একসঙ্গে পৃথিবীতে এসেছিলেন দুই বোন এলিজাবেথ ও অ্যান। কিন্তু ৭৮ বছর ধরে আলাদা থেকেছেন তারা। জীবনের শেষ প্রান্তে এসে দেখা পেলেন একে অন্যের। আর তাই একে অন্যকে জড়িয়ে ধরেছেন আনন্দে, আবেগে।
অরেগনের আলবেনি শহরে গত বৃহস্পতিবার দেখা হয় দুই বোনের।
বিবিসি অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, ১৯৩৬ সালে ইংল্যান্ডের অ্যালডারসট শহরে জন্ম হয় দু'জনের। মা অ্যালিস আলেকজান্দ্রা ছিলেন অবিবাহিত। তিনি ছিলেন একজন গৃহকর্মী। তাই একসঙ্গে যমজ দুই সন্তানকে লালন পালন করা কঠিন ছিল তার জন্য। বাবা পিটার্স অ্যালডারসটে সেনাঘাঁটির একজন সেনা ছিলেন। তবে কখনও সন্তানদের খোঁজ নেননি। বাধ্য হয়ে অ্যালিস দুই যমজ মেয়ের মধ্যে অ্যানকে দত্তক দিয়ে দেন।
একই শহরে হেক্টর উইলসন ও তার স্ত্রী গ্ল্যাডির কাছে বড় হতে থাকেন অ্যান। অন্যদিকে এলিজাবেথ বড় হতে থাকেন তার মা অ্যালিসের কাছে। এক শহরে বড় হলেও দুই বোনের কেউ কাউকে কখনও দেখেননি। ১৪ বছর বয়সে অ্যান জানতে পারেন গ্ল্যাডি ও হেক্টর তার নিজের মা-বাবা নন। প্রথমে দুঃখ পেলেও পরে তাদের আপন করে নেন তিনি। তখনো তিনি জানেননি শহরের এক প্রান্তে রয়েছেন তারই যমজ বোন এলিজাবেথ।
দুই বোনকে মিলিয়ে দিয়েছেন চিকিৎসক ন্যান্সি সিগাল। তিনি দুই দশক ধরে যমজের ওপর গবেষণা চালিয়ে আসছেন। পরস্পরের থেকে আলাদা থাকা যমজ ভাই বা বোনদের আচরণের ওপর গবেষণা করছেন ন্যান্সি সিগাল। এভাবেই তিনি পেয়ে যান এলিজাবেথ ও অ্যানের খোঁজ। মিলিয়ে দেন দুই বোনকে।
এপ্রিল মাসে অ্যালডারসট থেকেই এলিজাবেথের হাতে একটি চিঠি আসে। চিঠি পড়ে চোখ কপালে ওঠে এলিজাবেথের। চিঠিটি লিখেছিলেন অ্যান।
অ্যানকে দেখার পর এলিজাবেথ বলেন, 'আমি অনেক বছর ধরে তোমার জন্য প্রার্থনা করেছি। অনেক বছর ধরে তোমায় খুঁজেছি। কখনও ভাবিনি তোমায় পাব।'
এলিজাবেথ বলেন, 'যখন অ্যানকে নেওয়া হয়েছিল, ভেবেছিলাম সে পৃথিবীর কোথাও না কোথাও রয়েছে। কিন্তু এভাবে যে তার সঙ্গে দেখা হবে, তা ভাবিনি।'