রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের আন্দোলন কর্মসূচিতে হামলার পর দুই মাসেও খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (কুয়েট) পরিস্থিতির সমাধান হয়নি। ভিসির পদত্যাগের এক দফা দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলন কর্মসূচিতে অনড় রয়েছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের এ কর্মসূচির প্রতিবাদ জানিয়ে কুয়েট ভিসির পক্ষে দুই দিন ধরে মিছিল ও মানববন্ধন করেছেন শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পাল্টাপাল্টি এ কর্মসূচিতে কুয়েট পরিস্থিতি আরও জটিল হচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
জানা যায়, আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা গতকাল ভিসির পদত্যাগের দাবিতে ক্যাম্পাসে মশাল মিছিল বের করেন। এর আগে তারা বিক্ষোভ সমাবেশ ও বিভিন্ন স্থানে ‘এক দফা এক দাবি ভিসির পদত্যাগ’ লেখা পোস্টারিং করেছেন। সিন্ডিকেটের সিদ্ধান্তের প্রতি সম্মান জানিয়ে হল ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান প্রত্যাখ্যান করে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা হলে থাকছেন ও ভিসির পদত্যাগ না করা পর্যন্ত মাঠ ছাড়বেন না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে শেখ তৌফিক ও মুজাহিদ শেখ বলেন, কুয়েট সিন্ডিকেট যে ৩৭ জন শিক্ষার্থীকে বহিষ্কার করেছে তাদের নাম প্রকাশ করছে না।
এ তালিকায় রাজনীতিমুক্ত ক্যাম্পাসের দাবিতে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের নামও রয়েছে। মূলত তাদের শাস্তির আওতায় আনতে নাম প্রকাশ করা নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি করা হচ্ছে।
তারা বলেন, ক্যাম্পাসে হামলার ঘটনায় ভিসি শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন। ফলে তার দায়িত্বে থাকার এখতিয়ার নেই। সংবাদ সম্মেলনে কুয়েটের ২২ শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে আদালতে দায়ের করা মামলা প্রত্যাহারের দাবি জানানো হয় এবং একই সঙ্গে যৌক্তিক দাবির আন্দোলনে সমর্থন দিতে শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়।
অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলন প্রত্যাহার ও হল ছেড়ে দেওয়ার আহ্বান জানিয়ে পাল্টা কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা। ১৬ এপ্রিল শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ব্যানারে মৌন মিছিল, মানববন্ধন ও গতকাল কর্মচারীদের পক্ষে ক্যাম্পাসে মানববন্ধন করা হয়। এ ছাড়া ১৬ এপ্রিল শিক্ষক-কর্মচারীদের সঙ্গে বৈঠক করে সার্বিক পরিস্থিতি ব্যাখ্যা করে পরামর্শ চান ভিসি ড. মুহাম্মদ মাছুদ। বৈঠকে শিক্ষক নেতারা ১৮ ও ১৯ ফেব্রুয়ারি ছাত্র-শিক্ষকের ওপর মর্মান্তিক হামলা এবং হেনস্তার বিচার ও তদন্ত কমিটি যে প্রতিবেদন দিয়েছে তার আলোকে দোষীদের শাস্তির আওতায় আনার দাবি জানান।