চট্টগ্রামে কালের সাক্ষী নবাব ওয়ালি বেগ খাঁ শাহী জামে মসজিদ। নগরীর চকবাজার গেলেই চোখে পড়ে বিশাল আকৃতির ছয় গম্বুজবিশিষ্ট এ মসজিদ। ভবনটি সড়ক থেকে সাড়ে ৪ ফিট ওপরে। দেয়ালের পুরুত্ব কমপক্ষে ৩ ফিট। দেয়ালের গায়ে এক হাত পরপর জানালার মতো খাঁজ। পুরোনো আকৃতি ঠিক রেখে পাশেই নির্মিত হয়েছে বহুতল ভবন। জানা যায়, ১৭১৩-১৭১৬ খ্রিস্টাব্দের মধ্যে মুঘল সম্রাটরা চট্টগ্রাম বিজয়ের নিশান হিসেবে এ অঞ্চলে কয়েকটি মসজিদ নির্মাণ করেন। তার মধ্যে নবাব ওয়ালি বেগ খাঁ শাহী জামে মসজিদ অন্যতম। মুঘল ফৌজদার নবাব ওয়ালি বেগ খাঁ মুঘল সম্রাটের নির্দেশে মসজিদটি নির্মাণ করেন বলে তাঁর নামানুসারেই নামকরণ হয়। নবাব ওয়ালি বেগ খাঁ ওই সময় মুঘল সাম্রাজ্যের চট্টগ্রামের দায়িত্বপ্রাপ্ত ছিলেন। কেউ বলেন, এ মসজিদটি ৩৫০ বছরের পুরোনো। কেউ বলেন, ৩১৩ বছরের পুরোনো। তবে এর প্রাচীনত্ব নিয়ে কোনো বিতর্ক নেই। চকবাজার মোড়ে মসজিদের মূল ভবন ৬-৭ শতক জমির ওপর বিস্তৃত হলেও মসজিদের নিজস্ব ১৮ শতক জমি আছে বলে জানা গেছে। জানা যায়, ২০১০ সালে মসজিদটি পুনরায় নির্মাণ করার উদ্যোগ নেওয়া হয়। ওই সময় মসজিদটি নির্মাণ করতে গিয়ে সামনের তিনটি মিনার ভেঙে ফেলা হয়; যা নিয়ে পরিবেশ ও ইতিহাস কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়। স্থানীয়রাও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন। পরে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর এটি সংরক্ষণের উদ্যোগ নেয়। মসজিদটির মূল অবয়ব ঠিক রেখে শুরু হয় নির্মাণকাজ। বর্তমানে সাত তলার কাজ চলমান। ভবনটি পুরোনো মসজিদের সামনের অংশে গড়ে তোলা হয়েছে। ছয় গম্বুজের পুরোনো মসজিদটি আগের স্থানেই আছে। যদিও নির্মাণকাজ করতে গিয়ে এর সৌন্দর্য নষ্ট করে ফেলা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। মসজিদের পেশ ইমাম মোহাম্মদ মাশহুদ বলেন, মসজিদের নির্মাণকাজ করতে গিয়ে খুব সুন্দর পুরোনো তিনটি মিনার ভেঙে ফেলা হয়। আগেও রাস্তার কারণে মসজিদটি ছোট করে দেওয়া হয়। এটি আরও অনেক প্রশস্ত ছিল। প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ এটিকে আগের স্থানে ফিরিয়ে নিতে উদ্যোগ নিলেও বাস্তবায়ন হয়নি।