বেতন বৃদ্ধি, শিশু-যত্নের ভর্তুকি, নির্ভরশীলদের জন্য উন্নত স্বাস্থ্যসেবা, পারিবারিক ছুটি বৃদ্ধি, গণপরিবহনে বিনা ভাড়ায় ভ্রমণের পাস এবং আন্তর্জাতিক স্কলারদের জন্য টিউশন ফি কমানোর দাবিতে ‘ইউনিভার্সিটি অব ক্যালিফোর্নিয়ার ১০টি ক্যাম্পাসেই ১৪ নভেম্বর ধর্মঘট শুরু হয়েছে।
মুদ্রাস্ফীতির পরিপ্রেক্ষিতে এই ইউনিভার্সিটির শিক্ষক, ক্লাস পরিচালনাকারি কর্মচারি, পোস্ট ডক্টরাল স্কলার, গবেষণারত শিক্ষার্থী, বিজ্ঞানাগার, রসায়নাগার, লাইব্রেরির কর্মচারিরা অংশ নিচ্ছেন এই ধর্মঘটে।
৪৮ হাজার শ্রমিক-কর্মচারির সকলেই ধর্মঘটে অংশ নেয়ার এই ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষাঙ্গনে সবচেয়ে বড় ধরনের একটি আন্দোলন হিসেবে দেখা হচ্ছে। ধর্মঘটকারীরা দাবির সমর্থনে শিক্ষাঙ্গন এলাকায় তুমুল বিক্ষোভ-মিছিল করেন। শিক্ষক-কর্মচারিরা ধর্মঘটে যাওয়ায় কোন ক্লাস করতে সক্ষম হননি ছাত্র-ছাত্রীরা।
উল্লেখ্য, বিভিন্ন কোর্সের চূড়ান্ত পরীক্ষার মাত্র এক সপ্তাহ আগে ধর্মঘটে যাওয়ায় শিক্ষার্থীরা হতাশ হয়ে পড়েছেন। দিন শেষে ধর্মঘটে যাওয়া শ্রমিক ফেডারেশনের নেতৃবৃন্দ বলেছেন, সমঝোতার কোন লক্ষণ নেই। তাই দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চলবেই। শ্রমিক ইউনিয়ন ‘ইউএডব্লিউ লোকাল ২৮৬৫’র প্রেসিডেন্ট রাফায়েল জেইম সোমবার অর্থাৎ প্রথম দিনের কর্মসূচি শেষে গণমাধ্যমকে বলেন, দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা ঘরে ফিরবো না।
উল্লেখ্য, ধর্মঘটে থাকা ৪৮ হাজার শ্রমিক-কর্মচারির মধ্যে ১৯ হাজার জনের প্রতিনিধিত্ব করছে ‘ইউএডব্লিউ লোকাল ২৮৬৫’। জেইম উল্লেখ করেন, সোমবার অপরাহ্নে ইউনিভার্সিটি কর্মকর্তাগণের সাথে দেন-দরবার করেছেন গবেষণারত শিক্ষার্থীরা। এরফলে আদ্যে কোন সমঝোতার পথ সুগম হয়েছে কিনা তা বলতে পারেননি এই শ্রমিক নেতা। তবে কর্তৃপক্ষ অনড় থাকায় দাবি আদায়ের ক্ষেত্রে বরফ গলছে না বলে মন্তব্য করেছেন নেতৃবৃন্দ।
এদিকে ইউনিভার্সিটি কর্তৃপক্ষ সমঝোতার দেন-দরবারের আলোকে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে, বেতন-ভাতা ৭% বৃদ্ধির প্রস্তাব দেয়া হয়েছে চুক্তির (যদি হয়) প্রথম বছরের জন্যে। দ্বিতীয় বছরে বাড়বে আরো ৩%। এটি সময়ের প্রয়োজনে যথার্থ বলে মন্তব্য করা হলেও আন্দোলনকারিরা তা মানতে নারাজ।
২৭ বছর বয়সী সাইকোলজির গ্র্যাজুয়েট জ্যামি মন্ডেলে বলেন, বাড়ি ভাড়াসহ নিত্য প্রয়োজনীয় সবকিছুর দাম বেড়েছে। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে। বেতন-ভাতা না বাড়লে বাড়ি ভাড়া প্রদান করা সম্ভব হবে। পুষ্টিকর খাদ্যের কথা ভাবতেও পারবো না। তাই ধর্মঘটের বিকল্প নেই।
বিডি-প্রতিদিন/সালাহ উদ্দীন