যুক্তরাজ্যে বাংলা গণমাধ্যমকর্মীদের প্রতিনিধিত্বকারী সংগঠন লন্ডন-বাংলা প্রেসক্লাব নির্বাচনে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন এমদাদুল হক চৌধুরীর নেতৃত্বাধীন এমাদ-জুবায়ের-মুরাদ প্যানেল।
নির্বাহী কমিটির ১৫টি পদের জন্য রবিবার প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচনের মাধ্যমে প্রেসিডেন্ট ও সেক্রেটারিসহ ১০টি পদে জয়ী হন তারা।
অপর দিকে ট্রেজারার, কমিউনিকেশনস এবং ইনফরমেশন অ্যান্ড টেকনোলজি সেক্রেটারিসহ ৫টি পদে বিজয়ী হয় প্রবীণ সাংবাদিক নাহাস পাশা নেতৃত্বাধীন টিম নাহাস পাশা। লন্ডন সহ সমগ্র ব্রিটেনের প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ার সাংবাদিকদের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে এই ২টি শক্তিশালী প্যানেলের মধ্যে তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।
মোট সদস্য সংখ্যা ৩১৮ জন সদস্যের মধ্যে এবারের নির্বাচনে উৎসব মূখর পরিবেশে ৩১৪ জন ভোটার ভোট প্রদান করেন।
ক্লাবের সভাপতি পদে সাপ্তাহিক পত্রিকার সম্পাদক ও ক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী প্রথমবারের মতো বিজয়ী হয়েছেন। তিনি ক্লাবের বর্তমান প্রেসিডেন্ট সাপ্তাহিক জনমতের প্রধান সম্পাদক সৈয়দ নাহাস পাশাকে ১২ ভোটে পরাজিত করেন। মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী পেয়েছেন ১৬৩ টি ভোট অপর দিকে পরাজিত সৈয়দ নাহাস পাশা পেয়েছেন ১৫১টি ভোট। সহ-সভাপতি পদে ১৮৪ ভোট পেয়ে প্রথমবারের মতো বিজয়ী হয়েছেন সাপ্তাহিক বাংলা পোস্টের সম্পাদক ব্যারিস্টার তারেক চৌধুরী। ১২৫ ভোট পেয়ে পরাজিত হন মোহাম্মদ আবদুস সাত্তার। সাধারণ সম্পাদক পদে মোহাম্মদ জুবায়ের ৭৯ ভোটের ব্যবধানে আনিসুর রহমান আনিছকে হারিয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। চ্যনেল এস এর চীফ রির্পোটার মোহাম্মদ জুবায়ের পেয়েছেন ১৯২ ভোট অপরদিকে বেতার বাংলার আনিসুর রহমান আনিছ পেয়েছেন ১১৩ ভোট।
কোষাধ্যক্ষ পদে ইকরা টিভির চ্যারিটি ম্যনেজার এবং বাংলাদেশ প্রতিদিনের ইউরোপ ব্যুরো চীফ আ স ম মাসুম বিশাল ব্যবধানে জয় লাভ করেন। এবারের নির্বাচনে সর্বচ্চো ভোট পান তিনি। আ স ম মাসুমের প্রাপ্ত ২০০ ভোটের বিপরীতে পরাজিত প্রার্থী আব্দুল কাদের চৌধুরী মুরাদ পেয়েছেন ১০৭ ভোট। ৯৩ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত করে আবু সালেহ মোহাম্মদ মাসুম দ্বিতীয় মেয়াদে নিজের অবস্থান সুসংহত রেখেছেন।
এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি পদে মতিয়ুর রহমান চৌধুরী হারিয়েছেন মোহাম্মদ সোবহানকে। মতিয়ুর রহমান চৌধুরী ৫৩ ভোটের ব্যবধানে হারিয়েছেন গত বারের এসিস্ট্যান্ট সেক্রেটারি মোহাম্মদ সোবহানকে। মতিয়ুর রহমান চৌধুরীর প্রাপ্ত ভোট ১৭৮ আর মোহাম্মদ সোবহান পেয়েছেন ১২৫ ভোট।
কমিউনিকেশন সেক্রেটারি পদে এম এ কাইয়ুম পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। ১৬৪ ভোট নিয়ে বিজয়ী কাইয়ুম এর বিপরীতে জাকির হোসেন কয়েছ পেয়েছেন ১৩৯ ভোট।
মাত্র ৪ ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন টিম নাহাস পাশার পক্ষে ট্রেনিং এন্ড রিসার্চ সেক্রেটারি পদপার্থী আহাদ চৌধুরী বাবু। সাবেক ট্রেনিং এন্ড রিসার্চ সেক্রেটারি ইব্রাহিম খলিল পায় ১৫৫ ভোট আর আহাদ চৌধুরী বাবুর প্রাপ্ত ভোট ১৫১।
ইনফরমেশন এন্ড টেকনোলজি সেক্রেটারি হিসাবে ১৮০ ভোট পেয়ে পুন:নির্বাচিত হন সালেহ আহমেদ। অপরদিকে পরাজিত প্রার্থী আনোয়ার শাহজাহান পেয়েছেন ১২৮ ভোট।
ইভেন্টস এন্ড ফেসিলিটিজ সেক্রেটারি পদে প্রথমবারের মত নির্বাচিত হয়েছেন চ্যানল এস এর সিনিয়র ক্যামেরাম্যান মো: রেজাউল করিম মৃধা। তার প্রাপ্ত ভোট ১৭১। অপর দিকে আজহার ভ’ইয়া পেয়েছেন ১৩৫ ভোট।
নির্বাহী সদস্য পদে মোট ৬টি পদের জন্য ১১ জন প্রার্থী প্রতিদ্বন্ধিতা করেন। এর মধ্যে ৩ জন নারী প্রার্থীর সকলেই বিজয়ী হন। নির্বাহী সদস্য পদে সর্বোচ্চ ভোট পেয়েছেন সাপ্তাহিক সুরমার আব্দুল কাইয়ুম। তার প্রাপ্ত ভোট ১৯১। চ্যানল এস এর সংবাদ পাঠিকা ও বাংলাদেশ প্রতিদিন এর প্রদায়ক রুপি আমিন ১৬৫ ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন। এছাড়াও নির্বাহী সদস্য পদে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছেন মো: ইমরান আহমেদ ও পলি রহমান। তাদের দুইজনেরই প্রাপ্ত ভোট ১৫৭। এবারে প্রথম বারের মত নির্বাচিত হয়েছেন জে ইউ এম নাজমুল হোসাইন ও শাহনাজ সুলতানা। তারা যথাক্রমে ১৫৬ ও ১৪৭ ভোট পেয়েছেন।
লন্ডন বাংলা প্রেসক্লাবের নব নির্বাচিত সভাপতি মোহাম্মদ এমদাদুল হক চৌধুরী সকলের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে বলেন, এই ক্লাব সবার, এখানে কোন একক প্যানেল কাজ করবে না। সকলে মিলেমিশে এই ক্লাবের ঐতিহ্য ধরে রাখতে হবে। তিনি সৈয়দ নাহাশ পাশার সুচিন্তিত পরামর্শ চান যেন করে কমিউনিটিকে পরিপূর্ণ ভাবে সেবা করতে পারেন।
প্রতি দুই বছর পর পর এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ক্লাবের নির্বাচনকে ঘিরে সদস্যদের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীদের দিনব্যাপী এক মিলনমেলা বসে। বেশ সৌহার্দ্যপূর্ণ পরিবেশে অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচন। থাকে দুপুর ও রাতের খাবারের পাশাপাশি সাংস্কৃতিক পরিবেশনা। বেলা ১১টা থেকে শুরু হয় সাধারণ সভার আনুষ্ঠানিকতা। দুপুর ২:৩০ মিনিট থেকে শুরু হয় ভোট গ্রহন চলে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। রাত ১১টার দিকে এই ফলাফল ঘোষিত হয়।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন