চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, তিন পার্বত্য জেলাসহ দেশের দক্ষিণ-পুবের এলাকাগুলোয় ইটভাটাগুলো পরিবেশবিধ্বংসী ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে। অবৈধ ইটভাটা ও ইটভাটায় জ্বালানি কাঠ ব্যবহার বন্ধে চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের উদ্যোগে গঠিত একটি মনিটরিং কমিটি কাজ করছে। ওই মনিটরিং কমিটি অননুমোদিত ইটভাটা ও ইটভাটায় বনজ কাঠ পোড়ানোর বিরুদ্ধে সম্প্রতি বেশ কিছু অভিযান করেছে। ব্যবস্থা নিয়েছে ২৫০টির বেশি ইটভাটার বিরুদ্ধে। এরপরও ইটভাটায় জ্বালানি কাঠ পোড়ানো থামছে না। আবার প্রত্যন্ত এলাকার ভাটাগুলো গুঁড়িয়ে দেওয়ার পর পুনরায় চালুরও অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে। মনিটরিং কমিটির সদস্য ও চট্টগ্রাম উত্তর বন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা এস এম কায়ছার বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘ইটভাটাগুলো বনের গায়ে কাঁটা হয়ে বিঁধছে। মনিটরিং কমিটি বনের কাছাকাছি অবস্থিত ইটভাটাগুলো দ্রুত গুঁড়িয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। চলতি বছরের মধ্যে পাহাড়ি এলাকার ভাটাগুলো বন্ধ করে দেওয়া হবে।’ ইট প্রস্তুত ও ভাটা স্থাপন নিয়ন্ত্রণ আইন অনুযায়ী, সরকারি বা ব্যক্তি মালিকানাধীন বন, অভয়ারণ্য, বাগান, জলাভূমি, কৃষি জমি, প্রতিবেশগত সংকটাপন্ন এলাকা, সিটি করপোরেশন, পৌরসভা ও উপজেলা সদরেও ইটভাটা স্থাপন নিষিদ্ধ। তবে এই আইনকে বৃদ্ধাঙুলি দেখিয়ে বছরের পর বছর দেশের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের পাহাড়ি ও বনাঞ্চল আবৃত এলাকাগুলোয় দেদার বনের কাঠ পুড়িয়ে ইট তৈরি হচ্ছে। চট্টগ্রামের বিভাগীয় কমিশনার কার্যালয়ের এক প্রতিবেদন বলছে, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১ জেলার ১ হাজার ৬৩৬টি ইটভাটার মধ্যে ৯৭৬টি ইটভাটা অবৈধ। অনুসন্ধানে জানা গেছে, রাঙ্গুনিয়ার দক্ষিণ রাজানগর, ইসলামপুর, নিশ্চিন্তাপুর, সরফভাটা, বেতাগী, কোদালা ইউনিয়নে বেশির ভাগ ইটভাটার অবস্থান। এসব ইউনিয়নের বেশির ভাগের অবস্থান পাহাড়ি এলাকায়। রাঙামাটি থেকে চোরাইপথে বনের কাঠ কেটে রাঙ্গুনিয়ার রানীরহাট, ইসলামপুরসহ বিভিন্ন এলাকার ইটভাটায় পোড়ানো হচ্ছে। এ ব্যাপারে মনিটারিং কমিটির আহ্বায়ক ও চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) শারমিন জাহান বলেন, অবৈধ ও অননুমোদিত ইটভাটা ও ইটভাটার জ্বালানি হিসেবে বনজ কাঠের ব্যবহার বন্ধের জন্য সংশ্লিষ্ট নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বনবিভাগ, পরিবেশ অধিদপ্তরসহ সবাইকে সঙ্গে নিয়ে সমন্বিত অভিযান চলছে। অপসারণে পর আবারও ইটভাটা নির্মাণ হলে আবারও অভিযান চলবে। অভিযানের পর নিয়মিত মনিটরিং কার্যক্রমেও জোর দেওয়া হচ্ছে।