সংযুক্ত আরব আমিরাতের রাজধানী আবুধাবীর শিল্প নগরী মোসাফফাতে ৯০ জনের অধিক বাংলাদেশি শ্রমিক মানবেতর জীবন যাপন করছেন। কুয়েতি মালিকানাধীন একটি কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন তারা। দীর্ঘ দেড় বছর আগে কোম্পানিটি দেওলিয়া হয়ে গেলে বিপাকে পড়েন প্রায় ১২০ জন শ্রমিক। এদের কেউ কেউ দেশে ফিরেছেন, কেউ বা পালিয়ে কাজ করার চেষ্টা করছেন।
সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে তাদের কষ্টের বোঝা। দূতাবাসের মাধ্যমে আইনের ধারস্থ হলেও মিলেনি কাজ করার অনুমতি। শুধু রোড পারমিশন নিয়ে কোনো রকম দিন অতিবাহিত করছেন। অর্থকষ্ট ও খাওয়া-থাকার অসুবিধায় দিনযাপন করা শ্রমিকরা এখন কাজ নয়, ফিরতে চান আপন গৃহে। কয়েকজন শ্রমিক বললেন, কোম্পানির সঙ্গে যাবতীয় হিসাব মিটে গেলে আমরা দেশে চলে যেতে চাই। কিন্তু সময় যত বাড়ছে, তত ভোগান্তিও বাড়ছে আমাদের।
জানা গেছে, প্রায় দেড় বছর আগে ওই কোম্পানির মালিক কুয়েতে পালিয়ে যান। বিপাকে পড়েন এসব বাংলাদেশি শ্রমিক। দূতাবাসের মাধ্যমে শুরু হয় আইনি লড়াই। এতেই কেটে গেছে দেড় বছর। শেষ হয়ে গেছে তাদের ভিসা ও আইডি কার্ডের মেয়াদ। তিন মাস আগে গোবিন্দ নামের একজন বাংলাদেশি শ্রমিক মারা যাবার কথাও জানান শ্রমিকরা। শ্রমিকদের কেউ কেউ নিয়ে এরইমধ্যে নিয়ে রেখেছেন দেশে যাবারও প্রস্তুতি। কিন্তু অপেক্ষার প্রহর আর কাটছে না। স্থানীয় পুলিশ প্রশাসনের অনুমতিপত্রে দীর্ঘ সময় কাটালেও গত ১৩ দিন থেকে বন্ধ রয়েছে তাদের বিদ্যুৎ ও পানির সংযোগ। ফলে শুরু হয়েছে নতুন ভোগান্তি।
এ ব্যাপারে কথা বললে আবুধাবিস্থ বাংলাদেশ দূতাবাসের সচিব ( শ্রম) ড. মোহাম্মদ মোকসেদ আলী বলেন, কোম্পানি দেওলিয়া হওয়ার পর থেকে শ্রমিকদের পক্ষে আইনি লড়াই করছে বাংলাদেশ দূতাবাস। আদালত বলছে, মামলার নিষ্পত্তি হতে সময় লাগবে। তবে দূতাবাসের নামে পাওয়ার অফ এটর্নি নিয়ে শ্রমিকদের দেশে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হবে। আশা করছি, আগামী ১০ দিনের মধ্যে পাওয়ার অফ অ্যাটর্নির কাজটা শেষ করতে পারবো।
ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যাওয়ায় এসব শ্রমিকদের অন্যত্র কাজ করতে নিষেধসহ আমিরাতের আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়ার জন্যে অনুরোধও জানান তিনি। দ্রুত মামলার নিষ্পত্তি ও শ্রমিকদের দেশে পাঠানোরও আশ্বাস দিয়েছেন দূতাবাসের এ কর্মকর্তা।
বিডি প্রতিদিন/৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬/ফারজানা