এসএসসি পরীক্ষার্থী মেয়েকে উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় বাবা আকরাম আলীকে (৪৫) পিটিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় মেয়েটির বড় ভাই ইমাম হাসান অনন্ত আহত হন। বুধবার রাতে সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহীর তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। গতকাল সকালে ছিল নিহত ব্যক্তির মেয়ে রাকিয়া আলফির (১৬) ইংরেজি দ্বিতীয় পত্রের পরীক্ষা। আঙিনায় বাবার লাশ রেখেই পরীক্ষা দিতে যায় সে। আকরাম আলী পেশায় বাসচালক ছিলেন। আলফির মা মুক্তি বেগম বলেন, ‘মেয়েকে এলাকার নান্টুসহ কয়েকজন উত্ত্যক্ত করত। ঘটনার দিন বিকালেও মেয়ে ও আমাকে (মা মুক্তি) তারা অকথ্য ভাষায় গালাগালি করেছে। বিষয়টি নান্টুর পরিবারকে জানানো হয়। এতে সে ক্ষিপ্ত হয়ে আরও কয়েকজনসহ আমার ছেলেকে (অনন্ত) ঘটনার দিন রাত ৮টার দিকে মারধর করে। ছেলেকে মারধর করতে দেখে তার বাবা এগিয়ে গেলে তাকেও মারপিট করে। তখন আমার স্বামীর মাথায় ইট দিয়ে মাথায় আঘাত করে উত্ত্যক্তকারীরা। পরে দুজনকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক আমার স্বামীকে মৃত ঘোষণা করেন। ছেলে হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘মেয়ের এসএসসি পরীক্ষা চলছে। বাবার লাশ রেখে মেয়ে পরীক্ষা দিতে গেল। সারা রাত সে অনেক কান্না করেছে বাবার জন্য। প্রতিবেশী ও স্বজনরা অনেক বুঝিয়ে তাকে পরীক্ষা দিতে পাঠায়। আমার স্বামীকে যারা হত্যা করেছে, আমার সন্তানদের যারা বাবাহারা করেছে, তাদের বিচার চাই।’ রাকিয়া আলফি রাজশাহীর অগ্রণী স্কুল অ্যান্ড কলেজ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিচ্ছে। কলেজের অধ্যক্ষ সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘সে ক্লাসের ভালো ছাত্রী। তাদের পরীক্ষা শিরোইল উচ্চবিদ্যালয়ে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। শুনেছি উত্ত্যক্তের প্রতিবাদ করায় তার বাবাকে মারধর করে মেরে ফেলা হয়েছে। হত্যাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’ এ ঘটনায় ইমাম হাসান অনন্ত বাদী হয়ে নগরীর বোয়ালিয়া থানায় সাতজনসহ অজ্ঞাত আর চার থেকে পাঁচজনকে আসামি করে মামলা করেন। মামলায় আসামিরা হলেন তালাইমারী শহীদ মিনার এলাকার কালু মিয়ার ছেলে মো. নান্টু (২৮), মৃত রতনের ছেলে মো. বিশাল (২৮), মৃত আবদুস সাত্তারের ছেলে মো. খোকন মিয়া (২৮)।
এ ছাড়া তালাইমারী বাবর আলী রোড এলাকার শাহীনের ছেলে তাসিন হোসেন (২৫), মো. অমি (২৫), জামালের ছেলে মো. নাহিদ (২৫), পিরুর ছেলে মো. শিশির (২০)। রাজশাহী মহানগর পুলিশের মুখপাত্র সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে এ ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করেছে। আসামিদের গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে।