মাত্র দেড় বছর আগে ভাইয়ের হাত ধরে কর্মের তাগিদে ওমানে পাড়ি জমিয়েছিলেন চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির যুবক সাব্বির (২২)। কখনো হার্ডওয়ারের দোকান, আবার কখনো মাংসের দোকানে চাকরি করতেন তিনি। বড় ভাই আর বাবাও থাকতেন তার থেকে কয়েক মাইল দূরত্বে। তবে নিজের ভাইয়ের মাংসের দোকানে ভিসা ট্রান্সফার করার প্রক্রিয়া চলছিল। কিন্তু হঠাৎ নিজের ঘরে ফাঁসিতে ঝুলে পরপারে চলে গেলেন সাব্বির।
আত্মহত্যার কারণ উদঘাটন করতে তার কর্মস্থল মাস্কাটের আমিরাতে ফোনে কথা হয় তার সহকর্মী ও ঘনিষ্ট বন্ধু ফারুকের সাথে। ফারুক জানান, সোমবার যথারীতি হার্ডওয়ার দোকানে ডিউটি করেছিল সে। দোকান থেকে সন্ধ্যার একটু আগে বের হয়ে বাড়িতে ফোন করতে দেখি। তার মায়ের সাথে ভিডিও কল দিয়ে কথা বলে মুখ গম্ভীর হয়ে আমার কাছে রুমের চাবি চায়। একটু পরেই অপর এক রুমমেট রুমে তার ঝুলন্ত লাশ দেখতে পায়।
প্রথমে তার লাশ দেখতে পাওয়া গিয়াস উদ্দিন ফোনে বলেন, ' ছেলেটি আমার দোকানে চাকরি করত। কথাবার্তায় বেশ মজা করতো, মিশুক টাইপের ছেল ছিল। মাগরিবের নামাজ পড়তে আমি দোকান থেকে বাসায় গেছি, দরজা লক করা ছিল না। ভেতরে ঢুকতেই ফ্যানের সাথে ঝুলন্ত অবস্থায় তাকে দেখতে পাই। পরে তার ভাই ও বাবাকে বিষয়টি জানাই। পুলিশ এসে সুরতহাল তৈরী করে লাশ মর্গে নিয়ে গেছে।
নিহত সাব্বিরের ভাই সাকিল প্রতিবেদককে ফোনে জানান ' মৃত্যুর একটু আগেও আমাকে ফোন করে ভিসা ট্রান্সফারের ব্যাপারে কথা বলেছিল সাব্বির। আমি বলেছি, আরও এক মাস সময় লাগবে। সে বলেছিল, তাকে ট্রান্সফার না করে ভিসাটা দিয়ে আমার অপর এক ভাইকে দেশ থেকে আনতে।
রহস্যেঘেরা আত্মহত্যার কি কারণ?
যে ছেলে সকালেও হাসিখুশিতে দোকানে এসে ডিউটি করেছেন, সন্ধ্যায় আত্মহত্যা করলেন। তবে এর নেপথ্য কি তা বের করা সম্ভব হয়নি। তার ভাইও কোন সঠিক অনুমান করতে পারছেন না।
তার ঘনিষ্ট বন্ধু ও সহকর্মী ফারুক জানান, প্রেমঘটিত কোন ব্যাপারও নয়, এ ধরণের হলে সে অন্তত আমার সাথে শেয়ার করতো। তবে সে একাধিক মেয়ের সাথে ফোনালাপ করতো। আর তার ফেইসবুক ওয়ালেও কোন ধরণের ইঙ্গিত পাওয়া যায় নি।
বাংলাদেশ দূতাবাস সূত্রে জানা যায়, লাশ দেশে পাঠানোর কাগজপত্র প্রক্রিয়াধীন , সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে বুধবার(৮ জানুয়ারি) লাশ দেশে প্রেরণের সম্ভাবনা রয়েছে। সাব্বির ফটিকছড়ি পৌরসভা ১নং ওয়ার্ড বিবিরহাট বাজার সংলগ্ন কামরাঙ্গা পাড়ার জাহাঙ্গীরের ছেলে।
ওমান, সিলিং ফ্যান, বাংলাদেশ যুবক, আত্মহত্যা
বিডি-প্রতিদিন/ সিফাত আব্দুল্লাহ