চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ও মরমি গানের কিংবদন্তী শিল্পী সুরকার গীতিকার আবদুল গফুর হালী আর নেই। বুধবার ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় নগরীর সার্সন রোডে মাউন্ট হাসপাতালে এই সঙ্গীত সাধকের জীবনাবসান ঘটে।
আবদুল গফুর হালীর বয়স হয়েছির ৮৮ বছর। প্রায় ৫ যুগ ধরে একটানা সঙ্গীত সাধনা করে গেছেন তিনি। জীবনের শেষ দিকে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হয়ে গত দুই মাস তিনি হাসপাতালে শয্যাশায়ী ছিলেন।
মৃত্যুকালে তিনি দুই ছেলে, দুই মেয়ে ও অসংখ্য ভক্ত-গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তারা বিভিন্ন পেশায় জড়িত থাকলেও বংশের একমাত্র শিল্পী নাতনী ফেরদৌস হালী দাদুর পথ বেছে নেন।
গফুর হালীর মৃত্যুতে চট্টগ্রামের সাংস্কৃতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। পিএইচপি পরিবারের চেয়ারম্যান সুফি মিজানুর রহমান, চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ আলী, চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাব সভাপতি কলিম সরওয়ার, সাধারণ সম্পাদক মহসীন চৌধুরী আব্দুল গফুর হালীর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন ও শোক সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন।
আবদুল গফুর হালী চট্টগ্রামের আঞ্চলিক ও মাইজভান্ডারী গানের কিংবদন্তি গীতিকার, সুরকার ও শিল্পী। শেফালী ঘোষ, শ্যামসুন্দর বৈষ্ণব, কল্যাণী ঘোষসহ অসংখ্য শিল্পী তার গান গেয়েছেন। সন্দীপন, শিরিনসহ অনেক শিল্পীর উত্থান হয়েছে গফুর হালীর গান গেয়ে। হালীর গান নিয়ে জার্মানির হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত হয়েছে গবেষণাগ্রন্থ।
শিল্পী শেফালী ঘোষের গাওয়া 'ও শ্যাম রেঙ্গুম নঅ যাইওরে', সন্দীপনের কণ্ঠে 'সোনাবন্ধু তুই আমারে করলিরে দিওয়ানা', শিরিনের কণ্ঠে 'পাঞ্জাবিওয়ালা' ও 'মনের বাগানে ফুটিল ফুলরে' এবং কল্যাণী ঘোষের গাওয়া 'দেখে যারে মাইজভাণ্ডারে হইতেছে নুরের খেলা'- এমন অসংখ্য কালজয়ী গানের স্রষ্টা আবদুল গফুর হালী। তিনি চট্টগ্রামের আঞ্চলিক গানের সম্রাজ্ঞী হিসেবে পরিচিত শিল্পী শেফালী ঘোষের সঙ্গীতগুরু।
পারিবারিক সূত্রে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বাদ জোহর ফটিকছড়ির মাইজভান্ডার দরবার শরীফে প্রথম নামাজের জানাজা, জমিয়াতুল ফালাহ জাতীয় মসজিদ ময়দানে বাদ মাগরিব দ্বিতীয় জানাজা এবং শুক্রবার নিজ গ্রাম পটিয়ার রশিদাবাদ ইউনিয়নের শোভনন্দীতে বাদ জুমা তৃতীয় জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাকে দাফন করা হবে।
বিডি প্রতিদিন/২১ ডিসেম্বর ২০১৬/হিমেল