ব ক্ষতি হয়েছে। সময় মতো ট্রেন চলাচলের অনুমতি না দেয়ায় এ ঘটনা ঘটেছে বলে অভিযোগ উঠেছে রেলওয়ে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা এডিজি (ওপি) মিয়া জাহানসহ দায়িত্বশীলদের বিরুদ্ধে। এ নিয়ে রেল অঙ্গনে চলছে ব্যাপক আলোচনা-সমালোচনাও। তবে ট্রেন যাত্রীদের সেবা, ভোগান্তিসহ নানাবিধ সমস্যা-সমাধানের বিষয়ে দায়িত্বশীলদের সবসময় সচেতন ও মনিটরিংয়ে থাকার নির্দেশনা দেয়া রয়েছে রেলপথ মন্ত্রী নুরুল ইসলাম সুজনের।
রেলওয়ের সাবেক মহাপরিচালক (ডিজি) পদমর্যাদার একাধিক কর্মকর্তা বলছেন, সাপ্তাহিক বন্ধের দিন হলেও সময় মতো ট্রেন লাগানোর অনুমতি পেলে প্রায় টিকেট বিক্রয় হয়ে যেত। তাছাড়া চাহিদা থাকলেও ট্রেন চলাচলের দিন অনুমতি পেলেও কিভাবে এতোগুলো টিকেট কয়েক ঘণ্টায় বিক্রয় হবে, এটা অসম্ভব। এ বিষয়ে দায়িত্বশীলরা আরো সচেতন হওয়া উচিত ছিল। তবে সবসময় ট্রেনের টিকেটের জন্য যাত্রীদের চাহিদা আছেই। প্রতিনিয়ত সচেতনভাবে কাজ করলে সরকারের এতোগুলো টাকা আজ রাজস্ব ক্ষতি হত না।
পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) নাছির উদ্দিন আহমেদ বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, সাপ্তাহিক বন্ধের দিনে সোনার বাংলা ট্রেন চলাচলের অনুমতির বিষয়টি আমি অবগত নয়, তাছাড়া ট্রেন লাগানোর অর্ডার হয়েছে হেড কোর্য়াটার থেকে। এ অর্ডার জিএম দেয় না, রেলভবন থেকেই হয়। এটা অর্ডার কখন দিয়েছে তাও আমি জানি না। হয়ত আর্জেন্ট অর্ডারে হয়েছে। তবে রেলওয়ের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মিয়া জাহানের মুঠোফোনে একাধিকবার চেষ্টা করেও পাওয়া যায় নি।
রেলওয়ের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, সাপ্তাহিক বন্ধের দিন মঙ্গলবার চট্টগ্রাম-ঢাকা রুটে সোনার বাংলা ট্রেনের প্রায় ১৩৫টি টিকেট বিক্রয় হয়নি। একইভাবে বুধবার ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটে সোনার বাংলা ট্রেনের প্রায় ৪৭৮টি টিকেট বিক্রয় হয়নি। এতে রয়েছে এসি ও ননএসি টিকেট। সবমিলে প্রায় ৬’শর উপরে ট্রেনের টিকেট অবিক্রয় রয়েছে। ফলে রেলের প্রায় ৬ লাখ টাকার রাজস্বও ক্ষতি হয়েছে। এর আগে বাংলাদেশ রেলওয়ের চট্টগ্রাম-ঢাকা সোনার বাংলা সার্ভিসটির সাপ্তাহিক বন্ধ প্রতি মঙ্গলবার। কিন্তু চলমান চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) অনার্স প্রথম বর্ষের ভর্তি পরিক্ষার্থীদের সুবিধার বিষয়টি মাথায় রেখে বন্ধের দিন সার্ভিসটি চালু রাখতে রেলের পরিবহন বিভাগ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। গত এক সপ্তাহ আগে রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের চট্টগ্রাম বাণিজ্যিক বিভাগ চবি’র ভর্তিচ্ছু শিক্ষার্থীদের যাতায়াত সুবিধা এবং অতিরিক্ত যাত্রী চাহিদা বিবেচনায় রেখে ‘সাপ্তাহিক বন্ধের দিন মঙ্গলবার সোনার বাংলা চালুর’ জন্য প্রস্তাব করা হয়। পরিবহন বিভাগ এ চাহিদা পত্রটি রেল ভবনে প্রেরণ করে। তদুপরি প্রস্তাবে রেলের যান্ত্রিক প্রকৌশল বিভাগেরও সম্মতি ছিল। কিন্তু রেল ভবনের অতিরিক্ত মহাপরিচালক (অপারেশন) মিয়া জাহান প্রস্তাবটি নাকচ করে দেন বলে অভিযোগ ওঠেছে। পরে মঙ্গলবার সকালেই সোনার বাংলা ট্রেন ছাড়ার কয়েক ঘণ্টা আগেই ট্রেন চলাচলের অনুমতি দেয়া হয়।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার