ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাতের কন্ঠ সদৃশ কয়েকটি অডিও ফাঁস হয়েছে। ফাঁস হওয়া রেকর্ডে উঠে এসেছে ড্রাইভার নিয়োগের অর্থ লেনদেনের তথ্য। এতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেনের নামও বলতে শোনা গেছে। এ নিয়ে ক্যাম্পাসে তোলপাড়ের সৃষ্টি হয়েছে। আর এতে দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা।
এদিকে এসব অডিওকে ‘সুপার এডিট’ উল্লেখ করে এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে সাধারণ ডায়েরিভুক্তির (জিডি নং: ৯৬৮) আবেদন করা হয়েছে। গত শুক্রবার সন্ধ্যায় আরাফাতের পক্ষে সংগঠনটির শাখা ছাত্রলীগের সহ-সভাপতি মুন্সি কামরুল হাসান অনিক ইবি থানায় আবেদন করেছেন।
জানা যায়, চাকরি দিয়ে অর্থ লেনদেন সংক্রান্ত ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি ফয়সালের কয়েকটি অডিও রেকর্ড’ ফাঁস হয়। গত বুধবার সন্ধ্যায় সানজিদা আক্তার তানিয়া নামক ফেসবুক আইডি থেকে ৪ মিনিট ১৫ সেকেন্ডের একটি এবং বৃহস্পতিবার রাতে ইসলামিক ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাস নামক পেজ থেকে ৩ মিনিট ১২ সেকেন্ডের আরেকটি অডিও ছড়িয়ে পড়ে। রেকর্ড’এ ড্রাইভার নিয়োগের দেড় মাসেও চুক্তি হওয়া ২০ লাখ টাকা না পাওয়ায় ক্ষোভ এবং এক চাকরি প্রার্থীর কাছে ১০ লাখ টাকা দাবি করতে শোনা যায়। রবিবার রাতে এবং সোমবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে আরও দুটি মোট ৬টি নতুন রেকর্ড ভাইরাল হয়েছে। এসব রেকর্ডে শাখা ছাত্রলীগের সম্পাদক নাসিম আহমেদ জয় ও পরিবহন প্রশাসক অধ্যাপক আনোয়ার হোসেনে নামও উল্লেখ করতে শোনা যায়।
একটি রেকর্ডে পরিবহন ড. আনোয়ার হোসেন ছাত্রলীগ সভাপতিকে উদ্দেশ্য করে বলেন, ওদের ডেকে সমাধান করে নাও। অন্য রেকর্ডে অজ্ঞাত একজনকে উদ্দেশ্য করে সভাপতি বলেন, আমি আনোয়ার স্যারকে পাঠাবো। তিনি বলেছেন সমস্যা নেই।
এদিকে ছাত্রলীগের পক্ষে করা জিডির আবেদনে বলা হয়েছে, ফেসবুক আইডি ‘সানজিদা আক্তার তানিয়া' থেকে ইবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত এর ছবি অন্যান্য ভাবে সংগ্রহ করে সুপার এডিটেড মিথ্যা অডিও রেকর্ডিং উক্ত ফেসবুক আইডি থেকে পোস্ট করছে। ওই ফেসবুক আইডি থেকে ইবি শাখা ছাত্রলীগের সভাপতির ছবি সংযুক্ত অডিও রেকর্ডিং সমাজিক যোগাযোগ এর মাধ্যামে পোস্ট করায় সভাপতি এবং শাখা ছাত্রলীগকে হেয় প্রতিপন্ন ও ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করছে। ওই অপরিচিত ফেসবুক ব্যবহারকারী এবং উক্ত ঘটনার সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়।
বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি ফয়সাল সিদ্দিকী আরাফাত বলেন, সুপার এডিটিং করে আমাকে ও ছাত্রলীগকে বিতর্কিত করার জন্য একটি মহল তৎপর।
সূত্র জানায়, নিয়োগে ছাত্রলীগ সভাপতির কাড়ি কাড়ি অর্থ লেনদেনের অডিও ফাঁসের ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়েছেন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রলীগ নেতারা বিষয়টি খতিয়ে দেখতে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের কাছে নালিশ দিয়েছেন বলেও জানা গেছে।
এ বিষয়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শেখ ওয়ালী আসিফ ইনান বলেন, নিয়োগে অর্থ লেনদেন নিয়ে অডিও ক্লিপটি সঠিক কিনা সেটা আমরা নিশ্চিত হয়ে বিষয়টি খতিয়ে দেখব। যদি সঠিক হয়ে থাকে তাহলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ