গুরুত্বপূর্ণ ডকুমেন্ট উদ্ধার এবং ক্যাপিটল হিলে হামলায় সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে চলমান তদন্তে গভীর পর্যবেক্ষণ করার জন্যে আন্তর্জাতিক যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালের খ্যাতনামা আইনজীবী জ্যাক স্মীথকে নিয়োগের ঘোষণা দিয়েছেন বাইডেনের আইনমন্ত্রী অ্যাটর্নি জেনারেল মেরিক গারল্যান্ড।
শুক্রবার ‘বিশেষ কাউন্সেল’ নিয়োগের এই ঘোষণা প্রদান করার পর মার্কিন রাজনীতিতে সামনের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের হিসাব-নিকাশে নতুন মোড় নিয়েছে।
২০২৪ সালের নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট পদে ট্রাম্প প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঘোষণার ৩ দিনের মাথায় তার বিরুদ্ধে গুরুতর অপরাধ সংঘটনের চলমান তদন্তে পর্যবেক্ষণের জন্যে জ্যাক স্মীথকে নিয়োগ করা হলো ‘স্পেশাল কাউন্সেল’ হিসেবে। জ্যাক স্মীথ বেশ কয়েক বছর যুক্তরাষ্ট্র ফেডারেল কোর্টে পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছিলেন বিশেষ কৃতিত্বের সাথে।
বিচার বিভাগে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে অ্যাটর্নি জেনারেল গারল্যান্ড বলেন, সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প সামনের নির্বাচনে নিজের প্রার্থিতা ঘোষণা করেছেন। একইসাথে বর্তমান প্রেসিডেন্ট বাইডেনও পুনরায় প্রার্থী হওয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন। তাই জনস্বার্থে আমাকে স্পেশাল কাউন্সেল নিয়োগ করতে হলো। অ্যাটর্নি জেনারেল অবশ্য ক্যাটাগরিকেলি অস্বীকারের চেষ্টা করেছেন যে, চলমান তদন্তে ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করার অভিপ্রায়ে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
গারল্যান্ড বলেন, এটি সঠিক একটি পদক্ষেপ, যা করা দরকার ছিল। বিশেষ একটি পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় স্পেশাল কাউন্সেল নিয়োগের প্রয়োজন দেখা দিয়েছিল। অ্যাটর্নি স্মীথ হচ্ছেন সঠিক একজন ব্যক্তি, যার মাধ্যমে সুবিচারের পথ নিশ্চিত হবে।
উল্লেখ্য, ২০২০ সালের নির্বাচনের ফলাফল অস্বীকার করে ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি ট্রাম্প সমর্থকরা ক্যাপিটল হিল ভবনে সহিংসতা চালিয়েছিল। সেই হামলায় পুলিশের কয়েকজন সদস্য নিহত হয়েছেন। সেই হামলার ঘটনাকে যুক্তরাষ্ট্রের গণতন্ত্রের ওপর হামলা হিসেবে বলা হচ্ছে। এ নিয়ে হাউজে একটি কমিটির মাধ্যমে তদন্ত শুরু হয়েছে।
এছাড়া সম্প্রতি ফ্লোরিডায় ট্রাম্পের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে এফবিআই এমন সব ডকুমেন্ট উদ্ধার করেছে, যা রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার পরিপন্থী। সে বিষয়েও তদন্ত চালাচ্ছে বিচার বিভাগ।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করেন, মধ্যবর্তী নির্বাচনে কংগ্রেসের নিম্নকক্ষের নিয়ন্ত্রণ রিপাবলিকানদের কাছে যাওয়ায় কংগ্রেসের সেই তদন্ত থামিয়ে দিতে পারেন সাবেক প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প। সেদিকে নজর রেখেই ‘স্পেশাল কাউন্সেল’ নিয়োগ করা হলো।
তবে এই পদক্ষেপে অখুশি মহল যুক্তি দেখাচ্ছেন যে, ২০১৬ সালের প্রেসিডেন্ট প্রার্থী হিলারি ক্লিন্টনের বিরুদ্ধেও তদন্ত চলে সরকারি কাজকর্ম ব্যক্তিগত ই-মেলে সম্পাদনের জন্যে। সে সময় স্পেশাল কাউন্সেল নিয়োগ করা হয়নি বিদায়ী প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা কর্তৃক। তাহলে এখন কেন করা হলো?
বিডি প্রতিদিন/এমআই