জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্যের অপসারণ ও আন্দোলনরতদের উপর হামলাকারীদের বিচার ও দুর্নীতিতে অভিযুক্তদের তদন্ত ও শাস্তির দাবিতে সমাবেশ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা। শনিবার রাজধানীর জাতীয় জাদুঘরের সামনে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়’ এর ব্যানারে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশ থেকে অবিলম্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের হল বন্ধের সিদ্ধান্ত বাতিল ও ক্লাস-পরীক্ষা চালুর দাবি জানান আন্দোলনকারীরা।
সমাবেশে সংহতি জানায়- কোটা আন্দোলনের প্ল্যাটফর্ম সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্রফ্রন্ট, ছাত্র ফেডারেশন, বিপ্লবী ছাত্রমৈত্রী, স্বতন্ত্র জোটসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক, সামাজিক ও সাংস্কৃতিক সংগঠন।
সমাবেশে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের শিক্ষক ড. আনু মুহাম্মদ বলেন, বর্তমানে সরকারের প্রধান দাবি হলো তারা নাকি দুনীর্তিবিরোধী অভিযান চালাচ্ছে। এর ফাক-ফোকর, ভেতরের কথা আমরা জানি। তাদের দুনীর্তিবিরোধী অভিযানের যদি বিন্দুমাত্র সত্যতাও থাকতো তাহলে তারা জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলনকারীদের অভিনন্দন জানাতো এবং প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতো। কিন্তু আমরা আশ্চর্য হয়েছি, সুষ্পষ্ট প্রমাণ হাজির করার পরও আন্দোলনকারীদের হয়রানি করা হচ্ছে।
সরকার আন্দোলনকারীদের ফোনালাপে আড়ি পাতছে অভিযোগ তুলে তিনি বলেন, চক্রান্ত আবিষ্কার করতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী কানে ফোন পেতে রেখেছে। যে দাবিতে আন্দোলন চলছে তা প্রকাশ্য। এটা কোনো ফোনে পাওয়া যাবে না। যাদের ফোনে গোপন কথা পাওয়া যাবে, তারাই এই হয়রানির পেছনে আছেন।
বিশ্ববিদ্যালয়কে অনিশ্চয়তার মুখে ঠেলে দেওয়ার দায় উপাচার্য ও সরকারের মন্তব্য করে আনু মুহাম্মদ বলেন, যে সব দাবি উঠেছিলো তা মেনে না নিয়ে বরং শিক্ষার্থীদের থাকার হল বন্ধ করে দিয়েছেন উপাচার্য। ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছেন। অন্যদিকে সরকার এই আন্দোলনে দীর্ঘসুত্রিতা তৈরি করেছেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিযোগ উঠার সাথে সাথে তাদের দায়িত্ব ছিল কমিটি গঠন করে তদন্ত করা। এরকম দাবি যাতে না উঠে সেই ব্যবস্থা করা। কিন্তু যেই অভিযোগে ছাত্রলীগের সভাপতি-সেক্রেটারিকে পদত্যাগ করতে হলো, সেই অভিযোগে কোনো তদন্ত করা হলো না।
গণসংহতি আন্দোলনের সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, উপাচার্য ফারজানা ইসলামের ক্ষমতাসীনদের ভাবমূর্তিতে পরিণত হয়েছেন। তিনি পদত্যাগ করলে সরকার আন্দোলনকারীদের কাছে ছোট হয়ে যাবেন। তাই গ্রিন সিগন্যাল না পাওয়া পর্যন্ত তিনি পদত্যাগ করবেন না।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্দোলন এখন প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নৈতিক আন্দোলনে পরিণত হয়েছে মন্তব্য করে ডাকসু ভিপি নুরুল হক বলেন, সরকারের অবিলম্বে এই দাবি মেনে নিতে হবে। তা না হলে এই দাবি সারাদেশে ছড়িয়ে পড়বে বলেও হুমকি দেন তিনি।
বিডি প্রতিদিন/এনায়েত করিম