বিভিন্ন ক্ষেত্রে কৃতিত্বপূর্ণ অবদানের জন্য নয়জন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটকে চলতি বছরের স্বাধীনতা পুরস্কার প্রদান করেছেন প্রধামন্ত্রী শেখ হাসিনা।
স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য মরণোত্তর পুরস্কার পাওয়া ব্যক্তিরা হলেন- সাবেক গণপরিষদ সদস্য মোহাম্মদ আবুল খায়ের, মুন্সি কবির উদ্দিন আহমেদ, শহীদ কাজী আজিজুল ইসলাম, খসুরুজ্জামান চৌধুরী, শহীদ এস বি এম মিজানুর রহমান, মোহাম্মদ হারিছ আলী ও ভাষা সৈনিক অধ্যক্ষ মো. কামরুজ্জামান।
সংস্কৃতিতে এবারের স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছেন শিল্পী কাইয়ুম চৌধুরী। তিনি মুক্তিযুদ্ধসহ সব গণতান্ত্রিক ও প্রগতিশীল আন্দোলনেই ছিলেন সক্রিয়।
এছাড়া কৃষি-গবেষণা ও উন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতি হিসাবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটকে এবার ‘গবেষণা ও প্রশিক্ষণ’ ক্ষেত্রে স্বাধীনতা পুরস্কার দেওয়া হয়েছে।
আজ মঙ্গলবার ওসমানী স্মৃতি মিলনায়তনে এক অনুষ্ঠানে চলতি বছরের স্বাধীনতা পদক বিতরণ করে প্রধানমন্ত্রী। পুরস্কারপ্রাপ্ত বা তাদের প্রতিনিধিদের হাতে একটি করে সোনার পদক এবং সম্মাননাসূচক প্রত্যয়নপত্র তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। এর সঙ্গে নগদ পুরস্কার হিসাবে তাদের প্রত্যেককে এক লাখ টাকা করে দেওয়া হয়।
সাবেক গণপরিষদ সদস্য মোহাম্মদ আবুল খায়েরকে স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধে অবদানের জন্য মরণোত্তর এ পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। ১৯৭১ সালের৭ মার্চ প্রতিকূল পরিস্থিতির মধ্যেও বঙ্গবন্ধুর ভাষণ রেকর্ড ও সংরক্ষণ করেছিলেন তিনি।
মুন্সি কবির উদ্দিন আহমেদ মুক্তিযুদ্ধের সময় কুমিল্লার পুলিশ সুপারের দায়িত্বে ছিলেন। সে সময় সেনানিবাসের ব্রিগেড কমান্ডারের হাতে জেলা পুলিশের অস্ত্রভাণ্ডারের চাবি দিতে তিনি অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। পরে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর হাতে বন্দি অবস্থায় শহীদ হন মুন্সি কবির।
শহীদ কাজী আজিজুল ইসলাম একাত্তরে বরিশালের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। পাকিস্তান সরকারের চাকরিতে থেকেও মুক্তিযুদ্ধে সক্রিয় সহায়তা দিয়েছিলেন তিনি।
খসুরুজ্জামান চৌধুরী কিশোরগঞ্জের তখনকার মহকুমা প্রশাসক হিসেবে ১৯৭১ সালর ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর ডাকে সাড়া দিয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন।
মিজানুর রহমান সরকারি চাকরিতে থাকা অবস্থায় মুক্তিযুদ্ধে যোগ দিয়েছিলেন। ১৯৭১ সালের ৫ মে পিরোজপুরে পাকিস্তানি বাহিনীর হামলায় তিনি শহীদ হন।
আর মুক্তিযুদ্ধে তরুণদের সংগঠিত করতে ভূমিকা রাখা মোহাম্মদ হারিছ আলী মুক্তিযুদ্ধের ৫ নম্বর সেক্টরের অধীন জেলা সাব-সেক্টরের রেজিমেন্টাল মেডিকেল অফিসারের দায়িত্বও পালন করেন।
মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন স্বাধীন বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা ও সংস্কৃতি বিভাগের এম এন এ ইনচার্জ হিসাবে দায়িত্বপালনকারী, ভাষা সৈনিক অধ্যক্ষ মো. কামরুজ্জামানও মরণোত্তর এ পুরস্কার পেয়েছেন।
স্বাধীনতা পুরস্কার পেয়েছ্নে মুক্তিযুদ্ধে ৮ নম্বর সেক্টরের অধিনায়ক হিসাবে দায়িত্ব পালনকারী লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো. আবু ওসমান চৌধুরীও। ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ অধীনস্ত সেনাদল নিয়ে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেন তিনি।
মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের আয়োজনে এ অনুষ্ঠান পরিচালনা করেন সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা।