ক্রিসমাস ও নববর্ষে করোনাসংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে গত বুধবার থেকে লকডাউন শুরু হয়েছে ইংল্যান্ডের কয়েকটি শহরে। কিন্তু মঙ্গলবার রাতে বিভিন্ন বার ও রেস্তোরাঁয় দেখা গেল উৎসবের দৃশ্য। বুধবার রাত ১২টা থেকে লকডাউন শুরু হয়। তার আগেই সন্ধ্যা থেকে বিভিন্ন বার ও রেস্তোরাঁয় মানুষের ভিড় জমে, যা দেখে যে কেউ ভাববে এটি কোনো উৎসবের দৃশ্য। আস্ত টার্কি, লবস্টারআর পানীয় নিয়ে রাস্তায় পার্টি করেছেন কয়েক শ’ মানুষ।
তবে অনেকেই এই উৎসবকে তুলনা করছেন ‘দ্য লাস্ট সাপার’ বা যিশুর শেষ নৈশভোজের সাথে। কেবলবার কিংবা রাস্তায় নয়, ঝলমলে পোশাকে রাস্তায় পার্টি করছেন লন্ডনের মানুষ। এ যেন চাঁদ রাত!
লন্ডনের সোহোর একটি রেস্তোরাঁয় দেখা যায়, ওয়েটারদের দেখলে যেন মনে হয় বিশ্রাম নেওয়ার একদণ্ড সময় নেই তাদের। কারণ, রেস্তোরাঁটির বাইরেও আছেন অনেক মানুষ। নতুন করে এ লকডাউনে ইংল্যান্ডে বন্ধ থাকবে ক্যাফে, বার, রেস্তোরাঁ ও পাব। ক্রিসমাসের আগে থেকে রেস্তোরাঁগুলোতে খাওয়ার জন্য যে বুকিং দেওয়া হয়েছে, সব বাতিল করা হয়েছে। তবে এ সময় থাকছে বাড়িতে খাবার সরবরাহের ব্যবস্থা।
এ দিকে লন্ডনে প্রতিদিনই বাড়ছে করোনা রোগীর সংখ্যা। এ কারণেই প্রশাসন বাধ্য হচ্ছে কঠোর ব্যবস্থা নিতে। দেশটির স্বাস্থ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন, এর আগে ‘টায়ার টু’ লকডাউন দেওয়া হয়েছিল। অর্থাৎ এর আগের লকডাউন ছিল হাই এলার্ট। তবে এবারে দেওয়া হয়েছে ‘টায়ার থ্রি’, অর্থাৎ ‘ভেরি হাই এলার্ট’, যা ইংল্যান্ডের সর্বোচ্চ সতর্কতা।
লকডাউনের আগেই বাড়ির বাইরে বেশি মানুষের মেলামেশা নিষিদ্ধ করা হয়েছিল লন্ডনে। এমনকি বলা হয়েছিল বাড়ির বাগানেও একসাথে অনেকে লোক জমায়েত হতে পারবে না। তবে এ লকডাউনে খোলা থাকছে খাদ্যসামগ্রীর দোকান।
লন্ডনের মেয়র সবাইকে বিধিনিষেধ মানার আহ্বান জানিয়েছেন। তবে নতুন এ লকডাউনে থাকছে আগের চেয়ে ভিন্নতা। ক্রিসমাস উপলক্ষে ২৩ থেকে ২৭ তারিখ পর্যন্ত একত্রিত হতে পারবে তিন পরিবারের সদস্যরা।
মঙ্গলবার রাতে পাবের সামনে নাচতেও দেখা যায় দুই নারীকে। তবে এমন দৃশ্য দেখে কে বলবে দেশজুড়ে করোনা সংক্রমণের ভয়াবহতা রয়েছে। করোনা মহামারির আগের অবস্থায় যেমন অবাধে চলাফেরা ছিল এ যেন ওই অবস্থা। নেই কোনো মাস্ক, নেই সামাজিক দূরত্ব। তবে লকডাউন শুরুর ঠিক আগ মুহূর্তে রাস্তায় রাস্তায় পুলিশি টহলও চোখে পড়ে।
বিডি প্রতিদিন/জুনাইদ আহমেদ