প্রবায়োটিকস হল সজীব ব্যকটেরিয়া আর ইস্ট যা আমাদের জন্য হিতকর। প্রবায়োটিকস পাওয়া যাবে সাপ্লিমেন্ট হিসেবে আর দধিতে। সচরাচর প্রবায়োটিকস হল ল্যকটোব্যাসিলাস, এটি থাকে দধি আর ফারমেন্টেড খাবারে। বাইফিড ব্যাকটোরিয়াম পাওয়া যায় দুগ্ধজাত খাবারে। আইবিএসএ বেশ কার্যকর। স্যাকারমাইসেস বউলারডি ছত্রাক। ডাইরিয়া আর অন্যান্য পরিপাক সমস্যা সমাধান করে। কেবল পরিপাকতন্ত্রের স্বাস্থ্য রক্ষা নয়, এরা মগজের জন্যও হিতকর।
গবেষণায় দেখা গেছে, পাচকতন্ত্র আর মগজ পরস্পর সম্পর্কিত। এই পার্টনারশিপকে বলে গাট-ব্রেন এক্সিস। স্নায়ুতন্ত্র আর পরিপাকতন্ত্রের মধ্যে প্রাণ রাসায়নিক সঙ্কেতের মাধমে এরা সম্পর্কিত। এক বলে এনটারিক নার্ভাস সিস্টেম আর সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম যার মধ্যে আছে মস্তিষ্ক। পরিপাকতন্ত্র আর স্নায়ুতন্ত্রের মধ্যে মধ্যস্থতা করে দেহের দীর্ঘতম স্নায়ু ভ্যাগাস স্নায়ু। পরিপাক তন্ত্রকে বলে দ্বিতীয় মস্তিষ্ক। কারণ পরিপাক তন্ত্রেও উৎপন্ন হয় মগজ উৎপাদন করে এমন অনেক নিউরো ট্রান্স মিটার যেমন সেরোটোনিন, ডোপামিন আর গামাএমাইনবুটায়রিক এসিড। মন মেজাজ নিয়ন্ত্রণে এদের আছে বড় ভূমিকা। ৯০ শতাংশ সেরোটোনিন উৎপন্ন হয় পরিপাক তন্ত্রে।
পরিপাক তন্ত্রে প্রভাব পড়লে তা মগজকেও প্রভাবিত করে। মগজ যখন সমস্যা অনুধাবন করে "লড়াই কর নয়ত পালিয়ে যাও ''তখন মগজ সতর্ক সঙ্কেত পাঠায় পাচক নালীতে চাপের ঘটনা অন্ত্রে সৃষ্টি করে সমস্যা স্নায়বিক বা পেটের সমস্যা। আবার অন্যদিকে পাচক নালির ইসু যেমন ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (আইবিএস), ক্রন্সডিজিস, ক্রনিক কন্সটিবেশন উসকে দেয় উদ্বেগ আর দুশ্চিন্তা। মগজ-পরিপাকতন্ত্র অক্ষ আরও কাজ করে। পাচক নল ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে কাজ করে, পেট ভরাট হলে খাওয়া বন্ধ করতে হবে এমন সঙ্কেত পাঠায় মগজে। আহারের ২০ মিনিট পর, অন্ত্রের মাইক্রব উৎপন্ন করে প্রোটিন, যা ক্ষুধা দমায় ২০ মিনিট অতিবাহিত হওয়ার পর।
গাট-ব্রেন অক্ষে প্রবায়টিকস কেমন ভূমিকা নেয়? গবেষকরা বলেন, প্রবায়টিকস উৎপন্ন দ্রব্য মেজাজ ভাল করতে, বুদ্ধিবৃত্তি উন্নত করতে
স্ট্রেস আর দুশ্চিন্তা কমাতে সহায়ক। দেখা গেছে, আলঝেইমার রোগীদেরকে প্রবায়টিক ব্যাকটেরিয়া সমৃদ্ধ দুধ খেতে দিলে তাদের বুদ্ধিবৃত্তি উন্নত হয়। ২০১৩ সালে এক গবেষণায় দেখা গেছে, প্রবায়টিকস মিশ্রিত দধি খেলে মনে প্রশান্তি আসে। এ নিয়ে আরও গবেষণা চলছে। প্রবায়টিকস কেবল অন্ত্রের কুশল নয়, মগজের কুশলের জন্যও উপকারী।
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা