জাতীয় ৪ নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা এবং জেলহত্যাকাণ্ডের বর্বরতায় মদদদাতাদেরও চিহ্নিত করার দাবিতে যুক্তরাষ্ট্রে যথাযথ মর্যাদায় ৩ নভেম্বর ‘জেলহত্যা দিবস’ পালিত হলো। এ সময় ১৫ জেলহত্যাকাণ্ড এবং জাতির জনকের খুনি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্তদের মধ্যে যারা এখনও যুক্তরাষ্ট্র, কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে পালিয়ে রয়েছে, তাদেরকে বাংলাদেশে ফিরিয়ে নিয়ে আদালতের রায় কার্যকর করার দাবিও উঠে। একইসাথে বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় ৪ নেতার নীতি ও আদর্শ বাস্তবায়িত করতে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে চলমান কার্যক্রমে সহযোগিতা অব্যাহত রাখার সংকল্পও ব্যক্ত করা হয়। এ উপলক্ষে ৩ নভেম্বর শুক্রবার রাতে যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের উদ্যোগে ‘দোয়া-মাহফিল’ এবং আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয় নিউইয়র্ক সিটির জ্যাকসন হাইটসে একটি পার্টি হলে।
আয়োজক সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সামাদ আজাদের সঞ্চালনায় শুরুতেই দোয়া-মাহফিল অনুষ্ঠিত হয় আতাউল হক গণির নেতৃত্বে। বিশেষ মোনাজাতে সকলে বঙ্গবন্ধুসহ জাতীয় ৪ নেতার রুহের মাগফেরাত কামনা করেন। যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সভাপতি ড. সিদ্দিকুর রহমান তার শ্রদ্ধাঞ্জলি বক্তব্যে বলেন, ‘জেলখানায় যারা হত্যাযজ্ঞ চালিয়েছে এবং এমন বর্বরতায় যারা মদদ জুগিয়েছে, তাদের সকলেই একই দোষে দোষী। ঘাতকদের বিচার হলেও মদদদাতারা এখনও চিহ্নিত হয়নি কিংবা বিচারও শুরু হয়নি। ভবিষ্যতে এমন বর্বরোচিত আচরণে আর কেউ যাতে সাহস না পায়, সেজন্যেই সকলকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো প্রয়োজন হয়ে পড়েছে।’
সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘আদালতে দোষী সাব্যস্তদের কেউ কেউ কানাডা ও যুক্তরাষ্ট্রে আত্মগোপন করে রয়েছে। এদেরকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশে পাঠিয়ে দিতে প্রত্যেক প্রবাসীকে সহায়তা করতে হবে।’
নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া চৌধুরী বলেন, ‘জাতিরজনক বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারে হত্যার পর একই মহল জেলখানায় জাতীয় ৪ নেতাকে নৃশংসভাবে হত্যার মধ্য দিয়ে বাংলার বুক থেকে বঙ্গবন্ধুর আদর্শ তথা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা মুছে ফেলার ষড়যন্ত্র করেছিল। কিন্তু একাত্তরের পরাজিত শত্রুদের সে মতলব ফলপ্রসূ হতে পারেনি বঙ্গবন্ধুর সুযোগ্য উত্তরসূরি শেখ হাসিনা বেঁচে থাকায়। পরম করুণাময়ের অশেষ কৃপায় বাংলাদেশ আজ ঘুরে দাঁড়িয়েছে, শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মুক্তিযুদ্ধের স্বপ্ন ক্রমান্বয়ে বাস্তবায়িত হচ্ছে।’
যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং নিউইয়র্ক মহানগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক মো. আব্দুল কাদের মিয়া বলেন, ‘ষড়যন্ত্রকারিরা এই প্রবাসেও সক্রিয় রয়েছে। তাই বঙ্গবন্ধুর আদর্শের প্রতিটি সৈনিকে চোখ-কান খোলা রাখতে হবে। সকল ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।’
অন্যান্যের মধ্যে আরো বক্তব্য রাখেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি আকতার হোসেন, মাহবুবুর রহমান, সৈয়দ বসারত আলী, লুৎফুল করিম এবং শামসুদ্দিন আজাদ, সাংগঠনিক সম্পাদক মহিউদ্দিন দেওয়ান, কৃষি বিষয়ক সম্পাদক আশরাফুজ্জামান, মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক সম্পাদক মোজাাহিদুল ইসলাম, যুক্তরাষ্ট্র স্বেচ্ছাসেবক লীগের সভাপতি নুরুজ্জামান সর্দার , স্বেচ্ছাসেবক লীগের সহ-আন্তর্জাতিক সম্পাদক সাখাওয়াত বিশ্বাস, মহানগর আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক এবং বাংলাদেশ ল’ সোসাইটির সভাপতি মোর্শেদা জামান, মহানগর আওয়ামী লীগের আইন বিষয়ক সম্পাদক ও যুক্তরাষ্ট্র সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. আব্দুল কাদের মিয়া, যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের প্রবাসী কল্যাণ সম্পাদক সোলায়মান আলী, উপ-প্রচার সম্পাদক তৈয়বুর রহমান টনি, নির্বাহী সদস্য খোরশেদ খন্দকার, সেক্টর কমান্ডার্স ফোরামের সাধারণ সম্পাদক রেজাউল বারি প্রমুখ।
নেতৃবৃন্দের মধ্যে আরও ছিলেন যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগের সম্পাদকমন্ডলীর সদস্য মিসবাহ আহমেদ, ফরিদ আলম, জাহাঙ্গির হোসেন, এম এ মালেক, মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মমতাজ শাহনাজ, আ’লীগ নেতা শামসুল আবদিন, শেখ আতিকুল হক, খসরুজ্জামান খসরু, মুজিবুল মাওলা, যুবলীগ নেতা নান্টু মিয়া প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে যুক্তরাষ্ট্র যুবলীগ, ছাত্রলীগ, শ্রমিক লীগ, নিউইয়র্ক স্টেট আওয়ামী লীগ, বিভিন্ন বরো আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীর সমাগম ঘটে।
বিডি-প্রতিদিন/০৪ নভেম্বর, ২০১৭/মাহবুব