সরকারি অর্থের সঠিক ব্যয় ও স্বচ্ছতা নিশ্চিত করতে বিদ্যমান ১৯৭৪ সালের সরকারি হিসাব নিরীক্ষা আইনের সম্পূরক হিসেবে সরকারি হিসাব নিরীক্ষা অধ্যাদেশের নীতিগত ও চূড়ান্ত অনুমোদন দিয়েছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ ছাড়া ব্যাংকিং খাতে নৈরাজ্য ও লুটপাট বন্ধে বাংলাদেশ ব্যাংকের ক্ষমতা বাড়িয়ে ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ অনুমোদন ও বিচারের দীর্ঘসূত্রতা কমাতে ব্রিটিশ আমলের সিভিল প্রসিডিউর কোডে পরিবর্তন আনার নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছে উপদেষ্টা পরিষদ। গতকাল রাজধানীর ফরেন সার্ভিস একাডেমিতে এক ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকালে প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের সভাপতিত্বে তার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদের সভা অনুষ্ঠিত হয়। রিজওয়ানা হাসান বলেন, উপদেষ্টা পরিষদের বৈঠকে অনেক জনস্বার্থসংশ্লিষ্ট সিদ্ধান্ত এসেছে। বাংলাদেশে কারও সঙ্গে শত্রুতা করতে জমিজমা নিয়ে মামলাজুড়ে দেওয়ার প্রচলন আছে। সেই মামলা শেষ করতে তিন প্রজন্ম পার হয়ে যায়। সেটা যাতে আর না হয় এজন্য আমাদের বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে ব্রিটিশ আমলে প্রণীত সিপিসিতে (দেওয়ানি কার্যবিধি) বেশ কিছু সংশোধনের ব্যাপারে নীতিগত সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া অভিন্ন নদীর পানির ভাগাভাগি নিয়ে ১৯৯২ কনভেনশনে অনুস্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বাংলাদেশকে দিয়েই এই কনভেনশনে এশিয়ার দেশগুলোর স্বাক্ষর প্রক্রিয়া শুরু হবে। তিনি বলেন, ব্যাংকিং সেক্টরের কয়েকটি অধ্যাদেশ নীতিগতভাবে চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে সরকারি হিসাব নিরীক্ষা অধ্যাদেশ, ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ, রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ ও গ্রামীণ ব্যাংক (সংশোধন) অধ্যাদেশ। এ ছাড়া আর্থিক অপরাধে জড়িত গোষ্ঠীগুলোর বিচারপ্রক্রিয়া শুরু করতে শিগগিরই একটা কমিটি গঠন করা হবে। ব্যাংকিং খাতে কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে লুটপাট ঠেকাতে, করপোরেট সেক্টরে, ব্যাংকিং সেক্টরে শৃঙ্খলা ও জবাবদিহি আনতে ও আমানতকারীদের স্বার্থ সংরক্ষণে ব্যাংক রেজল্যুশন অধ্যাদেশ পাস করা হয়েছে। এ ছাড়া জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের সুপারিশে রাজস্বনীতি ও রাজস্ব ব্যবস্থাপনা অধ্যাদেশ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে রাজস্বনীতি প্রণয়ন ও রাজস্ব আহরণের জন্য দুটি আলাদা বিভাগ থাকবে। এক বিভাগ নীতি প্রণয়ন করবে, আরেক বিভাগ বাস্তবায়ন করবে।
গতকাল মন্ত্রিপরিষদ বিভাগ থেকেও এক বিজ্ঞপ্তিতে সরকারের সিদ্ধান্তগুলোর কথা জানানো হয়। এতে বলা হয়, বাংলাদেশ ও আলজেরিয়া সরকারের মধ্যে কূটনৈতিক, সার্ভিস ও অফিসিয়াল পাসপোর্টধারীদের পারস্পরিক ভিসা অব্যাহতি চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাবও উপদেষ্টা পরিষদে অনুমোদন করা হয়েছে।