বিএনপি নেতা জয়নাল আবেদীন ফারুক বলেছেন ‘সেনাবাহিনীকে বিচারিক ক্ষমতা দিয়ে নির্বাচন দিয়ে দেখুন- কে জয়ী হয়। দোয়া করবেন, বেগম খালেদা জিয়া আবারো প্রধানমন্ত্রী হবেন-এটি খুব দূরে নয়’। রবিবার রাতে নিউইয়র্ক সিটির ব্রুকলীনে গ্রীনহাউজ রেস্টুরেন্টে সেনবাগ উপজেলা জাতীয়তাবাদী ফোরাম আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য তিনি এ কথা বলেন।
রোহিঙ্গা ইস্যুতে ফারুক বলেন, ‘এখন সময় হচ্ছে সকলকে ডেকে গোল-টেবিল বৈঠকের মধ্য দিয়ে জাতীয় ঐক্যমত সৃষ্টি করার। কিন্তু সেটি না করে সরকার প্রকারান্তরে বাংলাদেশকে মিত্রহীন করার পথে চলছে।’
প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা প্রসঙ্গে জয়নাল ফারুক বলেন, ‘পদত্যাগ পত্রের নামে যে নাটক জাতির সামনে উপস্থাপন করা হয়েছে, ৭ লাইনের সেই পত্রে বানান ভুল ৫টি। এ অবস্থায় ১৬ কোটি মানুষ লজ্জা পেলেও এটর্নি জেনারেল কিংবা আইনমন্ত্রী লজ্জা পাননি।’ ‘লাজ-লজ্জাহীন সরকার বিচার বিভাগকে কুক্ষিগত করার প্রয়াস চালাচ্ছে।'
তিনি বলেন, ‘জনতার ধৈর্যের বাঁধ ভেঙ্গে গেলে পুলিশ আর বুলেট কিংবা দলীয় সন্ত্রাসী দিয়ে আন্দোলন ঠেকানো যাবে না। জনতার রোষানলে পড়তেই হবে অপশাসন আর দু:শাসনে লিপ্তদের’।
জয়নাল আবেদীন ফারুক সরকারের বিরুদ্ধে অভিযোগ উত্থাপন করে আরো বলেন, ‘২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির কথিত নির্বাচনের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে কঠিন সংকটে ঠেলে দেয়া হয়েছে। বর্তমান রাজনৈতিক সংকটের জন্য দায়ী আওয়ামী লীগ। বিএনপি আরো ২০ বছর ক্ষমতার বাইরে থাকতে রাজি, তবে মানুষকে ভোটাধিকার দিতে হবে, নির্ভয়ে ভোট প্রদানের পরিবেশ তৈরী করতে হবে। বিএনপি গণতন্ত্রে বিশ্বাসী রাজনৈতিক দল। সুষ্ঠু নির্বাচনের ফলাফল মেনে নিতে বিএনপি কখনোই দ্বিধা করবে না। তবে এই সরকারের ওপর বিএনপির কোন বিশ্বাস নেই, বাংলাদেশের ১ শতাংশ মানুষও তাদের ক্ষমতায় দেখতে আগ্রহী নয়।’
বিএনপির সমাবেশে হোস্ট সংগঠনের সভাপতি জাহাঙ্গীর সোহরাওয়ার্দি সভাপতিত্ব করেন। অতিথি হিসেবে অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক ও জাসাস নেত্রী বেবী নাজনীন, যুক্তরাষ্ট্র বিএনপির সাবেক জ্যেষ্ঠ সহ-সভাপতি অধ্যাপক দেলোয়ার হোসেন, সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল, যুগ্ম সম্পাদক কাজী আজম, কোষাধ্যক্ষ জসীম ভূইয়া, বাংলাদেশ সোসাইটির বোর্ড অব ট্রাস্টির চেয়ারমান এম আজিজ, যুক্তরাষ্ট্র মুক্তিযোদ্ধা দলের সভাপতি আলহাজ্ব বাবরউদ্দিন, যুক্তরাষ্ট্র জাসাসের সভাপতি আলহাজ্ব আবু তাহের, কম্যুনিটি লিডার আলী ইমাম শিকদার, কাজী নয়ন, নিউইয়র্ক সিটি বিএনপির সভাপতি মাহফুজুল মাওলা নান্নু, বিএনপি নেত্রী সৈয়দা মাহমুদা শিরিন, বৃহত্তর নোয়াখালী সোসাইটির সভাপতি রব মিয়া প্রমুখ।
কণ্ঠশিল্পী ও বিএনপি নেত্রী বেবী নাজনীন বলেন, ‘দেশের মানুষ জনগণের সরকার চায়। পরিবর্তন চায় আপামর জনতা।’
বিএনপি নেতা অধ্যাপক দেলোয়ার বলেন, ‘দেশবাসীর মত আমরা প্রবাসীরাও অবাক বিস্ময়ে অবলোকন করছি প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার ঘটনাবলী। এভাবে বিচার বিভাগের মর্যাদা নষ্ট করার অপচেষ্টা চালানো হচ্ছে।’
মোস্তফা কামাল পাশা বাবুল বলেন, ‘আন্দোলন ব্যতিত শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন স্বৈরাচার সরকারকে হঠানো যাবে না। আমরা নির্দেশের অপেক্ষায় রয়েছি।’
কাজী আজম বলেন, ‘১/১১ পরবর্তী মঈন-ফখরুদ্দিন সরকারের বিরুদ্ধে এই প্রবাস থেকে আমরা দুর্বার আন্দোলন রচনা করেছিলাম। আবার নির্দেশ চাচ্ছি বেগম জিয়ার। জাতিসংঘ, স্টেট ডিপার্টমেন্ট, কংগ্রেসের সাথে লবিং শুরু করবো ১/১১ এর চেতনায়।’
বিডি প্রতিদিন/৯ অক্টোবর ২০১৭/হিমেল