রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষের ভর্তি পরীক্ষার চারুকলা অনুষদ অধিভুক্ত ‘আই’ ইউনিটের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয় ২৫ অক্টোবর। পরীক্ষার প্রশ্নপত্রের দু'টি প্রশ্ন নিয়ে ওঠা ধর্মীয় ‘উস্কানির’ অভিযোগ সমাধান না হতেই প্রশ্নপত্রটি পর্যালোচনা করে দেখা গেছে ভুলের ছড়াছড়ি।
প্রশ্নপত্রটির মোট ৮০ টি প্রশ্নের মধ্যে ১৭ টি প্রশ্নে অন্তত ১৯ জায়গায় ভুল পাওয়া গেছে। প্রশ্নগুলোর কোনোটিতে শব্দগত এবং কোনোটিতে অর্থ ও ব্যাকরণগত ভুল রয়েছে।
প্রশ্নপত্রে ৯টি প্রশ্নে ‘কি’ এবং ‘কী’ এর ভুল ব্যবহার দেখা দেখা গেছে। সেট-১ প্রশ্নপত্রের ৫ নং প্রশ্নে বলা হয় ‘দেয়ালে রং প্রয়োগ করে চিত্রাংকন পদ্ধতিকে কি বলে?’ ৬ নং প্রশ্নে ‘বাংলাদেশের শীতলতম স্থানের নাম কি’ ৭ নং প্রশ্নে ‘মুজিব নগর স্মৃতি সৌধের স্থপতির নাম কি?’ ১৬ নং প্রশ্নে ‘হায়ারোগ্লিফিকস কি?’ ২২ নং প্রশ্নে ‘হোমারের মহাকাব্যের নাম কি?’ ৩৭ নং প্রশ্নে ‘মনপুরা ৭০ কি?’ ৪৫ নং প্রশ্নে ‘পরার্থ শব্দের অর্থ কি?’ ৪৮ নং প্রশ্নে ‘উজবুক শব্দের অর্থ কি?’ ৫৬ নং প্রশ্নে ‘পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থের নাম কি?’
এইসব প্রশ্নের সবখানেই ‘কি’ শব্দ দিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছে। কিন্তু অর্থগত ও ব্যাকরণ অনুযায়ী ওইসব প্রশ্নে ‘কী’ শব্দ দিয়ে প্রশ্ন হওয়ার কথা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক ড. অমৃতলাল বালা বলেন, চারুকলা অনুষদের ওই প্রশ্নপত্রে ‘কী’ শব্দটি দিয়ে প্রশ্ন করা উচিত ছিল। ‘কি’ হলো প্রশ্নবোধক, সমতাবিধায়ক, সংশয়সূচক ও বিস্ময়বোধক অব্যয়। এর উত্তর হ্যাঁ/ না দিয়ে দেয়া সম্ভব। আর ‘কী’ হলো প্রশ্নবোধক সর্বনাম, বিশেষণ ও ক্রিয়া বিশেষণ। এর উত্তর হ্যাঁ/ না দিয়ে দেয়া সম্ভব নয়।
প্রশ্নপত্রটি পর্যালোচনা করে দেখা যায়, ২ নং প্রশ্নে ‘খসড়া কে’ শব্দটিতে ‘কে’ আলাদা করে লেখা হয়েছে। কিন্তু ব্যাকরণ ও শব্দগঠন দিক দিয়ে শব্দটি হবে ‘খসড়াকে’।
৭ নং প্রশ্নে ‘মুজিবনগর’ ভুল করে লেখা হয়েছে ‘মুজিব নগর’। একই প্রশ্নে ‘স্মৃতিসৌধ’ শব্দটি ভুল করে লেখা হয়েছে ‘স্মৃতি সৌধ’।
১৮ নং প্রশ্নে ‘রেনেসাঁ’ বানান ভুল করে লেখা হয়েছে ‘রেঁনেসা’। ১৯ নং প্রশ্নে ‘সাবাস বাংলাদেশ’ শব্দে উদ্ধৃতি চিহ্ণ ব্যবহার না করে শুধুমাত্র ‘সাবাস’ শব্দে উদ্ধৃতি চিহ্ণ ব্যবহার করা হয়েছে।
২০ নং প্রশ্নে ‘এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাবার তার শ্রেষ্ঠ সময়’ না লিখে ভুল করে লেখা হয়েছে ‘এখন যৌবন যার যুদ্ধে যাওয়ার তার শ্রেষ্ঠ সময়’।
বিডি-প্রতিদিন/ ৩১ অক্টোবর, ২০১৭/ ওয়াসিফ