ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ে (ইবি) ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদভুক্ত এফ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসের সত্যতা পাওয় গেছে। এ ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষক ও দুই কর্মচারিকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। একই সঙ্গে এক শিক্ষার্থীর ছাত্রত্ব বাতিল ও ভর্তি পরীক্ষা বাতিল করে পুনরায় পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সোমবার বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩৩তম সিন্ডিকেট সভা থেকে এ সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
ক্যাম্পাস সূত্রে জানা যায়, সোমবার সকাল ১১ টায় উপাচার্য অধ্যাপক ড. হারুন উর রশিদ আসকারীর সভাপতিত্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৩৩ তম সিন্ডিকেট সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় উপ উপাচার্য অধ্যাপক ড. শাহিনুর রহমান, কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সেলিম তোহাসহ মোট ১৮ জন সদস্যের মধ্যে ১৭ জন উপস্থিত ছিলেন। সভায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় এফ ইউনিটের প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়। এফ ইউনিটের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগে গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের উপর ভিত্তি করে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জাড়িত থাকার কারণে ওই ইউনিটের সম্মন্নয় ও গনিত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নূরুল ইসলামকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে এবং আগামী ৭ দিনের মধ্যে কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
এছাড়া পরীক্ষা কমিটিতে থাকা অপর দুই সদস্য গণিত বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান ও পরিসংখ্যান বিভাগের সভাপতি মো. আলতাফ হোসেন রাসেলকে সতর্কবার্তা দিয়ে আগামী দুই বছর তাদেরকে ভর্তি কার্যক্রম থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত হয়েছে। একই সাথে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই কর্মচারী আলাউদ্দিন আলাল (লাইব্রেরী) ও সাইফুল ইসলামকে (অর্থ ও হিসাব শাখা) সাময়িক বরখাস্ত এবং কারণ দর্শাতে বলা হয়েছে।
প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত থাকার কারণে গণিত বিভাগের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মনোজিৎকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ীভাবে বহিষ্কার করা হয়েছে এবং তার অর্জিত কাগজপত্র বাতিল করা হয়েছে। একইসঙ্গে ফলিত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি অনুষদের 'এফ' ইউনিটে ভর্তি হওয়া ১০০ শিক্ষার্থীর ভর্তি বাতিল করা হয়েছে এবং পুণরায় পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মিজানুর রহমান লাল্টু নামের এক ডাক্তারকে প্রশ্ন ফাঁসের সাথে জড়িত থাকার কারণে দেশের প্রচালিত আইন অনুযারি মামলা করা হবে বলেও সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে সিন্ডিকেট সভায়।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৭ নভেম্বর এফ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। পরীক্ষা শেষে বিভিন্ন মহল থেকে এই ইউনিটের প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ ওঠে। অভিযোগের ভিত্তিতে গত ২৫ জানুয়ারি বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগের অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামালকে আহবায়ক করে তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। তদন্ত কার্যক্রম শেষে গত ৪ মার্চ কমিটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের হাতে প্রতিবেদন জমা দেন।
তবে প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ অস্বীকার করে গণিত বিভাগের সভাপিত নূরুল ইসলাম বলেন, প্রমান ও মনোজিৎকে গ্রেফতার ছাড়াই কিভাবে আমার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিচ্ছো তা নিয়ে আমি সংশয় প্রকাশ করছি।