‘আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে বাংলাদেশের অগ্রগতির কথা উচ্চারিত হচ্ছে আন্তর্জাতিক ফোরামে। প্রভাবশালী রাজনীতিক, দাপুটে ব্যবসায়ী, উচ্চ পর্যায়ের আমলা কেউই রেহাই পাচ্ছে না অপরাধ করলে। সাম্প্রতিক সময়ে এমন বেশ কিছু দৃষ্টান্ত স্থাপিত হওয়ায় জাতিসংঘেই শুধু নয়, আন্তর্জাতিক অনেক ফোরামে তা বিশেষভাবে আলোচিত হচ্ছে’এ তথ্য প্রকাশ করেছেন জাতিসংঘের স্থায়ী প্রতিনিধি ও রাষ্ট্রদূত এ কে এ মোমেন।
শনিবার রাতে ‘যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু প্রজন্ম লীগ’ কর্তৃক বিদায়ী এ রাষ্ট্রদূতের সম্মানে আয়োজিত এক সমাবেশে রাষ্ট্রদূত মোমেন আরও উল্লেখ করেন, ‘দুর্নীতিতে টানা ৫ বারের চ্যাম্পিয়ন বাংলাদেশের ইমেজ-ঐতিহ্য পুনঃপ্রতিষ্ঠায় কাজ করার নির্দেশ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। দীর্ঘ ৬ বছরে আমি সেই দায়িত্বটি যথাযথ পালনে সচেষ্ট ছিলাম। কতটা সফল হয়েছি তার বিচার মানুষের কাছে। তবে এবার বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘে সর্বোচ্চ মর্যাদাসম্পন্ন ‘চ্যাম্পিয়ন অব দ্য আর্থ’ পুরস্কার পেয়েছেন এটি পরম সত্য। এভাবেই বাংলাদেশ তার অনেক দুর্নাম ঘুচিয়ে তৃতীয় বিশ্বের কাছে উন্নয়নের মডেল হিসেবে পরিণত হয়েছে।’
ড. মোমেন বলেন, ‘প্রকৃত সত্য হচ্ছে, বাংলাদেশে যা ঘটছে তা সবিস্তারে আমি জাতিসংঘে উপস্থাপন করেছি। তা জানার পরই বাংলাদেশ তার আপন মহিমায় উদ্ভাসিত হচ্ছে। এতে আমার কোন কৃতিত্ব নেই। সবটুকু বাংলাদেশের খেটে খাওয়া মানুষ এবং তাদের প্রিয় নেত্রী শেখ হাসিনার।’ তিনি বলেন, ‘সবকিছু সম্ভব হয়েছে এবং হচ্ছে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার দূরদর্শিতাপূর্ণ নেতৃত্বের কারণে’।
নিউইয়র্ক সিটির সন্নিকটে লং আইল্যান্ডে সাগর চায়নিজ পার্টি হলের এ বিদায় সম্বর্ধনা সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু প্রজন্মলীগের যুক্তরাষ্ট্র শাখার সভাপতি আব্দুল কাদের মিয়া। এ সময় তাকে ফুলেল শুভেচ্ছা এবং সামনের দিনগুলো আরও বর্ণালী হবে বলে সকলে আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সাজ্জাদুর রহমান সাজ্জাদ, নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি নূরনবী কমান্ডার, যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা যুবকমান্ডের সভাপতি ও মহানগর আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী, সন্দ্বীপ এসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি নজরম্নল ইসলাম বাবুল, সন্দ্বীপ এডুকেশন এন্ড কালচারাল সোসাইটির সভাপতি মুবশ্বির হোসেন, ব্রম্নকলীন আওয়ামী লীগের নেতা ইসমত হক খোকন প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আগামী ৩০ অক্টোবর দায়িত্ব হস্তান্তর করে রাষ্ট্রদূত মোমেন ঢাকায় প্রত্যাবর্তন করবেন। এ কারণে প্রবাসের বিভিন্ন সংগঠনের পক্ষ থেকে তাকে বিদায় অভ্যর্থনা জানানো হচ্ছে। এ প্রসঙ্গে ড. মোমেন উল্লেখ করেন, ‘দীর্ঘ ৩৮ বছর পর স্থায়ীভাবে মাতৃভূমিতে ফিরছি। এটি আমার কাছে খুবই আনন্দের বিষয়। শৈশব, কৈশোর, যৌবনের স্মৃতি বিজড়িত এলাকাবাসীর সান্নিধ্যে, সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে অর্জিত বাংলাদেশের সার্বিক কল্যাণে জীবনের শেষ সময়গুলো অতিবাহিত করার সৌভাগ্য হলো আমার।’
বিডি-প্রতিদিন/ ১৯ অক্টোবর, ২০১৫/ রশিদা