জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের অপসারণসহ তিন দফা দাবিতে বিক্ষোভ করেছে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। বুধবার দুপুর ১টার দিকে ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগর’ ব্যানারে আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা নতুন কলা ভবন থেকে বিক্ষোভ শুরু করে উপাচার্যের বাস ভবনের সামনে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে মিলিত হয়। সমাবেশ শেষে আবারে মিছিল নিয়ে নতুন কলা ভবনের সামনে এসে বিক্ষোভ মিছিল সমাপ্ত করে।
আন্দোলনকারীদের তিনটি দাবি হল- বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন প্রকল্পে দুর্নীতির অভিযোগে উপাচার্যের অপসারণ, আন্দোলনরত শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলায় বিচার এবং আবাসিক হল খুলে দেয়া।
মিছিল পরবর্তী সমাবেশে একুশে পদকপ্রাপ্ত কবি ও স্থপতি রবিউল হুসাইনের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেন আন্দোলনকারী শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা। রবিউল ইসলাম জাবির শহীদ মিনারের স্থপতি। সমাবেশে সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্ট (মার্ক্সবাদী) জাবি শাখার সভাপতি মাহাথির মুহাম্মদ বলেন, ‘আমরা উপাচার্যের বাসভবনের সামনে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়েছিলাম। কিন্তু অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের মদদে আন্দোলনকারী শিক্ষক শিক্ষার্থীদের ওপরে হামলা করা হয়েছে। এ হামলার পরে অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম আর এক মুহূর্তের জন্য উপাচার্য পদে থাকতে পারেন না। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে ভয় পেয়ে তিনি হল ভ্যাকেন্ট করে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে রেখেছেন। আমরা বলতে চাই ফারজানা ইসলামের অপসারণের মধ্যে দিয়েই কেবল এই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত হতে পারে।’
সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম পাপ্পু বলেন, ‘কোন ভয়ভীতি দেখিয়ে আমাদের এই যৌক্তিক আন্দোলনকে দমিয়ে রাখা যাবে না। তাই শিক্ষার্থীদের স্বার্থ বিবেচনা করে অবিলম্বে আবাসিক হল খুলে শিক্ষা কার্যক্রম চালু করুন।’
সমাপনী বক্তব্যে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জাহাঙ্গীরনগরের সমন্বয়ক অধ্যাপক রায়হান রাইন বলেন, ‘চার মাস হতে চলল শিক্ষক শিক্ষার্থীদের আন্দোলন চলছে। কিন্তু এখনো পর্যন্ত কোনো সুরাহা করা হয়নি। বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ করে হল ভ্যাকেন্ট করে দেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে দিয়েও আমাদের বিক্ষোভ চলছে। প্রশাসনের জানা উচিত মামলা-হামলা কোনোভাবেই এ যৌক্তিক আন্দোলনকে দমন করা যাবে না। আমাদের তিন দফা দাবি বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাবো। হল ভ্যাকেন্টের ঘোষণা দেওয়া হয়েছে মেয়াদোত্তীর্ণ সিন্ডিকেট সদস্যদের মতের ভিত্তিতে সুতরাং হল ভ্যাকেন্টের এই অবৈধ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করতে হবে।’
আগামী তিন তারিখে উপাচার্যের দুর্নীতির খতিয়ান পুস্তিকা আকারে প্রকাশ করারও ঘোষণা দেন অধ্যাপক রায়হান রাইন।
বিডি প্রতিদিন/এ মজুমদার