আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে অনুষ্ঠিত হবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ষষ্ঠ সমাবর্তন। দীর্ঘ সাত বছর পরে আয়োজিত এই সমাবর্তনে প্রায় ৩২ হাজার গ্রাজুয়েটের মাঝে সনদপত্র প্রদান করা হবে। এখনও চূড়ান্ত তারিখ নির্ধারণ না হলেও সর্বসম্মতিক্রমে ২৫ ফেব্রুয়ারিকে কেন্দ্র করে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। সোমবার (১৬ জানুয়ারি) বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক মো. নজরুল ইসলাম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত স্নাতকধারী (সম্মান) ১২ হাজার ৪৬৮ জন, স্নাতোকোত্তর সম্পন্নকারী ১০ হাজার ৩৭১ জন, উইকেন্ড প্রোগ্রামের ৮ হাজার ৭৫ জন ও এমপিল-পিএইচডি সম্পন্নকারী ৯৫০ জন সহ মোট ৩১ হাজার ৮৬৪ জনের সনদপত্র প্রস্তুত করা হয়েছে। তবে সমাবর্তনের আগে আরও কয়েকটি বিভাগের ফল প্রকাশিত হবে। এতে গ্রাজুয়েটদের সংখ্যা আরো বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি।
গত ২০ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সিন্ডিকেটে সমাবর্তনের ফি নির্ধারণ করা হয়। সেখানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর আলাদাভাবে ২ হাজার ৫০০ টাকা ও একসাথে ৪ হাজার টাকা, এমফিল ডিগ্রির জন্য ৫ হাজার টাকা, পিএইচডি ডিগ্রির জন্য ৭ হাজার টাকা এবং উইকেন্ড/ইভিনিং প্রোগ্রামের জন্য ৮ হাজার টাকা সমাবর্তন ফি নির্ধারণ করা হয়েছে বলে জানান রেজিস্ট্রেশন কমিটির সদস্য সচিব সৈয়দ মোহাম্মদ আলী রেজা।
এদিকে রেজিস্ট্রেশনের ওয়েবসাইটের কাজ শেষ হলে চলতি মাস থেকে রেজিষ্ট্রেশন করা যাবে বলে জানান রেজিস্ট্রার রহিমা কানিজ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সমাবর্তন ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ড. নূরুল আলম বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, ‘আমরা গত সিন্ডিকেটেও বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছি। সর্বসম্মতিক্রমে ২৫ ফেব্রুয়ারীকে কেন্দ্র করে সব ধরনের প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে। এখন শুধু চ্যান্সেলর রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ এর অনুমতি পেলে পুরোপুরি কার্যক্রমে নেমে যাব।’
জানা যায়, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২ বছরে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়েছে মাত্র পাঁচবার। প্রতিষ্ঠার দীর্ঘ ২৬ বছরে ১৯৯৭ সালে প্রথম সমাবর্তন গাউন পরার সুযোগ মেলে শিক্ষার্থীদের। ওই বছরের ৫ জানুয়ারি প্রথম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। সেবার উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক আমিরুল ইসলাম চৌধুরী। সেসময় ৪ হাজার ৪৮৪ জন গ্র্যাজুয়েট, এম.ফিল ও পিএইচ.ডি ডিগ্রী অর্জনকারী শিক্ষার্থী সনদ পান।
পরবর্তীতে ২০০১ সালের ১৭ ফেব্রুয়ারি দ্বিতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। উপাচার্য অধ্যাপক আবদুল বায়েসের সময়ে অনুষ্ঠিত ওই সমাবর্তনে সনদ পান ৫ হাজার ১২ জন গ্র্যাজুয়েট। এর ৫ বছর পরে ২০০৬ সালের ২ ফেব্রুয়ারি তৃতীয় সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। সে সময় উপাচার্য ছিলেন অধ্যাপক খন্দকার মুস্তাহিদুর রহমান। ওই সমাবর্তনে ৪ হাজার ৩৮৩ জন গ্র্যাজুয়েটকে সনদ প্রদান করা হয়।
এরপর ২০১০ সালের ৩০ জানুয়ারি চতুর্থ সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। উপাচার্য অধ্যাপক ড. শরীফ এনামুল কবিরের সময়ে অনুষ্ঠিত এই সমাবর্তনে ৩ হাজার ৯৪৯ জন গ্র্যাজুয়েট, এম.ফিল ও পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জনকারী শিক্ষার্থী সনদ পান। সর্বশেষ ২০১৫ সালে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলামের সময়ে পঞ্চম সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হয়। সেবার ৯ হাজার গ্র্যাজুয়েট, এম.ফিল ও পিএইচ.ডি ডিগ্রি অর্জনকারীদের মাঝে সনদপত্র প্রদান করা হয়।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল