চট্টগ্রামের বিনোদনের অন্যতম আঙিনা চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানায় নতুন সংযোজন হচ্ছে মিনি এভিয়ারি (ছোট্ট পক্ষীশালা)। ৬ প্রজাতির ৩০০ পাখি নিয়ে নতুন অবয়ব নিয়ে যাত্রা করবে এটি। গতকাল শুক্রবার হল্যান্ড পাখিগুলো চিড়িয়াখানায় এসে পৌঁছায়। আগামী বুধবার চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক এটি উদ্বোধন করবেন বলে জানা গেছে।
চিড়িয়াখানা সূত্রে জানা যায়, জেলা প্রশাসকের পরিকল্পনা ও নির্দেশনায় চিড়িয়াখানায় ৩৪ লাখ টাকা (অবকাঠামো ব্যয় ২০ লাখ, পাখি ক্রয়ে ব্যয় ১৪ লাখ টাকা) ব্যয়ে নির্মিত হয়েছে ন্যাচারাল মিনি এভিয়ারি। ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে ৬০ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২৫ ফুট প্রস্থের পক্ষীশালা তৈরির কাজ। ৬ প্রজাতির ৩০০ পাখি নিয়ে শুরু হবে এই এভিয়ারি। পাখির মধ্যে আছে, লাভ বার্ড ২০ জোড়া, লাফিং ডাভ ৫০ জোড়া, ফিজেন্ট ১০ জোড়া, রিংনেড পারোট ১০, কোকাটেইল ৫০ ও ম্যাকাও ১ জোড়া।
চিড়িয়াখানা ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য সচিব মুহাম্মদ রুহুল আমীন বলেন, ‘আগামী বুধবার দুপুরে জেলা প্রশাসক চিড়িয়াখানায় মিনি এভিয়ারি উদ্বোধন করবেন। এর মাধ্যমে চিড়িয়াখানায় নতুন একটি বিনোদন সংযোজন হলো। খুব শীঘ্রই সংযোজন হবে চারটি ক্যাঙ্গারু। আশা করছি, দর্শনার্থীরা এটি প্রাণভরে উপভোগ করবেন।’
তিনি আরও বলেন, ‘চট্টগ্রাম নগরে বিনোদনের স্থান দিন দিন কমে যাচ্ছে। এমন সময়ে এই চিড়িয়াখানায় নানামাত্রিক বিনোদনের আয়োজন করতে পেরে ভালই লাগছে। আগামীতে এটি চট্টগ্রামে একটি সম্পদ হবে।’
জানা যায়, ১৯৮৯ সালের ২ ফেব্রুয়ারি চট্টগ্রামের তৎকালীন জেলা প্রশাসক মানুষের বিনোদন, শিশুদের শিক্ষা এবং গবেষণার জন্য নগরের খুলশিস্থ ফয়েজ লেকের পাশে ৬ একর জমির উপর চট্টগ্রাম চিড়িয়াখানা প্রতিষ্ঠা করেন। বর্তমানে সেখানে ৬৭ প্রজাতির সাড়ে তিন শতাধিক পশু-পাখি আছে। চিড়িয়াখানার টিকিট বিক্রির টাকায় নির্মাণ করা হয়েছে সীমানা প্রাচীর, পশুদের জন্য দেওয়া হয় খাঁচা, আবর্জনার ভাগাড়কে করা হয়েছে নান্দনিক বৈঠকখানা, তিতিরপাখিকে দেওয়া হয়েছে পৃথক ঘর, লাগানো হয়েছে এক হাজার ফলজ বৃক্ষ। বানানো হয়েছে সিঁড়ি, নির্মিত হয়েছে প্রধান ফটক।
চিড়িয়াখানার অভ্যন্তরে ২৮ লাখ টাকা ব্যয়ে নির্মিত হয় ৩২ হাজার ১৬৪ বর্গফুট রাস্তা। নিরাপত্তায় বসানো হয়েছে সিসি ক্যামেরা। বাচ্চাদের জন্য করা হয়েছে ‘কিডস জোন’। পশুর সুরক্ষায় নির্মিত হয়েছে নিরাপত্তা দেয়াল। দর্শনার্থীদের জন্য রয়েছে পরিচ্ছন্ন শৌচাগার। প্রাণীখাদ্য সংরক্ষণে নির্মাণ করা হয়েছে স্টোর রুম, কোয়ারেন্টাইন রুম এবং অপারেশন থিয়েটারসহ স্বয়ংসম্পূর্ণ আধুনিক প্রাণী হাসপাতাল।
বিডি-প্রতিদিন/আব্দুল্লাহ আল সিফাত