টোকিওস্থ বাংলাদেশ দূতাবাস যথাযথ মর্যাদায় বিজয় দিবসের ৫০ বছর বা সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করেছে।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার সকালে দূতাবাস প্রাঙ্গনে দিনের কার্যক্রম শুরু হয় জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে। পতাকা উত্তোলন করেন জাপানে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ। পরে ১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়।
দূতাবাসের তৃতীয় তলায় স্থাপিত বঙ্গবন্ধু কর্নারে বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্য স্থাপন এ বছরের বিজয় দিবস উদযাপনে ভিন্ন মাত্রা যোগ করে।
উপস্থিত অতিথি ও দূতাবাসের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে ভাস্কর্যটি উম্মোচন করেন রাষ্ট্রদূত শাহাবুদ্দিন আহমদ। দূতাবাসের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের পরবর্তী অংশে মহান মুক্তিযুদ্ধে বীর শহীদদের আত্মার মাগফিরাত ও শান্তি কামনা করে দোয়া করা হয়। এছাড়া মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি, প্রধানমন্ত্রী এবং পররাষ্ট্রমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী কর্তৃক প্রদত্ত বাণী পাঠ করা হয়।
পরে অনুষ্ঠিত আলোচনায় রাষ্ট্রদূত শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করেন জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টে নিহত তার পরিবারের সদস্যদের, জাতীয় চার নেতা, মুক্তিযুদ্ধের সকল শহীদ, যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা এবং সম্ভ্রম হারানো সকল বীর মা-বোনদের। তিনি জাপান প্রবাসীসহ সবাইকে বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা জানান।
এ সময় রাষ্ট্রদূত বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিরলস পরিশ্রম ও প্রাজ্ঞ নেতৃত্বে বাংলাদেশের উন্নয়ন ও অগ্রগতি আজ সমগ্র বিশ্বে স্বীকৃত। করোনাভাইরাসের মহামারির সঙ্কট মোকাবিলা করেও বাংলাদেশে আশাব্যঞ্জক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয়েছে। তিনি উন্নয়নের এই ধারাবাহিকতা রক্ষায় সবাইকে নিজ নিজ অবস্থান থেকে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখার এবং বাংলাদেশের মর্যাদা অটুট রাখার আহ্বান জানান।
আলোচনা পর্বে জাপানের সংসদ সদস্য ও ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির চেয়ারম্যান মিনোরু কিউচি বলেন, “আমি বাংলাদেশে গিয়েছি এবং সেখানে উন্নয়ন দেখে আমি মুগ্ধ”।
এতে উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধুর আবক্ষ ভাস্কর্যের শিল্পী ড. ওতসুবো ওসামু, সাবেক রাষ্ট্রদূত মাতসুহিরু হরিগুচি, জাপান বাংলাদেশ সোসাইটির প্রেসিডেন্ট সাবেক রাষ্ট্রদূত মাসাতো ওয়াতানাবে, টোকিও সেক্রেড হার্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক মাসাকি ওহাসি, টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের প্রফেসর কিওকো নিওয়া।
বক্তারা দু’দেশের মধ্যে বিদ্যমান সম্পর্ক ও বাংলাদেশের উন্নয়ন তুলে ধরেন এবং আশা প্রকাশ করেন ভবিষ্যৎ বাংলাদেশ হবে আরো উন্নত ও আধুনিক।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বঙ্গবন্ধু ও বাংলাদেশের পরম বন্ধু তাকাশি হায়াকাওয়ার পুত্র ওসামু হায়াকাওয়া। এছাড়া উম্মুক্ত আলোচনায় অংশ নেন জাপান প্রবাসী বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃবৃন্দ ও স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ। মহান মুক্তিযুদ্ধের উপর ভিডিও তথ্যচিত্র প্রদর্শনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের সমাপ্তি হয়।
এছাড়া সন্ধ্যায় বিজয় দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর শপথ বাক্য পাঠের সাথে দূতাবাস পরিবারের সদস্যগণও অনলাইনে সরাসরি শপথ গ্রহণ করেন। পরে সাংস্কৃতিক সন্ধ্যা অনুষ্ঠিত হয় এবং বিজয় দিবসের কেক কাটা হয়।
বিডি-প্রতিদিন/বাজিত হোসেন