'বসন্ত হে অনন্ত জীবন হোক জীবন্ত' এ শ্লোগানকে সামনে রেখে ফাল্গুনের প্রথম দিনে ঋতুরাজ বসন্তকে বরণ করে নেয় দুবাইয়ের প্রবাসী বাংলাদেশিরা। গতকাল সন্ধ্যায় দুবাইস্থ বাংলাদেশ কনস্যুলেটের সহযোগিতায় বাংলাদেশ মহিলা সমিতি আয়োজন করে বসন্ত উৎসব ও পিঠা প্রতিযোগিতা ১৪২০। পিঠা প্রতিযোগিতা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে বিপুল সংখ্যক প্রবাসী বাংলাদেশির উপস্থিতিতে মধ্যরাত পর্যন্ত কনস্যুলেট প্রাঙ্গনে ছিলো মুখরিত পরিবেশ।
প্রথম বারের মতো বসন্ত উৎসবের আয়োজন করায় মহিলা সমিতিকে ধন্যবাদ জানিয়ে বাংলাদেশ কনস্যুলেট দুবাইয়ের কনস্যাল জেনারেল মাসুদুর রহমান শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, আজকের আয়োজন খুবই উপভোগ্য ছিলো। মহিলা সমিতি খুব চমত্কার একটি অনুষ্ঠান উপহার দিয়েছে। বিশেষ করে ভাবীদের পিঠা প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠানের ভিন্ন মাত্রা যোগ করে। তাদের পরিবেশনা যেমন ছিল চমৎকার ও মনোমুগ্ধকর তেমনি পিঠাগুলো ছিলো খুব সুস্বাদু। এই অনুষ্ঠান তারা খুব সফল ভাবেই সম্পন্ন করতে পেরেছেন। আগামীতেও এ ধরনেরর অনুষ্ঠানের কনস্যুলেট থেকে আরো বেশি উত্সাহ ও অনুপ্রেরণা দেয়া হবে এবং যতটুকু সহযোগিতা করা দরকার আমরা তা করবো।
প্রথম পর্বের পিঠা প্রতিযোগিতায় তিন বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন ড. রেজা খান, ড. আবদুল মজিদ ও জহিরুল ইসলাম। প্রতিযোগিদের কাজের মূলয়ন সম্পর্কে তারা বলেন, পিঠা বাংলার সংস্কৃতি ও সভ্যাতার সাথে নিবিড় ভাবেই জড়িয়ে আছে। আমরা ছোট বেলা নানা-নানি, দাদা-দাদি বা খালার বাড়িতে বেড়াতে যেতাম পিঠা খাওয়ার জন্য সেটাও এমন শীতকালে। ফাল্গুনের এই প্রথম দিনে আজ আরো একটি দারুণ অভিজ্ঞতা হলো। এই পিঠা প্রতিযোগিতার বিচার করতে গিয়ে মনে হলো আমরা সেই ছোট বেলা ফিরে গিয়েছি। দশজন প্রতিযোগি এতে অংশগ্রহণ করে অত্যন্ত চমত্কার ভাবে বিভিন্ন দেশিয় পিঠা উপস্থাপন করেছেন। প্রতিযোগিতা না হলে এদের সবাইকেই প্রথম ঘোষণা করতাম।
এছাড়াও প্রথম সচিব ড. শাহ মোহাম্মদ তানভির মনসুর তার শুভেচ্ছা বক্তব্য বলেন, পিঠা খেয়ে এতো ভাল লেগেছে মনে হচ্ছে দুবাইতে একটি পিঠা ঘর দেয়া উচিত। কারণ এখানে বাংলাদেশিদের পাশাপাশি ভারতীয় ও পাকিস্তানী নাগরিকরাও পিঠা খুব পছন্দ করে। পিঠা তাদেরও সংস্কৃতির একটা অংশ। যদিও কর্মাশিয়াল কাউন্সিলরের মাধ্যমে এ ধরণের উদ্যোগ নেয়া যায় তবে বেশ ভাল হবে।
বিচারকদের রায়ে পিঠা প্রতিযোগিতায় প্রথম হয়েছে শারমিন শবনম লোপা, দ্বিতীয় সায়মা শবুর ও তৃতীয় হয়েছে মরিয়ম জাহান চৌধুরী। যথাক্রমে এদের টেবিলের নাম ছিলো কদম, জবা ও সূর্যমুখী।
মহিলা সমিতির সদস্যদের দলীয় সংগীতের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্বের মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। একে একে পরিবেশিত হয় গান ও ক্ষুদে শিল্পীদের নৃত্য। অনুষ্ঠানে প্রধান আকর্ষণ ছিলো কনস্যাল জেনারেল মাসুদুর রহমান এর স্বরচিত কবিতা আবৃত্তি ও প্রথম সচিব ড. শাহ মোহাম্মদ তানভির মনসুর এর সংগীত পরিবশেনা।
শেখ কানিজ-এ-ফেরদেৌস এর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে কর্মাশিয়াল কাউন্সিলর ড. মাহমুদুল হক, দুবাই কনস্যুলেটের প্রথম সচিব (শ্রম) একেএম মিজানুর রহমান, ভাইস কনসাল আবু আসরিফ মাহমুদ, আবুধাবী দূতাবাসের প্রথম সচিব জসিম উদ্দিন ও কমিউনিটির নেতারাসহ শ্রীলঙ্কা, ভারত ও পাকিস্তানের কনসাল জেনারেলের সহধর্মীনিরা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।