অস্ট্রেলিয়ার পূর্ব উপকুলীয় অঞ্চলগুলোতে প্রবল বৃষ্টিতে হঠাৎ বন্যায় প্লাবিত হওয়ায় ভেস্তে যাচ্ছিলো এক দম্পত্তির বিয়ের পরিকল্পনা। পরে টুইটটারের সাহায্যে নিয়ে বন্যার মধ্যেই বিয়ে করেন কেট ফদারিংহাম দম্পত্তি।
শনিবার সকালবেলা কেট ঘুম থেকে উঠে দেখেন বন্যার পানি তলিয়ে দিয়েছে উইংহাম শহরের কাছাকাছি আরও অনেক এলাকা। কিছুক্ষণের মধ্যেই এটা পরিষ্কার হয়ে যায়, বিয়ের কনে চারপাশে জমে থাকা বন্যার পানি পাড়ি দিয়ে সময়মতো অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছানো রীতিমতো অসম্ভব। তবে খারাপ হাল ছাড়েননি তিনি।
পেশায় সাংবাদিক কেট অমন দুরবস্থার মধ্যেই সাহায্য নেন টুইটারের। নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে তিনি পোস্ট করেন, ‘আজ আমার বিয়ের দিন ও আমরা বন্যার্ত। আমি অন্তসত্ত্বা। তাই আমার সঙ্গী চায়নি, আমি নৌকায় উঠি। প্লাবিত এলাকা পাড়ি দিয়ে উইংহাম পৌঁছাতে আমাদের সাহায্য দরকার। সাহায্য করতে ইচ্ছুক এমন কারও কথা জানেন?’
শেষপর্যন্ত অবশ্য হতাশ হতে হয়নি কেট ফদারিংহামকে। তার দুরবস্থার খবর শুনে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় স্থানীয় একটি টেলিভিশন চ্যানেল। কেটকে বিয়ের অনুষ্ঠানে পৌঁছে দিতে হেলিকপ্টার পাঠায় তারা।
সেই হেলিকপ্টারে চড়ে নিরাপদেই প্লাবিত এলাকার ওপর দিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান কেট। তবে ঝামেলা তখনও শেষ হয়নি। বন্যার কারণে তার বিয়েতে খাবার সরবরাহকারী, মেকআপ আর্টিস্ট, সঙ্গীতশিল্পী বিভিন্ন জায়গায় আটকা পড়ে রয়েছেন।
অনেকটা আশ্চর্যজনকভাবে বন্যার কারণে আরেকটি বিয়েতে যেতে না পারা একটি খাবার সরবহারকারী প্রতিষ্ঠান কেটের বিয়েতে খাবার দিতে রাজি হয়! অনুষ্ঠানের অতিথিরা সাজগোজ সেরে নেন নিজেরাই। অবশেষে নির্ধারিত সময়ের মাত্র ১৫ মিনিট পরে অনুষ্ঠানস্থলে পৌঁছান কনে।
টুইটে কেট জানান, ‘আমি চার্চে পৌঁছাই এবং আমার প্রাণের ভালোবাসাকে বিয়ে করি।’ বন্যার পানিতে তলিয়ে থাকা একটি রাস্তার ওপর বর-কনের চুম্বনরত ছবিসহ সেই পোস্ট ভাইরাল হয়েছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমগুলোতে। এমন দুর্যোগ ও বাধাবিপত্তি পেরিয়ে মনের মানুষটিকে বিয়ে করতে পারায় তাদের অভিনন্দন জানিয়েছেন বহু মানুষ।
রয়টার্সের খবর অনুসারে, অস্ট্রেলিয়ায় গত ৫০ বছরের মধ্যে এমন ভয়াবহ বন্যা আর দেখা যায়নি। দেশটির সরকার নতুন সতর্কতা জারি করে দুর্গত এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরে যেতে বলেছে। এবারের বন্যায় দেশটির অন্তত এক কোটি মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন বলে জানানো হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন / অন্তরা কবির