একদা আচার্য জগদীশ চন্দ্র বসুর আবিষ্কার মার্কনি সাহেবের নামেই চলে গিয়েছিল। কিন্তু আজ যখন সারা বিশ্বের বিজ্ঞানীরা এগোচ্ছেন 5G প্রযুক্তির দিকে, তখন তাদের দিশা দেখাচ্ছে জগদীশ চন্দ্রের গবেষণাই।
১৮৯৫ সালে রেডিও কমিউনিকেশন সংক্রান্ত গবেষণায় জগদীশচন্দ্র ব্যবহার করেছিলেন মিলিমিটার ওয়েভলেংথ ফ্রিকোয়েন্সি প্রযুক্তি। আজ তাই-ই ৫জি গবেষণার মেরুদণ্ড। সেদিন না ছিল যন্ত্রপাতি, না ছিল উপযুক্ত পরিবেশ, গোদের উপর বিষফোড়ার মতো ব্রিটিশ অধ্যুষিত ভারতবর্ষে স্বদেশী বিজ্ঞানীদের উপর নানা জোরজুলুম, জাতিবিদ্বেষ। সে সব উপেক্ষা করেই নিজের সাধনা চালিয়েছিলেন জগদীশ চন্দ্র। এবং এমন বিষয় নিয়ে তিনি কাজ করেছিলেন, যা সময়ের থেকে অনেক এগিয়ে ছিল। সামান্য উপকরণ দিয়েও এমন কাজ করা যায়, আজ তা জেনেই বিস্মিত হচ্ছেন বিশ্বের তাবড় বিজ্ঞানীরা। এমনকী সেদিন মার্কনি সাহেবও যে গবেষণা করেছিলেন, তা জগদীশচন্দ্রের আবিষ্কারের উপর ভিত্তি করেই।
প্রায় ১২০ বছর আগে টাউন হলে এই মিলিমিটার ওয়েভের উপর একটি পরীক্ষা তিনি করে দেখান। যেখানে একদিকে বারুদ জ্বালানো হয়। অন্যদিকে মিমি ওয়েভকে কাজে লাগিয়ে দূরে থাকা একটি ঘণ্টাকে বাজানো হয়। ‘অদৃশ্য আলোক’ নামে এক প্রবন্ধে তিনি জানান, এই অদৃশ্য আলো দেওয়াল ও অন্যান্য প্রতিবন্ধকতা ভেদ করে চলে যেতে পারে। ঠিক এভাবেই কোনরকম তার ছাড়া বার্তাও পৌঁছে দেওয়া যেতে পারে। এই মিলিমিটার ওয়েভলেংথ সংক্রান্ত গবেষণাই এখন দিশা দেখাচ্ছে ৫জি টেকনোলজিকে। উপরন্তু জগদীশ চন্দ্র কীভাবে কাজ করেছিলেন সেদিন, তারও খোঁজখবর শুরু হয়েছে বিশ্বের বিজ্ঞানীমহলে। শতবর্ষ আগে যে বঞ্চনা এসেছিল, ইতিহাস আজ যেন তাই-ই স্বীকৃতি ও সম্মানের রূপে ফিরিয়ে দিচ্ছে ভারতসেরা বাঙালি বিজ্ঞানীকে। সূত্র: সংবাদ প্রতিদিন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার