রাজধানীর নিউমার্কেট এলাকায় অপহরণের নাটক সাজিয়ে প্রতারণার মাধ্যমে ২০ লাখ টাকা দাবির অভিযোগে মা ও মেয়েকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তারা হলেন বিথী- হাওয়া ওরফে বিবি হাওয়া ও সুরভী সুলতানা। গত সোমবার রাতে এলিফ্যান্ট রোড এলাকা থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
নিউমার্কেট থানা পুলিশ জানায়, প্রতারণার আশ্রয় নিয়ে মিথ্যা নাটক সাজিয়ে চাঁদা দাবির অভিযোগে ৭ এপ্রিল নিউমার্কেট থানায় একটি মামলা হয়। মামলার এজাহারে বলা হয়, মামলার বাদী সৈকত আলীর নিউমার্কেটের মিনিতা প্লাজা নামক শপিং সেন্টারে ঘড়ির দোকান রয়েছে। গ্রেপ্তার বিথী ও সুরভী ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকালে সৈকতের দোকানে ঘড়ি কিনতে গেলে তাদের সঙ্গে সৈকতের স্ত্রীর পরিচয় হয়। পরে মোবাইল ফোনে তারা যোগাযোগ স্থাপন করেন। ২০ মার্চ সৈকতের দোকানে বিথী আসে এবং তাদের অর্থনৈতিক অবস্থা খারাপ তাই তার মেয়ে সুরভীকে সেলসম্যান হিসেবে তার দোকানে কাজে নেওয়ার প্রস্তাব দেন। সৈকত সরল বিশ্বাসে সুরভীকে কাজে নেন। কিন্তু সুরভীর আচরণ সন্দেহজনক হওয়ার সৈকত তাকে দোকানে আসতে নিষেধ করেন। ২২ মার্চ নিষেধ করার পরও সুরভী দোকানে আসেন এবং অসুস্থতার কথা বলে কিছু সময় পর চলে যান। ওই দিন রাতে বিথী মোবাইল ফোনে সৈকতকে জানান, তার মেয়ে সুরভী এখনো বাসায় পৌঁছেননি এবং তার সঙ্গে ফোনে যোগাযোগ করা সম্ভব হচ্ছে না। এর কিছু সময় পর বিথী মোবাইল ফোনে তাকে জানান, তার মেয়েকে অপহরণ করা হয়েছে এবং অপহরণকারীরা মুক্তিপণ হিসেবে ২০ লাখ টাকা দাবি করছেন। যেহেতু সুরভী তার দোকানে কাজ করতে গিয়ে হারিয়েছেন তাই তার মেয়েকে ওই মুক্তিপণের টাকা দিয়ে উদ্ধার করে তাকে বুঝিয়ে দিতে হবে। সৈকত ও তার স্ত্রীকে সুরুভী জানান, সে কৌশলে পালিয়ে এসেছেন। এ সময় অপরিচিত ফোন থেকে কল করে সৈকতের স্ত্রীকে জানানো হয় সুরভীর মাকে অপহরণকারীরা আটক করে রেখেছেন এবং সে যদি আসে তাহলে তাকে নিয়ে সুরভীর মাকে উদ্ধার করা যাবে। সৈকতের স্ত্রী ঘটনাস্থলে যেতে না চাইলে তাকে ফোন করে বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি দেখায় ও ২০ লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না দিলে সৈকতের ব্যবসার ক্ষতি হবে বলেও হুমকি দেওয়া হয়।
নিউমার্কেট থানা পুলিশ আরও জানায়, মামলা হওয়ার পর তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় মা-মেয়ের অবস্থান শনাক্ত করা হয় এবং তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা ঘটনার সঙ্গে জড়িত থাকার কথা স্বীকার করেছে। চক্রের সঙ্গে জড়িত অন্যদের ধরতে অভিযান চলছে।