মাছের কাঁটার আঘাতে এক নারীর লিভারে সৃষ্ট পুঁজের থলি ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারির মাধ্যমে অপসারণ করা হয়েছে রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে।
পঞ্চাশোর্ধ ওই নারী মারাত্মক রক্তশূন্যতা ও পেটের ব্যথায় ঢাকার বাইরে একটি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য যান। পেটের সিটি স্ক্যান পরীক্ষা দেখা যায় পাকস্থলীর নিচের অংশের ভিতরের দেয়াল পুরু হয়ে, খাবার বের হবার পথ সরু হয়ে গিয়েছে। এন্ডোস্কোপি পরীক্ষায়ও দেখা যায় পাকস্থলীর নিচের অংশ এন্ট্রামের দেয়াল পুরু হয়ে ফুলে রয়েছে। রোগীকে বলা হয় যে তিনি পাকস্থলীর ক্যান্সারে আক্রান্ত ও এটি অপসারণের জন্যে অপারেশনের পরামর্শ দেয়া হয়।
এরপর রোগী রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে জেনারেল সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট, প্রফেসর ডা. আনিসুর রহমান এর তত্ত্বাবধানে ভর্তি হন। এসময় তার রক্তে হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ছিল মাত্র ৭%, সাথে ১০০ ডিগ্রি ফারেনহাইটের জ্বর এবং পেটের উপরের অংশে বেশ ব্যথা ছিল। রোগীর পাকস্থলীতে ক্যান্সার হয়েছে কিনা সে ব্যাপারে সম্পূর্ণ নিশ্চিত হতে প্রফেসর আনিসুর রহমান আবার সিটি স্ক্যান ও এন্ডোস্কোপি করার সিদ্ধান্ত নেন।
রিপোর্টে দেখা যায়, মাছের বড় একটি কাঁটা রোগীর পাকস্থলীর নিচের অংশ ছিদ্র করে লিভারেও প্রবেশ করে সেখানে পুঁজ তৈরি করেছে যার কারণে রোগীর পেটে ব্যথা হচ্ছে। প্রফেসর রহমান পেট না কেঁটে ল্যাপারোস্কোপিক সার্জারির মাধ্যমে পেটের উপরে ছোট ছিদ্র করে দেখেন ,
লিভারের নিচের অংশের সাথে পাকস্থলী একেবারে লেগে আছে এবং এর চারপাশে আঁঠালো ও ঘন তরল জমাট বেঁধে রয়েছে। তিনি ছোট একটি ব্যবচ্ছেদের মাধ্যমে পাকস্থলীকে আলাদা করে ফেলেন এবং এর ফলে অনেক খানি পুঁজ মিশ্রিত জমাটবদ্ধ কালো রক্ত বের হয়ে আসে। মাছের কাঁটাটিকে পাকস্থলীর দেয়ালে লেগে থাকতে দেখা যায়। পুঁজ ও মাছের কাঁটা বের করে তারপর একটি টিউব ব্যবহার করে স্যালাইন পানি দিয়ে পাকস্থলী ও লিভারের ক্ষত পরিষ্কার করে ফেলা হয়।
সফল সার্জারির পর প্রফেসর রহমান বলেন, “পাকস্থলীতে একটি মাছের কাঁটা আটকে গিয়ে লিভারে এবসেস বা পুঁজ থলি সৃষ্টি হয়েছিল। পুঁজ অপসারণ করে তা আমরা সারিয়ে তুলতে পেরেছি।’’
বিডি প্রতিদিন/ফারজানা