হোয়াইট হাউজের সামনে সমস্বরে ধ্বনিত হলো একুশের অমর সঙ্গীত ‘আমার ভাইয়ের রক্তে রাঙ্গানো একুশে ফেব্রুয়ারি, আমি কি ভুলিতে পারি।’ আর সেই গানে প্রবাসীদের সঙ্গে কণ্ঠ মেলালেন ওই এলাকা পরিভ্রমণরত ট্যুরিস্ট এবং হোয়াইট হাউজে কর্তব্যরত কর্মকর্তা ও নিরাপত্তা রক্ষীরাও। ‘আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস’ সম্পর্কে তাদের সম্যক ধারণা থাকায় প্রবাসী বাঙালিদের এ আয়োজনে তারা একাত্মতা প্রকাশ করতে বিন্দুমাত্র দ্বিধা করেননি। বিশেষ করে শহীদ মিনারের নির্মাণ শৈলী এবং তার প্রেক্ষাপট সম্পর্কে আমেরিকানদের কৌতুহল ছিল অত্যন্ত প্রবল। বাঙালিদের কাছে থেকে ফুল নিয়ে তারাও পরম শ্রদ্ধায় শহীদ বেদীতে তা অর্পণ করেছেন।
উল্লেখ্য, হোয়াইট হাউজের সামনে এবারই প্রথম একুশ উদযাপনে এমন কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়।
রবিবার অস্থায়ীভাবে স্থাপিত শহীদ মিনারে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণের এ আয়োজন করে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তি। সম্মিলিত এ আয়োজনে একুশের প্রথম প্রহরে মেট্রো ওয়াশিংটন আওয়ামী লীগ, ভার্জিনিয়া স্টেট আওয়ামী লীগ, ম্যারিল্যান্ড স্টেট আওয়ামী লীগ, বৃহত্তর ওয়াশিংটন আওয়ামী যুবলীগ, বৃহত্তর ওয়াশিংটন আওয়ামী মহিলা লীগ, বৃহত্তর ওয়াশিংটন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগ, সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন নীলাচল, প্রিয়বাংলাসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতাকর্মী, সমর্থক ও আমেরিকানরা গভীর শ্রদ্ধায় এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করেন।
হোয়াইট হাউজের সামনে একুশ উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক অমর ইসলাম বলেন, ‘ওয়াশিংটনে বাঙালির ইতিহাসে আজ একটি নতুন অধ্যায় সংযুক্ত হল এবং এটি পালিত হলো কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষেই। এজন্যে নির্দিষ্ট সময় পরেই শহীদ মিনারটি সরিয়ে নিতে হয়েছে। এবারের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে সামনের দিনগুলোতে আরো ব্যাপক আয়োজনে একুশে উদযাপনের পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে। এতে আমন্ত্রণ জানানো হবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট, ভাইস প্রেসিডেন্টসহ কংগ্রেসের শীর্ষ কর্মকর্তাদের।’
একুশের চেতনা আন্তর্জাতিক অঙ্গনে সমুজ্জল রাখার পাশাপাশি প্রবাস প্রজন্মে বাঙালি সংস্কৃতি বিকাশের সংকল্প ব্যক্ত করে বক্তব্য রাখেন ভার্জিনিয়া স্টেট আওয়ামী লীগ সভাপতি রফিক পারভেজ এবং সাধারণ সম্পাদক শফিউল আলাম, ম্যারিল্যান্ড স্টেট আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ সেলিম, ভার্জিনিয়া ও ম্যারিল্যান্ড শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. শামসুজ্জোহা তালুকদার, বৃহত্তর ওয়াশিংটন আওয়ামী যুবলীগের সভাপতি দেওয়ান আরশাদ আলী, বৃহত্তর ওয়াশিংটন আওয়ামী স্বেচ্ছাসেবক লীগের সাধারণ সম্পাদক উসমান খান, ওয়াংশিংটন আওয়ামী মহিলা লীগের সাধারণ সম্পাদক রিফাত আলী প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরও ছিলেন জিবক বড়ুয়া, দস্তগীর জাগাঙ্গীরসহ প্রবাসী বাঙালিরা। এছাড়াও বিপুল সংখ্যক আমেরিকান হোয়াইট হাউজের সামনে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। প্রভাত ফেরীর সময় একুশের গানে নেতৃত্ব দেন কালাচান সরকার, শারমিন দীনার প্রমুখ।
বিডি-প্রতিদিন/ ২২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬/ রশিদা