২০০১ সালে ভারতের সংসদে হামলায় জড়িত আফজল গুরুকে (২০১৩ সালেই ভারতের তৎকালীন ইউপিএ সরকারের আমলে তাঁর ফাঁসি হয়) নিয়ে গান লেখার অভিযোগে এবার তোপের মুখে ভারতের জনিপ্রিয় সঙ্গীতশিল্প ও সুরকার কবীর সুমন। ব্লক করে দেওয়া হল তাঁর ফেবসুক প্রোফাইল। বিশিষ্ট কাশ্মীরী কবি আগা শাহিদ আলি’র একটি কবিতা বাংলায় তর্জমা করে একটি গান লেখেন কবীর সুমন। এরপর সেই গানটি নিজের ফেসবুক ওয়ালে পোস্ট করেছিলেন এই শিল্পী। সেই গানে ভারতের সংসদে হামলায় জড়িত আফজল গুরুর এর পক্ষে সাফাই গেয়েছেন বলে অভিযোগ। ফেসবুকে এই গান প্রকাশিত হওয়ার পরই হঠাৎ করে তাঁর প্রোফাইলটি ব্লক হয়ে যায়। এই খবর প্রকাশ্যে আসতেই বিভিন্ন মহলে তীব্র সমালোচনা শুরু হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে ঘটনার ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই সেই ব্লক উঠে যায়। যদিও কবীর অনুরাগীদের অভিযোগ কেন্দ্রীয় সরকারই এই ঘটনার জন্য দায়ী।
বিষয়টি নিয়ে শিল্পী নিজে জানিয়েছেন, ‘গত পরশু দিন আমি একটা লেখা ব্লগ ইন করলাম এবং সেটা ফুটে উঠল। ফেসবুক কর্তৃপক্ষই জানিয়েছে, আমাদের যে নীতি তার সাথে আপনার কাজগুলোর কোন সামঞ্জস্য নেই। ফলে আমরা এগুলো সরিয়ে নিচ্ছি এবং আপনাকে আপনারা আটকে দিলাম। ১৯ ঘণ্টা পর আপনি আবার ফেসবুকে চালু করতে পারবেন’।
তবে এবারই প্রথম নয়, নিজের গান, সুরের মধ্যে দিয়ে এর আগেও একাধিক ঘটনার প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন কবীর সুমন। একাধিক ইস্যুতে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধেও সবর হয়েছিল তিনি। এতে শাসক দলের রোষানলেও পড়তে হয়েছে তৃণমূলের এই সাবেক সংসদ সদস্যকে।
কবীর সুমনের লেখা গানটি এরকম: যেখানেই থাকো তুমি, শ্রীনগরে দেখা হবে-ইতিহাস তুমি বলে, স্বাধীনতা দেবে কবে...কার ঘর নিভে গেছে, প্রদীপের শিখা কবে আফজল গুরু শোননো শ্রীনগরে দেখা হবে...।’’
প্রসঙ্গত, আফজল গুরুর ফাঁসির প্রতিবাদে গত ৯ ফেব্রুয়ারি দিল্লির জওহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যলয় (জেএনইউ)-এ একটি আলোচনা সভাকে ঘিরে ভারত বিরোধী কর্মকাণ্ডের অভিযোগ ওঠে। ওই ঘটনায় রাষ্ট্রদোহীতার অভিযোগ এনে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র নেতা কানাইয়া কুমারকে আটক করা হয়। এরপরই বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শনে গিয়ে ছাত্রদের পাশে দাঁড়ায় রাহুল গান্ধী, কংগ্রেস নেতা আনন্দ শর্মা, সিপিআইএম সর্বভারতীয় সভাপতি সীতারাম ইয়েচুরিরা। ওইদিনের ওই ঘটনার পরই দেশজুড়ে রাজনৈতিক বির্তক এখন তুঙ্গে।
বিডি-প্রতিদিন/২০ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/মাহবুব