বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষে ‘৩০ তম নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলা’র আহ্বায়ক হয়েছেন বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নূরুন নবী। বিজয়ের মাস ডিসেম্বরের প্রথমদিন মঙ্গলবার রাতে বইমেলা কমিটির পক্ষ থেকে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
২০২১ সালে বাংলাদেশ তার প্রতিষ্ঠার ৫০-তম বার্ষিকীতে পদার্পন করবে। একই বছর নিউইয়র্কস্থ ‘মুক্তধারা ফাউন্ডেশন’ কর্তৃক আয়োজিত নিউইয়র্ক বাংলা বইমেলা তার ৩০ বর্ষপূর্তি উদযাপন করবে। এই উদযাপনের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকবে বাংলাদেশের সুবর্ণ জয়ন্তী।
সম্প্রতি মুক্তধারা ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিষদের এক সভায় বীর মুক্তিযোদ্ধা ও একুশে পদকপ্রাপ্ত লেখক ড. নুরুন নবীকে ৩০-তম বইমেলার আহ্বায়ক হিসাবে নির্বাচিত করা হয়।
যুক্তরাষ্ট্র বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা ড. নুরুননবী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রাণরসায়নে স্নাতক শেষ করে জাপানের কিয়ুশ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি অর্জন করেন ও পরে নিউইয়র্ক বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মলিকিউলার বায়োলজিতে পোস্ট ডক্টরাল গবেষণা করেন। কোলগেট টোটালের অন্যতম আবিষ্কারক ড. নুরুন নবী দীর্ঘদিন কোলগেট কোম্পানিতে কর্মরত ছিলেন। তাঁর রয়েছে ৫০টিরও বেশি পেটেন্ট।
১৯৭১ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যায়নরত থাকাকালীন তিনি যোগ দেন মহান মুক্তিযুদ্ধে। সম্মুখযুদ্ধে অংশ নেয়া ছাড়াও তিনি ছিলেন যুদ্ধ পরিকল্পনাকারী ও বার্তাবাহক। মুক্তিযুদ্ধে দুঃসাহসী ভূমিকা রাখার জন্য ড. নুরুন নবীকে, টাঙ্গাইলে মুক্তিবাহিনীর‘দ্য ব্রেইন’ আখ্যা দেয় ‘ফার ইস্টার্ন ইকোনমিক রিভিউ সাময়িকী-এর ১৯৭২ সালের ৬ মে সংখ্যা । একাত্তুরের দুঃসাহসী এই মুক্তিযোদ্ধা মুক্তিযুদ্ধের পটভুমিতে ইতিহাস সমৃদ্ধ দুঃসাহসিক অভিযান নিয়ে লিখেছেন ‘বুলেটস অফ ৭১’এবং ‘অ্য ফ্রিডম ফাইটার’স স্টোরি’ নামে একটি গ্রন্থ। এছাড়াও তিনি মুক্তিযুদ্ধের অনেক অজানা ইতিহাসকে তুলে ধরে রচনা করেছেন আরো দশটি গ্রন্থ। মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক সাহিত্যে বিশেষ অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ বাংলা একাডেমি তাঁকে ২০১৭ সালে সম্মানসূচক ‘ফেলোশিপ’প্রদান করে। ২০২০ সালে বাংলাদেশ সরকার তাঁকে একুশে পদকে ভূষিত করে।
ড. নবী বর্তমানে আমেরিকার নিউজার্সীর প্লেইন্সবরো টাউনশিপ সিটির কাউন্সিলম্যান হিসাবে দায়িত্ব পালন করছেন।
কোভিড-১৯ এর কারণে ৩০-তম মেলার তারিখ এখনো ঠিক করা হয়নি। মুক্তধারা আশা করছে একুশ সালের গ্রীস্মের প্রারম্ভে, কোভিড সংকট দূর হলে, এই মেলা শ্রোতা-দর্শকের উপস্থিতিতে উদযাপন সম্ভব হবে। এ ব্যাপারে মুক্তধারার পরবর্তি পরিকল্পনা জানতে সংস্থার ওয়েবসাইট nyboimela.org এ নজর রাখতে অনুরোধ করা হয়েছে।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল