যথাযোগ্য মর্যাদায় ৬ নভেম্বর জাতিসংঘে বাংলাদেশ স্থায়ী মিশনে ‘জাতীয় সংবিধান দিবস’ পালন করা হয়েছে। মিশনের বঙ্গবন্ধু মিলনায়তনে অনুষ্ঠানের শুরুতেই রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর বাণী পাঠ করা হয়। এতে মূল বক্তব্য রাখেন জাতিসংঘে বাংলাদেশের স্থায়ী প্রতিনিধি রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ আব্দুল মুহিত।
স্থায়ী প্রতিনিধি তার বক্তব্যে সংবিধান প্রণয়ণের প্রেক্ষাপট তুলে ধরে বলেন, “সংবিধান বাংলাদেশের সর্বোচ্চ আইন এবং পবিত্র দলিল। এর মর্যাদা সম্মুন্নত রাখা আমাদের রাষ্ট্রীয় দায়িত্ব”। তার বক্তব্যে উঠে আসে বাংলাদেশের সংবিধানের বিশেষ বিশেষ বৈশিষ্ট্য যা সংবিধানকে বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংবিধানের মর্যাদা দিয়েছে।
রাষ্ট্রদূত মুহিত বলেন, “আমাদের সংবিধান জাতিরপিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐন্দ্রজালিক নেতৃত্বে দীর্ঘ ২৩ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রাম ও ৯ মাস মহান মুক্তিযুদ্ধের পর আমাদের চূড়ান্ত বিজয় অর্জনের গৌরবময় ইতিহাসের নির্যাস। এ সংবিধান প্রণয়নের মাধ্যমে জাতিরপিতা সেদিন দেশে জনতার শাসনতন্ত্র উপহার দিয়েছিলেন। এতে মানুষের মৌলিক অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। এটি সমাজে ন্যায়বিচার, সমতা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করে দিয়েছে।”
জাতীয় সংবিধান দিবস পালনের গুরুত্ব সম্পর্কে স্থায়ী প্রতিনিধি বলেন, “আমাদের সংবিধান আমাদের রাষ্ট্র পরিচালনা, আমাদের পররাষ্ট্রনীতি ও এর বাস্তবায়নের মূলভিত্তি। দেশে আইনের সুশাসন প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে ভবিষ্যতে কিভাবে বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধুর স্বপ্নের সুখী-সমৃদ্ধ সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলা যায়, তার সকল সুস্পষ্ট দিক-নির্দেশনা রয়েছে এই সংবিধানে। তাই আমরা আমাদের কর্ম ও চিন্তায় যেন সর্বদা সংবিধানকে অনুসরণ করতে পারি, তার জোরালো আহ্বান জানান রাষ্ট্রদূত মুহিত।”
অনুষ্ঠানে ‘বাংলাদেশের সংবিধানে নারীর অধিকার’ শীর্ষক একটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন মিশনের মিনিস্টার শাহানারা মনিকা। তিনি আমাদের সংবিধানকে নারীবান্ধব করে তুলতে তৎকালীন সংবিধান প্রণয়ন সংক্রান্ত খসড়া কমিটির একমাত্র নারী সদস্য রাজিয়া বানুর ভূমিকা তুলে ধরেন। মিনিস্টার মনিকা বলেন, “আমাদের সংবিধানে রাষ্ট্রের সকল ক্ষেত্রে নারী-পুরুষের সমান অধিকার নিশ্চিতকরণে রাজিয়া বানু বিশেষ ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া, দ্রুত ও প্রকাশ্য বিচারের অধিকার, সংখ্যালঘুদের অধিকার, চলাফেরার স্বাধীনতা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলো অন্তর্ভূক্তিকরণেও বিশেষ অবদান রাখেন রাজিয়া বানু।”
মিনিস্টার শাহানারা মনিকার উপস্থাপনার পর উন্মুক্ত আলোচনা পর্বে মিশনের অন্য কর্মকর্তারা অংশগ্রহণ করেন। তারা বলেন, “বাংলাদেশের সংবিধান শুধু আমাদের সর্বোচ্চ আইনই নয়,এতে দেশের সীমারেখা, প্রশাসনিক ভিত্তি, বিচার বিভাগ, আইন বিভাগসহ রাষ্ট্র পরিচালনার সংশ্লিষ্ট সকল দিকই তুলে ধরা হয়েছে, যা পূর্নাঙ্গ এবং অনন্য বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন একটি রাষ্ট্রীয় দলিল।”
অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন মিশনের দূতালয় প্রধান ফাহমিদ ফারহান।
বিডি প্রতিদিন/এএম