প্রকৃতিকে আমরা সব সময়ই দোষ দিই। প্রচণ্ড গরমে আর তীব্র শীতে মানুষ অতিষ্ঠ হয়ে প্রকৃতিকে দোষারোপ করে। কিন্তু প্রকৃতি কি করবে? প্রকৃতি তো তার নিজ গতিতে চলছে। প্রকৃতি তার নিয়মে চলছে। দোষ তো। আমাদের এই সুন্দর প্রকৃতি তো একটি নিষ্পাপ শিশুর মতো আমাদের এ ধরায় এসেছিল। কিন্তু এই নিষ্পাপ প্রকৃতির সুন্দর পরিবেশকে মনুষ্য সমাজই কলুষিত-দূষণ করছে। এখন আমরা প্রচণ্ড গরমে আর তীব্র শীতে প্রকৃতিকেই দোষারোপ করি। আবহাওয়া বিশারদরা বর্তমানে গ্লোবাল ওয়ার্মিং নিয়ে চিন্তায় পড়েছেন। আবহাওয়া রক্ষা সংস্থাগুলো এ নিয়ে গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। তারা দোষারোপ করেছেন বিশ্বের উন্নতশীল দেশগুলোকে।
ব্রিটেনের এবার সামারের সময়ও তীব্র শীত। ব্রিটেনবাসীকে কাহিল করে দিয়েছিল। গত সপ্তাহ থেকে ব্রিটেনের মানুষ এখন আবার গরমের স্বাদ পাচ্ছে। কিন্তু এখন প্রচণ্ড শীতের বদলে প্রচণ্ড গরম। মানুষের অবস্থা এখন ত্রাহি ত্রাহি। ব্রিটেনে এখন হিট ওয়েভ চলছে। প্রচণ্ড শীতের আক্রমণ থেকে বাঁচলেও এখন আবার প্রখর গরমে মানুষ হিমশিম খাচ্ছে।
বর্তমানে লন্ডনের তাপমাত্রা ২৬ সেন্টিগ্রেট ছাড়িয়ে গেছে। পাঠকবৃন্দ বুঝতেই পারছেন, লন্ডনবাসী কিভাবে ইন্ডিয়ান সামার উপভোগ করছেন। এ প্রাকৃতিক দুর্যোগের সুযোগ নিয়ে আইসক্রিম, বরফ, টুপি, সানক্রিম, সানগ্লাস, স্লিপার, শর্ট, হাফস্কার্ট সামার ড্রেস ব্যবসায়ীরা ধুম ব্যবসার প্রসার জমিয়েছে।
পুরুষদের কথা বাদই দিলাম, মহিলারাও যেন বিবস্ত্র হতে পারলে প্রখর গরমের আক্রমণের হাত থেকে বেঁচে যাবেন। শীতকেই দোষারোপ করা হয়েছিল যে, তারা প্রচণ্ড শীতের জন্য ঘরের বাইরে যেতে পারছেন না। তাই কেনাকাটা নেই, বাজারে তেমন কোনো ভিড় দেখা যায়নি এতদিন। তাই ব্যবসা-বাণিজ্যে ধস নেমেছিল। বর্তমানে গরমের সঙ্গে সঙ্গে বাঁধভাঙা জোয়ারের মতো মানুষের ভিড় লন্ডনের নামিদামি শপিং সেন্টারে। বিশ্বের আকর্ষণীয় শপিং সেন্টার লন্ডনের অক্সফোর্ড স্ট্রিট ক্রেতাদের প্রচণ্ড ভিড়ে চলাচল মুশকিল হয়ে পড়েছে। এর ওপর আবার বিদেশ পর্যটকদের ভিড়। পাউন্ডের রেট ভালো থাকায় বিদেশিরা উপচে পড়ছে বিপণি কেন্দ্রগুলোতে। সবার হাতে আইসক্রিম আর ঠাণ্ডাপানীয় ক্যান।
সমুদ্র সৈকতের ধারে আরেক দৃশ্য। সব বয়সীর নারী-পুরুষ অর্ধনগ্ন অবস্থায় তাদের সাদা চামড়া তামাটে করার ব্যর্থ চেষ্টা করে চলেছে। চাদর বা তোয়ালে বালির ওপর বিছিয়ে উপুড় বা চিত্ হয়ে সবাই সূর্যতাপ নেওয়ার প্রতিযোগিতায় ব্যস্ত। বাসে আর পাতাল ট্রেনে তো চলাচল করাই বিপদ। ভাপসা গরম, ঘামের দুর্গন্ধে যাত্রীরা অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে।