তিনি চিরকুমার। আাবার তিনি চিরপ্রেমিক। প্রেমিকাদের ওপর তার অধিকারবোধও নাকি একটু বেশি, মাত্রাজ্ঞানের ধার ধারেন না,এমনই বলেন নিন্দুকেরা। কিন্তু তিনি কি প্রতারক? কিছুদিন আগে সালমান খানের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ এনেছিলেন তারই এক প্রাক্তন প্রেমিকা সোমি আলি। তবে হঠাৎই সোমি নিজের বয়ান বদলাতে উঠে পড়ে লেগেছেন।
এককালে বলিউডে অভিনয় করেছেন সোমি। সালমানের সঙ্গে আট বছরের সম্পর্ক ছিল তার। পুরনো প্রেমিক প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সোমি বলেছিলেন, বলিউডেরই এক নায়িকার জন্য তার সঙ্গে প্রতারণা করেন সালমান। সেই ঘটনায় বাধ্য হয়েই আট বছরের পুরনো সম্পর্ককে বিদায় জানিয়ে আমেরিকায় চলে যেতে হয় তাকে।
কার জন্য তার সঙ্গে প্রতারণা করেছিলেন সালমান, ইঙ্গিতে তা-ও বুঝিয়ে দিয়েছিলেন ভাইজানের প্রাক্তন। ঐশ্বরিয়া রাই যে তার আর সালমানের সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার কারণ, তা ওই সাক্ষাৎকারে বেশ স্পষ্ট করেই জানিয়েছিলেন সোমি।
এমনকি সোমি এ-ও বলেছিলেন যে, তিনি নিজেও সালমানের একটি সম্পর্ক ভেঙে যাওয়ার কারণ।
১৯৯১ সালে যখন সোমির সঙ্গে সালমানের দেখা হয়, তখন সঙ্গীতা বিজলানির সঙ্গে সম্পর্কে ছিলেন সালমান। সোমি বলেছেন, ওদের বিয়ে হওয়াটা একরকম ঠিকই হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু আমারও জেদ ছিল সালমানকে আমায় বিয়ে করতেই হবে। আমার জন্যই সালমান সঙ্গীতার সঙ্গে সম্পর্ক ভেঙে দেন।
১৬ বছর বয়সে পাকিস্তান থেকে শুধু সালমান খানকে বিয়ে করবেন বলেই ভারতে এসেছিলেন সোমি। একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন, সালমানের ছবি ‘ম্যায়নে পেয়ার কিয়া’ দেখার পর আমি ঠিক করেই নিয়েছিলাম এই লোকটাকেই আমায় বিয়ে করতে হবে।
পাকিস্তানের নাগরিক সোমি এরপর সোজা মুম্বাইয়ে চলে আসেন। সিনেমায় অভিনয়ের জন্য চেষ্টা করতে শুরু করেন। সুযোগও পেয়ে যান। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৮ সালের মধ্যে বেশ কয়েকটি ছবি করেছিলেন সোমি। তার মধ্যে বেশ কয়েকটা ছবি ভাল ব্যবসাও করে। কিন্তু অভিনয় কখনওই সোমির লক্ষ্য ছিল না।
সোমির কথায়, “আমার একমাত্র লক্ষ্য ছিল সালমানকে বিয়ে করা। আমি সুযোগ পেলেই ওর বাড়িতে যেতাম। সঙ্গীতার হাত ধরে ওকে বসে থাকতে দেখে হিংসা হত আমার।” ওই বছরই সঙ্গীতা-সালমানের বিচ্ছেদ হয়ে যায়।
সালমান ক্লাবে যাওয়া পছন্দ করতেন। পুরনো সম্পর্কের স্মৃতিচারণ করতে বসে সোমি জানিয়েছেন, তিনি জোর করে সালমানকে আটকে রাখতেন। সাক্ষাৎকারে সোমি বলেছিলেন, “ছোটরা দোকানের শো-কেসে সাজানো খেলনা দেখে যেমন বায়না করে, আমার কাছে সালমানও ছিল সেরকম। আমি ওকে বাইরে যেতে দিতাম না। সালমান আমাকে ছেড়ে কোথাও যাক, এটা পছন্দ হত না আমার।
আবার সালমানের তাকে আগলে রাখাও পছন্দ ছিল না প্রাক্তন অভিনেত্রীর। বলেছেন, ও এমন আচরণ করত যেন আমি বাচ্চা মেয়ে। সেটা আমার একেবারেই ভাল লাগত না। আট বছর আমরা একসঙ্গে ছিলাম। কিন্তু সালমানের থেকে নতুন কিছুই শিখিনি।”
২০২১ সালের শুরু থেকেই সালমানের সঙ্গে তার সম্পর্ক নিয়ে বারবার মুখ খুলেছেন, খবরেও এসেছেন অভিনেত্রী। যদিও সালমান সোমিকে নিয়ে একটি কথাও বলেননি। তার প্রতারণার অভিযোগ প্রসঙ্গেও না।
১৯৯৯ সালে সালমানের সঙ্গে বিচ্ছেদ হয় সোমির। তারপর ২২ বছর কেটে গিয়েছে। আমেরিকার ফ্লোরিডার বাসিন্দা সোমি এখন সেখানে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন চালান। খবরে ফিরতে চাওয়া কি বলিউডে ফেরার ইচ্ছা থেকে? প্রশ্ন করা হয়েছিল সোমিকে। জবাবে সোমি জানিয়েছেন, পর্দায় বা অভিনয়ে ফেরার কোনও ইচ্ছাই নেই তার। বলিউডে তিনি গিয়েছিলেন সালমানের জন্যই। তবে সেখানে সালমানের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে শিক্ষা হয়েছে তার।
তবে সম্প্রতি সালমান সম্পর্কে বলা তার সব কথাই ফিরিয়ে নিয়েছেন সোমি। একটি সাক্ষাৎকারে নিজের আগের বলা সব কথাই ফিরিয়ে নিয়েছেন। জানিয়েছেন, সালমনাকে তিনি ছেড়ে গিয়েছিলেন কেননা ওই সম্পর্কে তিনি সুখী ছিলেন না। আর তিনি মনে করেন, কোনও সম্পর্কে যখন তিক্ততা চলে আসে তখন সরে আসাই বাঞ্ছনীয়।
ওই সাক্ষাৎকারে সালমান এবং তার পরিবারের প্রশংসাও করেছেন সোমি। বলেছেন সালমান এবং ওঁর পরিবারের কাছে অনেক কিছু শিখেছি আমি। ওঁদের পরিবারে যেটা আমার সবচেয়ে ভাল লেগেছিল তা হল, ওঁরা কোনও ধর্মের ভিত্তিতে মানুষের মধ্যে ভেদাভেদ করেন না। সালমানের মায়ের প্রশংসা করে সোমি বলেছেন, সালমা আন্টির থেকেও আমি অনেক মূল্যবোধ শিখেছি যা কোনও দিন ভুলব না। নিখুঁত ‘ইউটার্ন’বোধ হয় একেই বলে। সূত্র: আনন্দবাজার
বিডি প্রতিদিন/কালাম