এগিয়ে যাচ্ছে বিজ্ঞান। আসছে নতুন নতুন প্রযুক্তি। এবার বিজ্ঞানীরা এমন এক ধরণের আয়না আবিস্কার করার দাবি করেছে যার সামনে দাঁড়ালে দেখা যাবে শরীরের চামড়ার নিচে থাকা অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ। দেখা যাবে মাংসপেশী, শিরা-উপশিরা, লিভার, পিত্ত- নানা কিছু।
ব্যাপারটা শুনতে জাদুর মত মনে হলেও আসলে এই আয়না নামক যন্ত্রমূলত কয়েকটি ভিন্ন ভিন্ন যন্ত্রের সন্নিবেশ। এই যন্ত্রের মাঝে অংশ হিসেবে আছে PET স্ক্যান, এক্স-রে ইমেজ, MRI স্ক্যান। PET স্ক্যান (positron emission tomography) দেহের টিস্যু এবং টিস্যুর গঠন বিশ্লেষণ করে। সাধারণত হার্ট ও মস্তিষ্ক সংক্রান্ত পরীক্ষায় এটি ব্যবহার করা হয়। এক্স-রে ইমেজ যেটি হাড় ও টিউমারের চিত্র ধারণ করে। MRI (magnetic resonance imaging) সাধারণত শরীরের নমনীয় অংশের চিত্র ধারণ করে। এই ডিজিটাল আয়নায় এগুলোর সাথে আরও আনুষঙ্গিক ব্যবস্থা যুক্ত হয়ে মানুষের একটি পূর্ণাঙ্গ আভ্যন্তরীণ ছবি তৈরি করে আয়নার পর্দায় ফেলে এবং দর্শক (যিনি সামনে দাঁড়িয়ে থাকবেন) তা দেখতে পায়।
এর সাথে সাথে মাইক্রোসফটের তৈরি করা একটি সেন্সর কাজ করে যখন আয়নার সামনে দাঁড়ানো মানুষটি হেটে বেড়ায় কিংবা নড়াচড়া করে বেড়ায়। মাইক্রোসফটের এই মোশন ক্যাপশন ক্যামেরা দাঁড়ানো ব্যক্তির হাঁটু, কনুই, ঘাড়, মাথা, হাত-পায়ের পাতা সহ অন্যান্য শারীরিক পয়েন্টকে টার্গেট করে। হাটার সময় কিংবা নড়াচড়া করার সময় মূলত এ অঙ্গগুলোই বেশি নড়ে। এদের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করে একজন মানুষের একটি চলনশীল ইমেজও দিতে পারে এই ডিজিটাল আয়না।
এই আয়না চিকিৎসাবিজ্ঞানে বিপ্লব আনবে বলে মনে করছেন উদ্ভাবকরা। তারা জানান, এই প্রযুক্তিকে নিরাপত্তাবাহিনীর লোকেরাও ব্যবহার করতে পারেন। সমুদ্রবন্দর, বিমান বন্দর বা গুরুত্বপূর্ণ প্রবেশদ্বারে এটা লাগিয়ে রাখা যেতে পারে। আশপাশ দিয়ে কেউ চলে গেলে তার শরীরে লুকানো অস্ত্র শনাক্ত করা যাবে।
তবে একইসঙ্গে একটি বিতর্কও পাশাপাশি চলছে। সভ্য মানুষের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে দেহকে পোশাকে মুড়ে রাখা। কিন্তু এই ডিজিটাল আয়নার বদৌলতে ব্যক্তির একান্ত গোপনীয়তা নষ্ট হবে না তো!
এই প্রসঙ্গে জর্জ ওয়াশিংটন ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক জেমস হ্যান বলেন, ''এই আয়নায় মূলত সি.টি. এম.আর.আই, কিংবা এক্সরের ছবির মত ছবি পাওয়া যাবে। সত্যিকারে বাইরের ত্বকের ছবি বলতে যেটা বোঝানো হয় সেরকম কিছুই না।''
আয়নার সামনে আপনাকে কেমন দেখাবে ভিডিওতে দেখুন:
বিডি-প্রতিদিন/১৬ এপ্রিল ২০১৬/ এস আহমেদ