বাংলাদেশ হাইকমিশনের উদ্যোগে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে ক্যানবেরা কলেজের পারফর্মিং আর্ট সেন্টারে এক সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয় এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে অনুষ্ঠানে শতাধিক প্রবাসী বাংলাদেশি অংশগ্রহণ করেন।
মহান বিজয় দিবস উদযাপনের শুরুতে সকাল ৭টায় হাইকমিশন প্রাঙ্গণে বাংলাদেশের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। হাইকমিশনার সুফিউর রহমান তাঁর বক্তব্যে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি বিনম্র শ্রদ্ধা জ্ঞাপন এবং স্বাধীনতা যুদ্ধে যেসকল বীর মুক্তিযোদ্ধা প্রত্যক্ষ ভূমিকা ও অন্যান্য যারা পরোক্ষ অবদান রেখেছেন তাদের আত্মত্যাগ শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন।
ক্যানবেরাস্থ সাংস্কৃতিক সংগঠন ‘কাব্যকথন’ কবিতা আবৃত্তি করে এবং স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের উপর রচিত গান পরিবেশন করে ‘ধ্রুপদ’।
সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মহান বিজয় দিবস উপলক্ষ্যে মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর বাণীর ভিডিও চিত্র প্রদর্শন করা হয়। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে বিশেষ অবদান রাখা চার জন অষ্ট্রেলিয়ান নাগরিক, বাংলাদেশের অকৃত্রিম বন্ধু উইলিয়াম এ এস অডারল্যান্ড, বীর প্রতীক, এন্থোনি লরেন্স ক্লিফটন, ড. জিওফ্রেই ডেভিস এবং প্রফেসর হারবার্ট ফেইথ এর অবদান তুলে ধরা হয় এবং তাঁদের প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। অনুষ্ঠানে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে উপজীব্য করে নাট্যকার জন মার্টিনের নাটিকা “এ বার্ড ইন দ্যা কেজ” মঞ্চস্থ করা হয়। এরপর ক্যানবেরাস্থ সাংস্কৃতিক সংগঠন কাব্যকথন কতৃর্ক কবিতা আবৃত্তি এবং ধ্রুপদ কতৃর্ক স্বাধীনতা ও মুক্তিযুদ্ধের উপর রচিত গান পরিবেশন করা হয়।
আলোচনা পর্বে ক্যানবেরাস্থ বীর মুক্তিযোদ্ধাসহ কয়েকজন প্রবাসী বাংলাদেশি মহান বিজয় দিবসের তাৎপর্য তুলে ধরেন।
অনুষ্ঠানের শুরুতে উপস্থিত সকলকে মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়ে কনসাল জেনারেল তাঁর স্বাগত বক্তব্য প্রদান করেন।
সিডনিতে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও ভাবগাম্ভীর্যের মধ্য দিয়ে এবং যথাযোগ্য মর্যাদায় বিজয় দিবস উদযাপন করা হয়। দিনের শুরুতেই বাংলাদেশ ভবন, সিডনিতে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে বিজয় দিবস উদযাপন অনুষ্ঠান শুরু হয়। কনসাল জেনারেল উপস্থিত সকলের সাথে মহান বিজয় উপলক্ষে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন।
সন্ধ্যায় কনস্যুলেট ভবনে এক আলোচনা ও মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এ পর্বের অনুষ্ঠানসূচিতে অন্তর্ভুক্ত ছিল জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনা, পবিত্র ধর্মগ্রন্থসমূহ থেকে পাঠ, মহামান্য রাষ্ট্রপতি ও মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও বার্তা প্রদর্শন, কনসাল জেনারেল এর স্বাগত বক্তব্য, বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংবর্ধনা প্রদান, অস্ট্রেলিয়ার নিউ সাউথ ওয়েলস এবং কুইন্সল্যান্ড-এ বসবাসরত বীর মুক্তিযোদ্ধাদের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ ভিত্তিক স্মৃতিচারণমূলক ভিডিও ডকুমেন্টারী প্রদর্শন এবং সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠান শেষে অংশগ্রহণকারী শিশু শিল্পীদের মাঝে সৌজন্য উপহার ও সনদ বিতরণ করা হয়। এ অনুষ্ঠানে উল্লেখযোগ্য সংখ্যক অভিবাসী বাংলাদেশি, সাহিত্য ও সংস্কৃতি অঙ্গনের শিল্পীবৃন্দ, বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার নেতৃস্থানীয় প্রতিনিধিবৃন্দ ও গণমাধ্যমকর্মী কোভিড-১৯ সংক্রান্ত স্থানীয় নিয়মনীতি মেনে অংশগ্রহণ করেন।
শিশু শিল্পীসহ বাংলাদেশ কমিউনিটির শিল্পীবৃন্দের অংশগ্রহণে নাটক, গান, কবিতা ও নৃত্যের সমন্বয়ে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানটি উপস্থিত সকলের জন্য ছিল উপভোগ্য। এবারের সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে মুজিববর্ষের গুরুত্ব ও প্রচারণাকে সামনে রেখে শিশু শিল্পীদের অংশগ্রহণে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসভিত্তিক নাটিকা ‘রক্ত লাল স্বাধীনতা’ মঞ্চায়িত হয়।
বিডি প্রতিদিন/ ওয়াসিফ