‘কয়েদীরা যদি পছন্দের খাদ্য পায়, তাহলে পাবলিক স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা কেন নিজ নিজ সংস্কৃতির আলোকে হালাল খাদ্য পাবে না’-এমন মন্তব্য করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্ক অঙ্গরাজ্য পার্লামেন্টে ডেমক্র্যাটিক পার্টির সদস্য তথা স্টেট অ্যাসেম্বলিম্যান ডেভিড ওয়েপ্রিন। এই অ্যাসেম্বলিম্যান গত বছর অঙ্গরাজ্য পার্লামেন্টে সকল পাবলিক স্কুলে হালাল খাদ্য (জুইশদের জন্যে কুশের এবং হিন্দুদের ভ্যাজেটারিয়ান) সরবরাহের বিধি তৈরির জন্য একটি বিল উত্থাপন করেছেন। সেই বিলের পক্ষে নিউইয়র্ক সিটি কাউন্সিলের সমর্থন আদায়ের অভিপ্রায়ে গতকাল রবিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে ডেভিড ওয়েপ্রিন বলেন, ‘নিউইয়র্ক সিটির পাবলিক স্কুলের প্রতি ১০ জন ছাত্র-ছাত্রীর মধ্যেই ৪ জনই হয় মুসলমান, নয়তো জুইশ। এছাড়া উল্লেখযোগ্যসংখ্যক হিন্দুও রয়েছে। একারণেই দুপুরের খাদ্য পরিবেশনের সময় সে সব ধর্মাবলম্বীদের পছন্দের খাদ্য থাকা জরুরি।’
ওয়েপ্রিন উল্লেখ করেন, ‘ক্ষুধার কারণে কোন ছাত্রই যাতে নিজেদের ধর্মীয় রীতির সাথে আপস করে অপছন্দের খাদ্য গ্রহণ করতে বাধ্য না হয়, সেদিকে খেয়াল রাখা জরুরি।’
এ সময় হালাল খাদ্যের দাবিতে আন্দোলনরতদের অন্যতম বাংলাদেশি-আমেরিকান মাজেদা এ উদ্দিন বলেন, ‘প্রবীণদের নিবাসে, এমনকি কারাগারেও ধর্মীয় সংস্কৃতির আলোকে খাদ্য পরিবেশনের বিধি রয়েছে। অথচ পাবলিক স্কুলে এখনও সে বিধি করা হয়নি। এর ফলে অনেক ছাত্র-ছাত্রী দুপুরে অনাহারে থাকে এবং সন্ধ্যায় প্রচণ্ড ক্ষুধা নিয়ে ঘরে ফিরে। এ অবস্থায় অনেকে হোমওয়ার্ক করতে সক্ষম হচ্ছে না।’
সংবাদ সম্মেলনে নাজিম শেখ নামক এক অভিভাবক বলেন, ‘আমার ছেলে রিগো পার্কে একটি স্কুলে যাবার সময় বাসা থেকে টিফিন বক্সে দুপুরের খাবার নিয়েছিল। কিন্তু তা ঠাণ্ডা হওয়ায় সে খেতে পারেনি। না খেয়েই বিকেল ৫টা পর্যন্ত ক্লাস শেষে বাসায় ফিরে। এটি শরীরের জন্য কতটা ক্ষতিকর-তা কি বলার অপেক্ষা রাখে?’
প্রসঙ্গত, নিউইয়র্ক সিটির সকল পাবলিক স্কুলে ঈদের দুদিন ছুটি ঘোষণার বিধি তৈরি হয়েছে দু’বছর আগে। সেই উদ্ধৃতিও আসছে হালাল খাদ্য বিল পাশের ক্ষেত্রে। ঈদের ছুটির জন্য সৃষ্ট আন্দোলনের অন্যতম নেতা ছিলেন কংগ্রেসওম্যান গ্রেস মেং (ডেমক্র্যাট)। কংগ্রেসনাল বাংলাদেশ ককাসের অন্যতম নেতা গ্রেস মেং হালাল খাদ্য বিধির প্রতিও সমর্থন জানিয়েছেন।
বিডি-প্রতিদিন/১৩ নভেম্বর, ২০১৭/মাহবুব