ড়িলংপোয়ে। অর্থাৎ জলোৎসব। পার্বত্যাঞ্চলের ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীদের মধ্যে একমাত্র মারমা ও রাখাইনরা ড়িলংপোয়ে উৎসব পালন করে। তাদের বিশ্বাস পুরোনো বছরকে বিদায় আর নতুন বছরকে বরণ করতে জলের চেয়ে অন্যতম আর কিছু নেই। জলের পানিতে ধুয়েমুছে যাবে বিগত বছরের সমস্ত গ্লানি, দুঃখ। তাই বাংলা বছরের শেষ সময় মারমা আর রাখাইনরা সাংগ্রাই উৎসবে মেতে ওঠেন।
গতকাল রাঙামাটিতে শুরু হয়েছে সাংগ্রাই। দিনটি আনন্দময় করে তোলার জন্য রাঙামাটি মারি স্টেডিয়ামে মাসাসের উদ্যোগে আয়োজন করা হয় ড়িলংপোয়ে। মারমা ও রাখাইন তরুণ-তরুণীদের গায়ে পানি ছিটিয়ে জলোৎসবের সূচনা করেন অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা। মারমা সাংস্কৃতিক সংস্থার (মাসাস) সভাপতি থোয়াই সুই খই মারমার সভাপতিত্বে রাঙামাটি পার্বত্য জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান কৃষিবিদ কাজল তালুকদার, জেলা প্রশাসক মো. হাবিব উল্লাহ, পুলিশ সুপার এস এম ড. ফরহাদ হোসেন, রাঙামাটি মাসাসের সহসভাপতি মংসুই চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন। এরপর শুরু হয় মারমা ও রাখাইন তরুণ-তরুণীদের পানি ছিটিয়ে একে অন্যকে কাবু করার খেলা। এ সময় হাজারো নারী-পুরুষের ঢল নামে মারি স্টেডিয়ামে। রাঙামাটির জলোৎসবে যোগ দিতে আসে অন্য দুই পার্বত্য জেলা খাগড়াছড়ি ও বান্দরবানের মারমা ও রাখাইন তরুণ-তরুণীরা।
এ ছাড়া রাঙামাটির ১০ উপজেলা থেকে সাংগ্রাই জলোৎসবে ঢল নামে শিশু-কিশোর, তরুণ-তরুণীসহ মারমা সম্প্রদায়ের সব বয়সের হাজারো নারী-পুরুষের। এতে যোগ দেন সব সম্প্রদায়ের অগণিত মানুষ। উৎসবে মারমা কিশোর-কিশোরী ও তরুণ-তরুণীরা নৃত্যের তালে একে অন্যের গায়ে জল ছিটিয়ে প্রীতি-শুভেচ্ছা ও সম্প্রীতি বিনিময়ের মাধ্যমে বাংলা নববর্ষকে স্বাগত জানান। পুরোনো বছরের গ্লানি ও দুঃখ দূর করে আনন্দে ভাসেন সবাই। উৎসবে দিনভর পরিবেশিত হয় মনোমুগ্ধকর নৃত্য-সংগীত।