আমার মেয়ে এবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হলো। কিছুদিন শহর থেকে গিয়ে ক্লাস করেছে। সাথে আমি যেতাম। নিজের ক্যাম্পাস, ভালোই লাগে। তারপর মেয়েকে হলে দেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলাম। পরে জিরো পয়েন্টের কাছে একটা বাসা পেয়ে গেলাম। পুরো বিল্ডিংয়ে মেয়েরা থাকে। বেশ পরিপাটি বিল্ডিং। বাইরের পরিবেশটাও ভালো। বুড়ো দাড়িওয়ালা দারোয়ান দেখাশোনা করে। বিল্ডিংয়ের ভেতরে বাইরে সিসি ক্যামেরা। বাড়িওয়ালার সাথেও একদিন সংক্ষিপ্ত আলাপ হলো। ভদ্রলোকই মনে হলো। বাসায় কয়েকদিন ছিলামও। মেয়েকে রেখে ঢাকায় ফিরে এলাম। কিছুদিন পরপর মেয়েকে দেখতে যাই।
দু'একদিন আগে মেয়ে আমাকে ফোন করে জানালো, "মা পাশের বাসার আপু এইমাত্র এসে জানালো, দারোয়ান তাকে হাত ধরে টেনে নিয়ে শরীরে হাত দিয়েছে। আপু দৌঁড়ে পালিয়ে এসেছে। আপু সব বাসায় গিয়ে মেয়েদের সাবধান করছে।"
বাড়িওয়ালা এক নাম্বার গেইটের দিকে থাকেন। আমি তাঁকে ফোন করলাম। আমার অনুরাধে তিনি বিল্ডিংয়ে গেলেন। যাওয়ার পর মেয়েরা কান্নাকাটি করে সব বলেছে। দারোয়ান যে আরো কতো মেয়ের সাথে এমন করেছে তা একে একে বেরিয়ে এলো। বিশেষ করে যারা দূরদূরান্ত থেকে এসেছে তাদের সাথে। বাড়িওয়ালা সব শুনলেন। সব শোনার পরও বাড়িওয়ালা তা আমলে নেননি। তিনি কোনো ব্যবস্থা না নিয়ে সেই লম্পট দারোয়ান রেখে বাড়ি ফিরে গেছেন! এখন আর আমার ফোনও ধরেন না।
একদিন পর আমি ক্যাম্পাসে যাবো। মেয়েকে ঢাকা নিয়ে আসব। ঈদের পরে অন্য কোথাও শিফট করতে আমার তেমন সমস্যা নাও হতে পারে। কিন্তু অন্য মেয়েগুলোর নিরাপত্তা কে দিবে? কত দূর থেকে মেয়েরা এসেছে। অনেকের বাবা মা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চেনেও না। আমার বিবেক বলছে তাদের জন্য আমার কিছু করা উচিত। মেয়েরা আইনি ব্যবস্থা নিতে চায়, কিন্তু ভয় পাচ্ছে। তারা ওই লম্পটকে পুলিশে দিতে চায়।
আমাদের এই গ্রুপে অনেক গণ্যমান্য ফ্রেন্ড আছেন। অনেক পুলিশ অফিসারও আছেন। কেউ কি এ ব্যাপারে আমাকে সহযোগিতা করবেন? প্লিজ।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ফেসবুক পেজ 'CU Friends' এ দেয়া আফরোজা লিলি নামের এক মায়ের পোস্ট।
বিডি-প্রতিদিন/২৭ এপ্রিল, ২০১৯/মাহবুব