ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনায় গ্রেফতারকৃত শিক্ষার্থী শামস বিন শাহরিয়ার এর কথিত অডিও রেকর্ড এবং সঠিক তথ্য অবহিতকরণ ও অপপ্রচারকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ড. নজরুল ইসলাম।
রসায়ন বিভাগের গ্যালারি রুমে বৃহস্পতিবার সকাল ১১টায় সংবাদ সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয়।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ড. নজরুল ইসলাম। তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রকারীরা গণমাধ্যম ও সামাজিক মাধ্যমে তার বিরুদ্ধে মিথ্যা তথ্য পরিবেশন করছে। ২৫ ডিসেম্বর একাউন্টিং এ্যান্ড ইনফরমেশন সিস্টেমস্ বিভাগের শিক্ষক আপেল মাহমুদ ফেসবুকের মাধ্যমে তাকে দোষি সব্যস্ত করে তার ও অনুষদের অন্য শিক্ষকদের নামে কুৎসা রটনা করেছেন।
অডিও ধারণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ভর্তি পরীক্ষার সাক্ষাৎকারের মতো একটি অডিও অসৎ উদ্দেশ্যে ধারণ করা হয়েছে। তার সম্মান হানি করতে সেই অডিও ক্লিপ বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে প্রদান না করে লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষক আসাদুজ্জামান মন্ডল ও সামান্থা তামরিন গণমাধ্যমকর্মী ও সর্বসাধারণের মধ্যে ছড়িয়ে দেন। কিন্তু প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের অডিও ক্লিপ বিধিবহির্ভূতভাবে ধারণ করে মিডিয়াকে ব্যবহার করে তাকে যে সামাজিক, রাজনৈতিক ও পারিবারিক ক্ষতির সম্মূখীন করা হয়েছে বা হচ্ছে এতে করে তিনি বিহ্বল এবং মানসিকভাবে মৃত্যুবরণ করতে চলেছেন বলে লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করেন।
এসময় অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক তাবিউর রহমান প্রধান, তাসনীম হুমাইদা, রসায়ন বিভাগের বিভাগীয় প্রধান তারিকুল ইসলাম প্রমুখ।
এদিকে, দুপুর ১টায় বাংলা বিভাগের গ্যালারি রুমে সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে শিক্ষকদের সংগঠন নীলদল। সংগঠনের সহ-সভাপতি বেলাল উদ্দিনের সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন নীল দলের সদস্য ও শিক্ষক সমিতির সভাপতি ড. আবু সালেহ মো: ওয়াদুদুর রহমান (তুহিন ওয়াদুদ)। পাঁচটি দাবির প্রেক্ষিতে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করে তিনি বলেন, বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি জালিয়াতির ঘটনায় সুষ্ঠু তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের শাস্তি প্রদান সহ ৫ দফা দাবি জানান।
সংবাদ সম্মেলনে নীলদলের পক্ষ থেকে তোলা পাঁচটি দাবির মধ্যে রয়েছে নিয়োগের শর্ত অনুযায়ী উপাচার্যের সার্বক্ষণিক ক্যাম্পাসে অবস্থান এবং প্রয়োজনে রুটিন দায়িত্ব পালনের জন্য ডিনকে দায়িত্ব প্রদান, ভর্তি জালিয়াতির মামলার বাদি অভিযুক্তের পক্ষে মানববন্ধন করায় তাকে প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া, তথ্যানুসন্ধান কমিটি বাতিল করে তদন্ত কমিটি গঠন করা, দুই শিক্ষককে ভর্তি প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেয়ার যৌক্তিক ব্যাখ্যা প্রদান ও সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদে একজন অধ্যাপককে ডিন হিসেবে নিয়োগ দেয়া।
দুই শিক্ষককে ভর্তি বোর্ড থেকে বাদ দেয়া প্রসঙ্গে তুহিন ওয়াদুদ বলেন, অনুষদের কোন সভা ছাড়াই ২ জানুয়ারির সাক্ষাৎকার বোর্ড থেকে লোক প্রশাসন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও একই বিভাগের প্রভাষক সামান্থা তামরিনকে বাদ দেয়া হয়েছে। কি কারণে এবং কোন প্রক্রিয়ায় তাদেরকে ভর্তি প্রক্রিয়ার বাইরে রাখা হলো তা জানানো হয়নি।
ভর্তি প্রক্রিয়ায় তাড়াহুড়া করা হয়েছে উল্লেখ করে ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, দ্বিতীয় দফায় ২ জানুয়ারি সাক্ষাৎকার শেষে রাত দশটায় বিষয় বরাদ্দকরণের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে ৩ জানুয়ারি সকাল ১০ টা থেকে দুপুর ২ টার মধ্যে ভর্তি হওয়ার জন্য বলা হয়। এত অল্প সময়ের মধ্যে শিক্ষার্থীদের পক্ষে যেমন ৯-১০ হাজার টাকা সংগ্রহ করা কঠিন ছিল, তেমনি অন্য প্রতিষ্ঠানে ভর্তি থাকা শিক্ষার্থীদের পক্ষে এক রাতেই ভর্তি বাতিল করে বেরোবিতে ভর্তি হওয়া অসম্ভব ছিল। ভর্তি কার্যক্রমে উপাচার্যের অনুপস্থিতির কারণে এত অব্যবস্থাপনা হয়েছে বলে দাবি করেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে নীলদলের অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন, দলটির সাধারণ সম্পাদক আপেল মাহমুদ, কোষাধ্যক্ষ আনোয়ারুল আজীম, ও সদস্য আসাদুজ্জামান মন্ডল। দলের সভাপতি ড. শফিক আশরাফ সহকারী প্রক্টরের দায়িত্বে থাকায় তিনি সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত হননি বলে জানান সাধারণ সম্পাদক আপেল মাহমুদ।
বিডি-প্রতিদিন/ সালাহ উদ্দীন