বিশ্বব্যাপী ক্রমবর্ধমান জনসংখ্যার খাদ্য চাহিদা মেটানোর জন্য কৃষিখাতে নাইট্রোজেন সারের ব্যবহার ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে। অতিরিক্ত নাইট্রোজেন সারের ব্যবহার মাটি, পানি ও বায়ুর গুণগত মান হ্রাস করার পাশাপাশি গ্রীন হাউজ গ্যাস নির্গমনের মাধ্যমে বৈশ্বিক জলবায়ুকে বিরুপভাবে প্রভাবিত করে। বিশ্বের অন্যতম জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ দেশ হিসেবে বাংলাদেশের কৃষি খাতে নাইট্রোজেন সারের সঠিক ও দক্ষ ব্যবস্থাপনা অত্যন্ত জরুরি। এই প্রেক্ষিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগ “সাউথ এশিয়ান নাইট্রোজেন হাব” প্রকল্পের মাধ্যমে বিশ্ববিদ্যালয়ের টেকনোলজি ভিলেজখ্যাত গাজীপুরের কাপাসিয়া উপজেলার টোকনগর গ্রামের কৃষকদের নাইট্রোজেন সারের দক্ষ ব্যবহারে উদ্বুদ্ধ করার কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে।
এরই ধারাবাহিকতায় বুধবার সকালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন অডিটরিয়ামে “টেকসই সার ব্যবস্থাপনা” শীর্ষক কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের উদ্যোগে কর্মশালাটি “সাউথ এশিয়ান নাইট্রোজেন হাব” প্রকল্পের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বশেমুরকৃবির ভাইস-চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. মো: গিয়াস উদ্দীন মিয়া এবং অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মৃত্তিকাবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ও সাউথ এশিয়ান নাইট্রোজেন হাব প্রকল্পের কান্ট্রি লিড প্রফেসর ড. মো: মিজানুর রহমান। বশেমুরকৃবি’র ট্রেজারার প্রফেসর তোফায়েল আহমেদ এবং বহিরাঙ্গন কার্যক্রমের পরিচালক প্রফেসর ড. ইমরুল কায়েস বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন। ড. মো: আরিফুর রহমান খানের সঞ্চালনায় সাউথ এশিয়ান নাইট্রোজেন হাব প্রকল্পের কার্যক্রম নিয়ে আলোচনা করেন প্রফেসর ড. মো: মিজানুর রহমান।
প্রধান অতিথি তার বক্তব্যে টেকসই সার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে মাটির স্বাস্থ্য সুরক্ষা এবং টেকসই কৃষি উৎপাদন নিশ্চিতে বিজ্ঞানীও কৃষকদের এক সাথে কাজ করার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। তিনি আরো বলেন, পরিবর্তিত জয়বায়ু পরিস্থিতি মোকাবেলা করে যাতে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি করা যায় বশেমুরকৃবি সে বিষয়ে নিরলস গবেষণা করে যাচ্ছে। কৃক্ষক প্রতিনিধিসহ কর্মশালায় উপস্থিত সকল বক্তাগন সঠিক মৃত্তিকা ও সার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যে সঠিক গবেষণা এবং গবেষণালব্ধ ফলাফল কৃষকদের মাঝে পৌঁছে দেওয়ার জোর সুপারিশ করেন। টেকনিক্যাল সেশনে বিভিন্ন ধরনের কম্পোস্ট তৈরী এবং আত্মীয় মাটিতে চুন প্রয়োগের উপর দুটি প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যথাক্রমে প্রফেসর ড. মোহাম্মদ সাইফুল আলম এবং প্রফেসর ড. জি কে এম মোস্তাফিজুর রহমান।
অনুষ্ঠানে টোকনগর গ্রামের প্রায় ৬০ জন কৃষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, বিজ্ঞানী, সম্প্রসারণকর্মী, এবং ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ার সাংবাদিকসহ প্রায় ১২৫ জন উপস্থিত ছিলেন।
বিডি প্রতিদিন/এএম