পৃথিবীর আত্মহত্যাপ্রবণ দেশগুলোর মধ্যে একটি দক্ষিণ কোরিয়া। দেশটিতে চাকরিজীবী বা শ্রমিকদের অতিরিক্ত চাপ এই আত্মহত্যার একটি কারণ। এর প্রতিকার হিসেবে কিছু কিছু প্রতিষ্ঠান তাদের কর্মীদের নানাভাবে জীবনের মূল্য উপলব্ধি করানোর চেষ্টা করছে, যার মধ্যে এমনকি কফিনে শুয়ে থাকার মতো চর্চাও রয়েছে।
সিউলের একটি আধুনিক অফিস ব্লকে ১৮ জন মানুষ তাদের কফিনের পাশে বসে আছেন- তাদের নিজেদের কফিনের পাশে।
এটি একটি সাজানো গণ শেষকৃত্য অনুষ্ঠান। এই কার্যক্রমে যারা অংশ নিচ্ছেন, তাদেরকে তাদের চাকরি দাতারা নিয়ে এসেছেন।
কারণ তারা মনে করছেন, তাদের এই কর্মচারীদের জীবনের মূল্য বোঝা উচিত। এবং তাদের সাজানো শেষকৃত্যের মধ্য দিয়ে তারা উপলব্ধি করতে পারবেন তাদের জীবনের ভালো দিকগুলো।
সাদা পোশাকে আবৃত অবস্থায় অংশগ্রহণকারীরা তাদের প্রিয়জনের কাছে শেষ চিঠি লিখছেন। ভেজা-ভেজা চোখ রূপ নিয়েছে প্রকাশ্য কান্নায়। এরপর তারা উঠে দাঁড়ান এবং খোলা কফিনে প্রবেশ করেন। কফিনের পাল্লা বন্ধ করে দেয়া হয় এবং ১০ মিনিট ঘোর অন্ধকারে কাটানোর পর কফিনের পাল্লা খুলে আবার তাদের আলোর মাঝে আনা হয়। কফিন থেকে বেরুনোর পর নিজের অভিজ্ঞতার বর্ণনা দিচ্ছিলেন একজন অংশগ্রহণকারী। তিনি বলছিলেন “আমি বুঝতে পারছি যে আমি জীবনে অনেক ভুল করেছি। আমি ভবিষ্যতে যাই করি না কেন, তাতে আরো বেশি মনোযোগ দিতে চাই।”
এই কার্যক্রমের প্রধান, পার্ক চুন উং জানান, তাদের কাজের প্রধান উদ্দেশ্যই হচ্ছে মানুষের মধ্যে একটি ঐক্যের মনোভাব তৈরি করা। তিনি বলেন, আমার কোম্পানি সবসময় কর্মীদের তাদের চিন্তার ধরন পরিবর্তনের উৎসাহ দিয়েছে। কিন্তু সত্যিকারের কোন পরিবর্তন আনা সম্ভব হচ্ছিল না। আমার কাছে মনে হয়েছে একটি কফিনের ভেতর সময় কাটানো মানুষের মনে এমন একটি ধাক্কা দেবে যে, সে তখন তার আচরণ সম্পূর্ণ পরিবর্তন করতে উদ্বুদ্ধ হবে। বিবিসি বাংলা।
বিডি-প্রতিদিন/ ১৭ ডিসেম্বর, ২০১৫/ রশিদা