ঠিক রূপালি পর্দায় যেমনটা ঘটে, এবার বাস্তবেও তেমনটা দেখা গেল। ট্রেনের কামরায় রাখা ছিল বাক্স ভর্তি টাকা। ২০০টি বাক্সে প্রায় ৩৪২ কোটি টাকা। সবই ময়লা–ছেঁড়া–ফাটা নোট। পাশের কামরায় একজন সহকারী কমিশনারের নেতৃত্বে প্রহরায় ছিল এক দল পুলিশ। কিন্ত চলন্ত ট্রেন থামার পরে দেখা গেল এত নিরাপত্তার মধ্যেও চুরি গেছে টাকা!
ভারতের রিজার্ভ ব্যাংক ওই টাকা পাঠাচ্ছিল দেশটির তামিলনাডুর সালেম শহর থেকে রাজধানী চেন্নাইতে। রিজার্ভ ব্যাংকের কর্মকর্তারা ওই বিশেষ কামরার দরজা খুলতেই দেখেন ছাদ থেকে সূর্যের আলো ঢুকছে। কামরার ভেতরে ছড়িয়ে আছে টাকা, বেশ কয়েকটা বাক্স ভাঙ্গা। ট্রেনের ছাদে চড়ে পুলিশ দেখে সেখানে ২ ফুট বাই ২ ফুটের একটা গর্ত। তারপরে টাকা গুণতে গিয়ে দেখা যায় প্রায় ৬ কোটি টাকা চুরি গেছে।
পুলিশ বলছে, সালেম আর বৃদ্ধাচলম দুটো স্টেশনের মধ্যে অনেকটা পথে বিদ্যুৎ ছিল না, ওই সময় ঘটনা ঘটে থাকতে পারে।
রেল পুলিশের আই জি ভি রামসুব্রমনি সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়েছেন, “সব টাকা গোণা শেষ হওয়ার পরেই বোঝা যাবে ঠিক কত টাকা চুরি গেছে। কিভাবে চুরিটা হলো, সে ব্যাপারে কিছু সূত্র পাওয়া গেছে। কিন্তু তদন্তের স্বার্থে এখনই সেটা বলা যাবে না"।
পুলিশ বলছে, সালেম আর বৃদ্ধাচলম স্টেশনের মাঝে প্রায় ১৩৮ কিলোমিটার রেলপথের বৈদ্যুতিকরণ হয়নি। ওই জায়গা দিয়ে যাওয়ার সময়েই দুষ্কৃতিকারীরা গ্যাস কাটার দিয়ে ট্রেনের ছাদ কেটে থাকতে পারে। আবার এটাও ধারণা করা হচ্ছে যে, যারা এই কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে তারা হয়তো কামরাটি সিল করার আগেই ভেতরে লুকিয়ে ছিলো, চুরির পরে ছাদ কেটে তারা পালিয়েছে।
টাকা ভর্তি কামরার নিরাপত্তায় যে পুলিশ দল ছিল, তারা বলছে-প্রতিটা স্টেশনেই তারা পরীক্ষা করে দেখেছে যে তালা আর সিল ঠিক আছে কিনা। পুলিশ ছাদের দিকে নজর দেয়নি, কারণ অত শক্ত ইস্পাতের ছাদ যে চলন্ত ট্রেনে কাটা যেতে পারে, এটা তারা কল্পনাও করেনি।
তবে একটা ব্যাপারে পুলিশ নিশ্চিত, 'সর্ষের মধ্যে নিশ্চয়ই ভূত ছিলো'। তা না হলে চোরেরা কি করে জানলো কোন কামরায় রিজার্ভ ব্যাংকের টাকা আছে। সূত্র: বিবিসি
বিডি-প্রতিদিন/১১ আগস্ট, ২০১৬/মাহবুব