চট্টগ্রামে দুই মেগা প্রকল্প উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রবিবার সকালে দেশের প্রথম কর্ণফুলী টানেলের খনন কাজের উদ্বোধন এবং এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন তিনি।
চট্টগ্রামের পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় কর্ণফূলী টানেল নির্মাণ কর্তৃপক্ষের আয়োজনে সুধী সমাবেশের মঞ্চ তৈরির কাজ ইতিমধ্যে প্রায় শেষ হয়েছে। মঞ্চটি তৈরি করা হচ্ছে ৪৮ ফুট দৈর্ঘ্য ও ২৮ ফুট প্রস্থের নৌকা আকৃতির। মুসলিমাবাদ ও র্যাব-৭ কার্যালয়ের পাশে খেজুরতলা হয়ে রিং রোডে ওঠা যাবে। পুরো এলাকায় সুধী সমাবেশের ভাষণ শোনানোর জন্য বসানো হবে সাউন্ড বক্স ও প্রজেক্টর।
এদিকে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর টানা তিনবারের প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রথম চট্টগ্রামে আসায় দলীয় নেতা-কর্মীরা উজ্জীবিত হয়েছেন। এ সমাবেশে দলীয় শীর্ষ নেতা ছাড়াও প্রশাসনের উর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত থাকবেন বলে জানান চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (সিডিএ) চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কর্ণফূলী টানেলের (বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবুর রহমান নামে প্রস্তাবিত) খননকাজ উদ্বোধন করতে আসছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। উপমহাদেশের প্রথম টানেল নির্মাণ প্রকল্পের বোরিং কার্যক্রম, লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ের পিলার পাইলিং প্রকল্পের উদ্বোধন শেষে সুধী সমাবেশে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। সৈকতের আউটার রিং রোডে খেজুরতলা পর্যন্ত প্রায় দুই কিলোমিটার এলাকায় এখন চলছে মাটি ভরাটের কাজ।
জানা গেছে, কম্পিউটারের সাহায্যে বোরিং কার্যক্রম উদ্বোধন এবং টানেল গেটের কাছে বোরিং পয়েন্টে এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের ফলক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী। কর্ণফুলী নদীর তলদেশে ৯ হাজার ৮৮০ কোটি টাকায় নির্মাণ করা হচ্ছে ৩ হাজার ৫ মিটার দীর্ঘ টানেল। টানেলটি নেভাল একাডেমি পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে কাফকো ও সিইউএফএল পয়েন্টের মাঝখান দিয়ে অপর প্রান্তে যাবে। নদীর তলদেশে সর্বনিম্ন ৩৬ ফুট থেকে সর্বোচ্চ ১০৮ ফুট গভীরে স্থাপন করা হবে দুটি টিউব। বাংলাদেশ সেতু কর্তৃপক্ষ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে। চট্টগ্রাম নগরের লালখান বাজার থেকে শাহ্ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে ৩ হাজার ২৫০ কোটি ৮৩ লাখ টাকা ব্যয়ের প্রকল্পটি উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৭ সালের ১১ জুলাই জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির (একনেক) সভায় প্রকল্পটি পাস হয়। চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (চউক) নগরের বৃহত্তম এ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে।
টানেল নির্মাণে নিয়োজিত কর্মকর্তারা বলেন, নদীর তলদেশের সর্বনিম্ন ৩৬ ফুট (১২ মিটার) থেকে সর্বোচ্চ ১০৮ ফুট (৩৬ মিটার) গভীরে স্থাপন করা হবে দুটি টিউব। একেকটি টিউবের চওড়া হবে ১০ দশমিক ৮ মিটার (৩৫ দশমিক ৪৩ ফুট) এবং উচ্চতা হবে ৪ দশমিক ৮ মিটার। একটি টিউবে দুটি স্কেল বসানো থাকবে, সেই স্কেল দিয়ে দুই লেনে গাড়ি চলাচল করবে। একই রকমভাবে আরো একটি টিউব থাকবে পাশে। আর দুটি টিউবের মধ্যে কমপক্ষে ১১ মিটার জায়গা খালি থাকবে। টানেলটি নেভাল একাডেমি পয়েন্ট থেকে শুরু হয়ে নদীর অপর পাড়ে কাফকো ও সিইউএফএল পয়েন্টের মাঝখান দিয়ে বের হবে।
চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ ইলিয়াস হোসেন বলেন, কর্ণফুলী নদীর তলদেশে টানেল নির্মাণের বোরিং কার্যক্রমের উদ্বোধন শেষে প্রধানমন্ত্রী সিডিএ এর এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ প্রকল্পের কাজও উদ্বোধন করবেন। এরপর পতেঙ্গা সৈকত এলাকায় সুধী সমাবেশে ভাষণ দেবেন।
চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান এমএ সালাম বলেন, একাদশ জাতীয় নির্বাচনের পর প্রধানমন্ত্রী ও দলের সভানেত্রী শেখ হাসিনা চট্টগ্রামে প্রথম আসছেন। এটি আমাদের জন্য সুখবর। তিনি চট্টগ্রামের উন্নয়নের দায়িত্বও দিয়েছন সেই ধারাবাহিকতায় চলমান রয়েছে চট্টগ্রামের উন্নয়নযজ্ঞ।
বিডি প্রতিদিন/হিমেল